সময়, কবিতা, ছোটগল্প, দেশ, দেশাচার
নৌকোটা পাড়ে ভিড়তেই লাফিয়ে নামলো একজন একজন করে সবাই। একটু আগে সন্ধ্যার রঙ তার প্রথম তুলির পোঁচ ফেলেছে প্রকৃতিতে। লোকগুলোর রোদে ভেজা কালো কুচ্কুচে শরীর এই আবছা অন্ধকারকে আরো বেশী ঘন করে তুললো যেন। তাদের মাটিতে পা' ফেলার ধরনে কান্তি আর অবসন্নতার চিহ্ন। একজনের কথায় নৌকোটাকে টেনে কিছুটা ডাঙ্গার উপরে আনল ক'জনে মিলে।
বালির উপর ঘষা লাগায় সড়সড় আওয়াজ হলো একটু। একজন রশিটা টেনে একটা গাছের গুঁড়িতে বাঁধল কান্ত হাতে। তারপর কোনো কথা না বলে কাছাকাছি একটা গ্রামের দিকে পা' বাড়ালো সবাই একসাথে। একেবারে শেষের জন কাউকে কিছু না বলে একটু পিছিয়ে আবার ফিরে এল নদীর ধারে। অন্যদের কেউ কেউ তার দিকে তাকালেও কিছু বলল না।
এই আবছা অন্ধকারে তাদের চেহারা না দেখা গেলেও শরীরের নড়াচড়ায় একধরনের তাচ্ছিল্যই ফুটে উঠলো। ততক্ষণে সন্ধ্যার রঙ তার তুলির পোঁচ ঘন করলো আরেকটু।
যে লোকটা ফিরে এলো, সে নৌকোটার কাছে এসে দাঁড়ালো আবার। তার পরনে অনেক দিনের পুরোনো একটা গামছা। সারা গা-খালি।
ভর সন্ধ্যায় নদীপারের সামান্য বাতাসেই তাই শির শির করে উঠলো তার শরীর। কিন্তু সেদিকে সে তেমন একটা ভ্রূক্ষেপ করলো বলে মনে হলো না। প্রথমে সে আকাশের দিকে তাকালো একটু, তারপর ধীর পায়ে নেমে গেল নদীতে। এক আজলা জল খেলো হাতে করে। এক আজলা ছিটালো মাথায়, চুলে।
তারপর নৌকোয় উঠে পাটাতনের উপর শুয়ে পড়লো আকাশের দিকে মুখ করে।
সন্ধ্যা ঘন হতে হতে কালো হয়ে গেল একসময়। আকাশের লাল আভা সেই কালোর সাথে যুদ্ধ করে নিজেও মিলিয়ে গেল একসময়। নৌকোটাও লোকটিকে সাথে করে হারিয়ে গেল সেই কালোর মাঝে।
পর পর দু'রাত বাড়ি ফিরল না মতি সরদার।
সেই থেকে কেঁদে কেটে হয়রান মতির বউ। দু'দিন আগের সন্ধ্যা থেকেই এদিক সেদিক ধর্না দেয়া শুরু করেছে, খোঁজ পায়নি কোন। আর কে-ই বা দেবে খোঁজ ? সমস্ত জ্ঞাতি গোষ্ঠীর সাথে যে লোক গাদ্দারি করে, তার খোঁজ না করাই ভাল। তারপরেও এত সুন্দরী, ডাগর মতির বউয়ের মুখের উপর তো এসব কথা বলা যায় না। তাই সবাই উল্টোপাল্টা কোনো এক অজুহাত দাঁড় করিয়ে বিদায় করছে তাকে।
অবশেষে কোনো উপায় অন্ত না পেয়ে পটলের বাপের পায়ের উপর হন্নে দিয়ে পড়েছে মতির বউ। পটলের বাপ বলে,
-- জোয়ান মদ্দ মানুষ, এদিক সেদিক আসবি যাবি, তুমি এত উতলা হইছ ক্যান।
-- সে না বইলা কোনদিন বাইরে থায়ে না, জেঠামশাই। খোদার দোহাই আপনারে, একটু খোঁজ খবর কইরে দেহেন। সারাজীবন আপনার ্বান্দী হয়ে থাকুম।
-- করবো বৌমা, করবো। বাদল তো বল একসাথেই ফিরছে সবাই। ঘাটে সবাই একসাথেই নামছে।
-- নামলে কুথায় যাবে সে? যে মানুষ রাত হলি বাড়ির বাইরে থাহে না কোনোদিন, সে মানুষ দু'দিন ধরি যাবে কৈ !
