আমি একজন নিরাপদ ব্লগার
আমি জান্নাতের বাসায় পরদিন গেলাম। গিয়ে দেখলাম, আসলেই সে ভেঙ্গে পড়েছে। তার চোখমুখ বিধস্ত।
কথা ছাড়া কিছুক্ষন বসে থাকলাম। তারপর কথা শুরু হল-
-তোমার পরীক্ষা কেমন হয়েছে?
-আমি কিছু মনে করতে পারছি না।
-গণিত,পদার্থ কেমন হয়েছে?
-আমার কিছু মনে নেই। মনে আছে পরীক্ষা হল ঝড়ের মধ্যে । ঝড় বৃষ্টির মধ্যে কি কারো পরীক্ষা ভালো হয়?
আমি বুঝলাম অবস্থা খারাপ। তাই আরো কিছুক্ষন চুপ থাকলাম।
সেই বলতে লাগল-
-জানো, আমার কলেজে গণিত পরীক্ষায় এত ভাল করেছিলাম যে, আমার ম্যাডাম আমাকে খাতা দেয়ার সময় জড়িয়ে ধরেছিল।
বলে ছিল, তুমি পারবে একটা কিছু হতে।
আর সেই আমি আজকে অনেকগুলো অংক মিলাতে পারিনি।
আমি তাকে সাত্বনা দেয়ার জন্য বললাম।
-তুমি সামনে ঢাবি এর পরীক্ষা আছে তা দেয়ার চেষ্টা কর। তারপর তো মেডিক্যাল আছেই।
দেখ, সবাইকে যে বুয়েটে পড়তে হবে এমন কথা কোথাও নাই।
আমি এভাবেই কথাগুলো বলে বেড়িয়ে আসলাম তার বাসা থেকে। আসলেই তার জন্য কষ্ট লাগছিল। মাগরিব এর নামায পড়তে গেলাম । নামায পড়ে তার জন্য প্রান খুলে আল্লাহর কাছে দোয়া করলাম-
"আল্লাহ তাকে অন্তত বুয়েটে চান্স পাওয়ার ব্যবস্থা করে দাও।
"দুই ভাইবোন মিলে বুয়েটে পড়বে আসলেই ভাবতে ভাল লাগছিল।
শেষ পর্যন্ত বুয়েটের রেজাল্ট প্রকাশিত হল। জান্নাত বুয়েটে ৭৬৭ তম স্থান নিয়ে চান্স পেয়ে গেল। আর আমি পেলাম না। ওয়েটিং এও না।
একবারে মাথায় হাত। আবার একই অবস্থা তাকে এরিয়ে চলার চেষ্টা।
একদিন সন্ধ্যায় তার সাথে পথে দেখা হল। জানতে চাইল আমার অবস্থা । বললাম-
"সবাইকে যে বুয়েটে পড়তে হবে এমন কথা কোথাও নাই।
"
যে বাক্যটি তার জন্য ব্যবহার করে ছিলাম তা আমার জন্য সত্য হল।
তার সাথে কথা বলে আসলেই ভাল লাগছিল। এরকম না হলে কি হয় বিপদের বন্ধু। সে আমাকে আন্তরিকভাবেই নিল । আসলেই সবাইকে বুয়েটে চান্স পেতে হবে তা কোথাও নাই।
(চলবে)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।