মানুষ তার আশার সমান বড়...
বটতলা থেকে আশুলিয়া... কতবার এসে গেছি, এইতো সেদিনের কথা। সাইকেলটা নিয়ে প্রায় প্রতিদিন এই কাঁচা বেড়িবাঁধ ধরে কত বার ছুটেছি... বিশুদ্ধ বাতাস পাবার নেশায়, মিষ্টি তুরাগ চিকচিক ঢেউ তুলে তখন কত হেসেছে...। ছোট্ট অবসরে তার পাশে বসে মন্ত্রমুগ্ধের মত কত যে সময় ব্যায় করেছি...।
... সেখানে আজ আগের মত কিছুই নেই, বন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে সব। মাঝি সুর তুলে এখন আর জীবনকে বাতাসে ওড়ায় না, সে এখন অন্য কথা বলে... কাঁচা রাস্তা হয়ে গেছে পিচঢালা, পানির উপর বালি ফেলে চর জাগিয়ে তোলা হয়েছে... তামান্না রিভার ভিউ... আরো কত কি... সেই চরে এখন জ্যান্ত খাবার পাওয়া যায়, আঙুল উঁচিয়ে বলে দিলেই হয়েছে... আমার ঐ ঢ্যাসা মোরগটাই চাই, হ্যাঁ ঐটাই... ব্যাস নিমিষেই দৌড়াদুড়ি, লম্ফ ঝম্ফ... তারপর লম্বা ঢেকুর...। যেখানে বাতাসের সুরেলা ধ্বনি আর পাখির কলরব ছাড়া অন্য কিছুর হদিস পাওয়া যেত না সেখানে আজ হাজার হাজার রঙবেরঙি প্রেমিকের ভীড়... তুরাগ তাদের বরণ না করে পারে?
আজ ভীড়ের ঠোকর খেতে খেতে ভাবি, এখন সময় হয়েছে বুঝি আমাদের নির্বাসনে যাবার। নৌকার পাটাতনে শুয়ে বৃষ্টির শব্দ শুনার অধিকার এখন আর আমাদের নেই। এখন সেখানে বসবে অন্য কেউ... মাঝি এখন অন্য সুরে গান ধরবে...সাজবে তুরাগ তার নবরূপে...।
...ভীষন অপরাধবোধ নিয়ে আমি আজ এই আধাঁরে চোখের তারায় সেই... পুরনো তুরাগকে ধারন করি। নিজেরে নিজে প্রশ্ন করি, শৈশব, কৈশোর পেরিয়ে যৌবনের একূলে এসে আজো তুই মানুষ হলিনে... ভীড়ের ভাঁজে মিশে মিশে আজো তুই নিজেরে রাঙাতে পারলিনে... কবে তুই মানুষ হবিরে... কবে তুই মানুষ হবিরে...?
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।