-- বাদল তো বল, নেমে উল্টো হাঁটা ধরিছিল আবার। বাদল দেঁৗড়ে, ডেকেও ফেরাতে পারে নাই।
-- ওদিকে হাঁটি সে যাবিডা কৈ জেঠামশাই? ওদিকে তো শশ্বানঘাট। তার ভয়ডর তো আছে।
-- কনে যাবে, সে আমি কেমনে কমু? আমাকে তো আর বলে যায়নি। তবে সবাই বলছে, গেছে ওদিকেই।
-- আপনে সব জানেন জেঠামশাই।
আপনে সবার মুরব্বী। ইচ্ছে করলে সব পারেন। লোকটা না এলে আমি মরি যাব একদম !
অাঁচল দিয়ে চোখ মোছে মতির বউ। ছেড়া শাড়ীতে টান পড়ায় ভরা যৌবন দোল দিয়ে ওঠে পটলের বাপের চোখের সামনে। সেদিকেই আছন্ন হয়ে গেঁথে থাকে তার ছানি ধরা চোখ।
মাথার ভেতরে কেমন একটা ঘূর্ণি আসে। পটলের মা-কে কাছাকাছি আসতে দেখে সাবধান হয় সে।
- তুমরা ঝগড়া ঝাটি কর নাই তো বৌমা ?
-- না জেঠামশাই। ঝগড়া ঝাটি কইরবো ক্যান? ও রাগ করতি জানে?
-- ঠিক আছে। তুমি এ্যাহন বাড়িতে যাও।
কাল সকালে আসি খোঁজ নিও।
বলেই হুকোয় টান মেরে কাশতে থাকে পটলের বাপ। তারপর একদলা কফ ফেলল দাওয়ায়। মতির বউ উঠে দাঁড়িয়ে ছেড়া শাড়ী এদিক সেদিক টেনে আব্রু ঢাকল।
-- ঠিক আছে জেঠামশাই, এ্যাহন যাই।
কাইলকে আবার আইসব।
বলেই আবারো পটলের বাপের পায়ে পড়তে গেল মতির বউ। পটলের বাপ পা সরিয়ে নিল। মতির বউ ওঠে কোনো কথা না বলে চোখ মুছতে মুছতে বেরিয়ে গেল। সেই অপসৃয়মাণ শরীরটাকে দু'টো চোখে যতোক্ষণ পারা যায়, ততক্ষণ লেহন করে গেল।
ছোট্ট গ্রাম নবীপুর। অজপাড়াগাঁ' বললে ভুল হবে। শহর থেকে সামান্য দূরে বলে ওখানকার হাওয়া এসে লেগেছে এখানে। কথাবার্তায়, চলাফেরায় সবারই একটু শহুরে হওয়ার চেষ্টা। দু'বছর হলো, বাজারের কাছে নদীর ধারে একটা ইস্কুলও করা হয়েছে আনু মেম্বরের ধরাধরিতে।
দুই শিফ্ট এ ক্লাশ হয়। প্রতি শিফ্ট শুরু হবার সময় কচি কন্ঠে জাতীয় সঙ্গীতের আওয়াজ ভেসে আসে কানে।
গ্রামের একেবারে দক্ষিণ দিকে, মরাই খালের সেতুটা পেরিয়েই, কয়েকটা ভাঙ্গাচোরা বাড়িঘর নিয়ে একটা বসতি। গ্রামের লোকজন একে সরদার পাড়া বলে ডাকে। বেশ নামডাক ছিল সরদারদের এককালে।
