তিনজন বিদেশি ক্রিকেটার খেলানোর কোটা পূরণ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছিল মোহামেডান। দুই শ্রীলঙ্কান তিলকরত্নে দিলশান ও উপল থারাঙ্গাকে নিশ্চিত করলেও তৃতীয় ক্রিকেটারের দেখা পাচ্ছিল না। শেষ পর্যন্ত আফগানিস্তানের অধিনায়ক মুহাম্মদ নবীর শরণাপন্ন হয় ঐতিহ্যবাহী দলটি। মতিঝিলপাড়ার ক্লাবটিকে বিমুখ করেননি নবী। গতকাল ৯০ বলে ১৪৬ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন। তার ইনিংসেই ৩৪ রানে প্রাইম দোলেশ্বরকে হারিয়ে ওয়ালটন প্রিমিয়ার ক্রিকেটে যাত্রা শুরু করেছে মোহামেডান। মৌসুমের প্রথম হেভিওয়েট লড়াইয়ে মুশফিকুর রহিমের শেখ জামাল ১৬ রানে হারিয়েছে সাকিব আল হাসানের কলাবাগান ক্রীড়া চক্রকে। যদিও আঙ্গুলের ব্যথায় গতকাল খেলেননি সাকিব।
বগুড়া শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৮৩ রানের মধ্যে দুই লঙ্কানসহ ৪ উইকেট হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ে মোহামেডান। তখনই ত্রাণকর্তা হিসেবে মঞ্চে আবিভর্ূত হন নবী। উইকেটের চারদিকে খেলে প্রাইম দোলেশ্বরের বোলিং লাইনকে দুমড়ে-মুচড়ে দেন এই আফগান। মাত্র ৯০ বলে খেলেন ১৪৬ রানের দৃষ্টিনন্দন ইনিংস, যাতে ছিল ১৩টি চার ও ৯টি ছক্কার মার। নবী প্রথম ৫০ করেন ৪৯ বলে। ১০০ করেন ৭৬ বলে এবং শেষ ৪৬ করেন মাত্র ১৪ বলে! নবীর বিধ্বংসী ব্যাটিংয়েই মোহামেডান ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ৩০৭ রান করে। প্রাইমের পক্ষে ৩ উইকেট নেন আশরাফুল হক। ৩০৮ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে ৪ রানে প্রথম উইকেট হারায় শীতলক্ষ্যা নদীর পারের দলটি। এরপর দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে মেহেদী মারুফ ও তিলকরত্নে সাম্পাথ ১১২ রান যোগ করে ম্যাচ জমিয়ে তোলেন। কিন্তু দুজনের বিদায়ের পর আর লড়াই করতে পারেনি প্রাইম। মারুফ ৫৫ রান করেন ৬১ বলে এবং সাম্পাথ ৬৮ রান করেন ৭৫ বলে। শেষ দিকে রবিওল ইসলামের ২২ বলে ২৪ রানের অপরাজিত ইনিংসে প্রাইম দোলেশ্বর ৪৮.২ ওভারে ২৭৩ রান করে হেরে যায়। দীর্ঘদিন পর খেলতে নেমে মাশরাফি ৩২ রানে নেন ২ উইকেট।
রাজশাহী শহীদ কামরুজ্জামান স্টেডিয়ামে শেখ জামাল প্রথমে ব্যাট করে জুনায়েদ সিদ্দিকীর নার্ভাস নাইনটিজে ২৬২ রান করে। জুনায়েদ মাত্র ৫ রানের জন্য বঞ্চিত হন সেঞ্চুরি থেকে। ৯৫ রান করেন ১০০ বলে ৬ চার ও ৩ ছয়ে। অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম করেন ৪৩ রান। কলাবাগানের পক্ষে শ্রীলঙ্কার জেহান মুবারক ৩৩ রানে নেন ৫ উইকেট। ২৬৩ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে কলাবাগানের ইনিংস থেমে যায় ২৪৬ রানে। সাকিব না খেলায় অধিনায়কত্ব করেন নাঈম ইসলাম। গতকাল নাঈম করেন দলের সর্বোচ্চ ৫০ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
মোহামেডান : ৩০৭/৮, ৫০ ওভার (জুপিটার ১২, তিলকরত্নে দিলশান ২৫, উপল থারাঙ্গা ১২, শামসুর রহমান ৪৫, রাজিন সালেহ ১১, মুহাম্মদ নবী ১৪৬, ধীমান ঘোষ ২৮, মাশরাফি ১১*, অতি. ১৫। ফরহাদ রেজা ২/৭৯, আশরাফুল হক ৩/৪৭, সোহাগ গাজী ১/৪৫, রবিওল ইসলাম ১/২৩, সাবি্বর রহমান ১/১৮)।
প্রাইম দোলেশ্বর : ২৭৩/১০, ৪৮.২ ওভার (মেহেদী মারুফ ৫৫, তিলকরত্নে সাম্পাথ ৬৮, মমিনুল হক ২২, রওশন সিলভা ৩৪, সাবি্বর রহমান ১৪, ফরহাদ রেজা ১৪, রবিওল ইসলাম ২৪*, তাইজুল ইসলাম ১৯, অতি. ২১। মাশরাফি ২/৩২, মুহাম্মদ নবী ১/৬২, মুরাদ ৩/৫১, দিলশান ৩/৩৭)।
মোহামেডান ৩৪ রানে জয়ী
শেখ জামাল ধানমন্ডি : ২৬২/১০, ৪৯.৪ ওভার ( জহুরুল ইসলাম অমি ২২, জুনায়েদ সিদ্দিকী ৯৫, দিলশান মুনাভিলা ১৫, মুশফিকুর রহিম ৪৩, তুষার ইমরান ১৬, নাহিদুল ইমলাম ১৯, ইলিয়াস সানি ২২*, অতি. ৬। জেহান মুবারক ৫/৫৫, সাজু দত্ত ১/৪৬, ফরহাদ হোসেন ১/২০, চিন্তাকা ডি সিলভা ১/৪৪)।
কলাবাগান কেসি : ২৪৬/৯, ৫০ ওভার (মিথুন ৩৯, নাসিরুদ্দিন ফারুক ২৭, ফরহাদ ৪১, জেহান মুবারক ৭, নাঈম ইসলাম ৫০, অতি. ১২। শফিউল ইসলাম ৩/৬৪, আবদুর রাজ্জাক ১/৪৬, দিলশান মুনাভিলা ২/৪৮, ইলিয়াস সানি ২/৩৫)।
শেখ জামাল ১৬ রানে জয়ী
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।