আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তাঁর জন্য ভালবাসা যিনি সারাজাহানের জন্য আল্লাহর রহমত - ৩

কল্যাণের কথা বলি, কল্যাণের পথে চলি।

প্রথম পর্বঃ কে তিনি দ্বীতিয় পর্বঃ কেন তাঁকে ভালবাসতে হবে? =================== মানবতার বন্ধু তিনি - কল্যাণ ও সমগ্র সৌন্দর্যের বিমূর্ত প্রতীক। রহমত, ভালবাসা, করুণা, দয়া ও মানুষের প্রতি শুভকামনার পরিপূর্ণ সমাবেশ ঘটেছে তাঁর চরিত্রে। তিনি আদমের সন্তানদের শ্রেষ্ঠতম - আল্লাহর বাণীবাহকদের সর্দার। হেরা গুহার অন্ধকারে তাঁর কাছে কুরআনের নূর পাঠানো হয়েছে মানবতাকে মূর্খতার আঁধার থেকে বের করে জ্ঞানের আলোয় উদ্ভাসিত করতে।

=================== কি দাবী তাঁর ভালবাসার? তাঁকে - সল্লাল্লাহু আলায়হি ওআ সাল্লাম - ভালবাসা এজন্য ঈমানের এক অপরিহার্য দাবী। কিন্তু এ ভালবাসার প্রমাণ দিতে হবে কিভাবে? আল্লাহ্ তাআলা তাঁর মহান কিতাবে ইরশাদ করেছেন, “(হে নবী) আপনি বলুন! যদি তেমরা আল্লাহকে ভালবাস তবে আমার অনুসরণ করো, তাহলে আল্লাহও তোমাদের ভালবাসবেন। ” রসূলুল্লাহ - সল্লাল্লাহু আলায়হি ওআ সাল্লাম - বলেছেন, তোমরা ঈমানদার হতে পারবেনা যদিনা তোমাদের কামনা-বাসনাকে আমার আনীত বিধানের অনুগত করে দাও। তাঁকে ভালবাসা হলো তাঁর অনুসরণ করা; তাকে ভালবাসা হলো তাঁর নির্দেশের সামনে নিজের মতামত বা অন্য কোন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির মতামতকে নির্দ্বিধায় ত্যাগ করা। আল্লাহ্ তাআলা ইরশাদ করেছেন, “না! আপনার রবের কসম! তারা কখনোই ঈমানদার হতে পারবেনা যতক্ষণ না তারা নিজেদের মধ্যে মতবিরোধপূর্ণ বিষয়ে আপনাকে বিচারক মানবে; আর আপনার সিদ্ধান্তের ব্যাপারে হৃদয়ে কোন দ্বিধা রাখেনা এবং আপনার সিদ্ধান্তের সামনে পরিপূর্ণভাবে আত্মসমর্পণ করে।

” (আন-নিসা; ৪:৬৫) ইমাম ইবন রজব আল-হাম্বলী রসূলের প্রতি ভালবাসার দাবী নিম্নোক্ত ভাষায় ব্যক্ত করেছেন: “আল্লাহর রসূলের জন্য ভালবাসা দু’পর্যায়ে প্রকাশ করা হয়। ” “প্রথম পর্যায়ের ভালবাসা হচ্ছে ব্যক্তিগতভাবে ফরজ। এ ভালবাসার দাবী হচ্ছে রসূলুল্লাহ – সল্লাল্লাহু আলায়হি ওআ সাল্লাম – আল্লাহর কাছ থেকে যা নিয়ে এসেছেন তাকে মুহব্বত, আনন্দ, মর্যাদা ও আনুগত্যের সাথে গ্রহন করা, অন্য সব উৎসের – তা যাই হোকনা কেন – কোন হিদায়াত গ্রহন না করে। এর পরের কাজ হলো তিনি তাঁর রবের কাছ থেকে যা পেশ করেছেন উত্তমভাবে তার অনুসরণ করা; তিনি যা ওয়াজিব করেছেন তাকে গ্রহন করা, যা হারাম করেছেন তা থেকে বিরত থাকা; তার দীনের সর্বাত্মক সহযোগিতা করা এবং যারা এর বিরোধীতা করে তাদের বিরুদ্ধে সর্বশক্তি প্রয়োগ করে সংগ্রাম করা। এর সবগুলোই একজনের ঈমানের অঙ্গ, যা তার মাঝে থাকা জরুরী এবং এগুলোর অনুপস্থিতি মূলতঃ তার ঈমানের অপূর্ণতা।

” তাঁর প্রতি ভালবাসার আরো দাবী এই যে, ভালবাসার দাবীদার শুধুমাত্র ফরজ-ওআজিব-ই নয় বরং জীবনের সবক্ষেত্রেই ভালবাসার পাত্রের অনুসরণ করবে, যদিও এটা তার উপর জরুরী নয়। এটা দ্বীতিয় পর্যায়ের ভালবাসা। এ সম্পর্কে ইমাম ইবন রজব (রঃ) বলেছেনঃ “দ্বীতিয় পর্যায়ের ভালবাসা প্রথম পর্যায়ের চেয়ে উন্নততর [যদিও এটা ঈমানের জরুরী অঙ্গ নয়]। এ পর্যায়ের ভালবাসার দাবী হলো একজন ভালবাসার দাবীদার রসূলের তৈরী করা দৃষ্টান্তের অনুসরণ করবে উত্তমভাবে এবং ব্যক্তিগত আচার-ব্যবহার, নফল কাজ, খাওয়া, পানকরা, পোষাক, স্বামী-স্ত্রীর সাথে আচরণ, এবং সুন্দর ও উত্তম মু‘আমালাতের সবক্ষেত্রে তাঁর সুন্নতের যথাযথ অনুসরণ করবে। এর আরো দাবী হলো তাঁর (সঃ) জীবন এবং সময় সম্পর্কে জানা।

এ পর্যায়ের ভালবাসার আরো দাবী এই যে, ভক্তি, শ্রদ্ধা, সম্মান ও মর্যাদা বোধের কারণে তাঁর নাম নেয়া হলে হৃদয় শিহরিত হবে; হৃদয়ের অন্তর্গত ভালবাসার অভিব্যক্তি হিসেবে তাঁর প্রতি সালাত ও সালাম পাঠানো হবে প্রায়শঃই। এ ভালবাসার আরো দাবী হলো তাঁর কথা (হাদীস) শোনা এবং তাঁর কথাকে সৃষ্টিজগতের আর সবার কথার উপর প্রাধাণ্য দেয়া। ”

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.