বেনু সরদারের ভয়ে নাকি বাঘে মোষে জল খেত একঘাটে। এ নিয়ে এখনো অনেক কাহিনী কিংবদন্তীর মতো প্রচলিত আছে এ এলাকায়। আসলে বেনু সরদার ছিল এই এলাকারই বিলুপ্ত হওয়া এক জমিদারের পোষা লাঠিয়াল। লাঠিয়াল বললে হয়তো পুরোটা বলা হবেনা, ডাকাতও বলা যেতে পারে। তার কাজ ছিল প্রজাদেরকে দাপট দেখিয়ে ঠান্ডা রাখা, আর পাশাপাশি শত্রুদেরকে ধ্বংস করা।
এই দুটো কাজেই পুরোপুরি পারদর্শী থাকার কারণে জমিদারের সাথে ভাল যত্ন খাতির ছিল তার, আর সেই সাথে ছিল আর্থিক স্বচ্ছলতা।
তারপর ধীরে ধীরে জমিদারী বিলুপ্তির সাথে সাথে দাপট ও প্রতাপ কমতে থাকে সরদারদের। এখন তিনপুরুষ পর মতা আর আর্থিক স্বচ্ছন্দ শেষ হয়ে এলেও মারকুটে চরিত্রটা যায়নি তাদের। জমিদারের কাছ থেকে বেনু যে জমি পেয়েছিল, সেটা তো পোষ্য পুষ্যিতে ভাগ হতে হতে টুকরো টুকরো প্রায়। এখন তাই আয়ের পথ হচ্ছে অন্যের জমিতে মুনির কাজ।
আরেকটা গোপন আয়ের উৎস হচ্ছে দল হিসেবে দাঙ্গাহাঙ্গামায় কারো পক্ষে ভাড়া খাটা। মাঝে মাঝে একটা দু'টো লাশও যে পড়েনা, তা নয়। কিন্তু পেশাদারী চরিত্রটা রয়ে গেছে বলে এখনও পর্যন্ত ধরা পড়েনি কেউ। আর এ নিয়েই জ্ঞাতিগোষ্ঠীর অন্য সবার সাথে মতির পার্থক্যটা। চেহারা সুরতে খুব বলশালী হলেও শিশুর মতো একটা নরম মন আছে মতির।
ওর মতো জোয়ান আর একটিও পাওয়া যাবে কি না সন্দেহ এ এলাকায়। অথচ দাঙ্গা ফেসাদের কখনোই কাছে ঘেষতে চায়না। এমন কি বউয়ের গায়েও তাকে হাত তুলতে দেখেনি কেউ কোনদিন।
সারারাত কাঁদল মতির বউ। ওর বুকের ভেতরে যে এত কান্না জমা ছিল, সেকথা কে জানত? কোথায় হারিয়ে গেল এমন জোয়ান মর্দ লোকটা হঠাৎ।
কত ভালোবাসত তাকে! ভুলেও কোনদিন গায়ে হাত তোলেনি। দু'দিন আগেও তো জড়িয়ে ধরে কত সোহাগ করলো। নিজের বুকে এখনো মানুষটার রোমশ শরীরের গন্ধ পাওয়া যায়। বাদল ও পটলদের সঙ্গে বেরিয়ে যাবার দিন দুপুর বেলা খেতে বসে বলছিল,
-- আমার ওদের সাথে যাতি মন চাচ্ছে না।
বউ ডেকচিটা কাৎ করে শেষ মাছের টুকরোটা খুঁজে খুঁজে বের করছিল স্বামীর জন্যে।
সেদিকে নজর রেখেই বলল,
-- ইচ্ছে না কইরলে যাবা ক্যান? ওরা কি মারতি আসবি?
-- অত সহজ নারে বউ? বলেছে ভিটে মাটি ছাড়া করবে। মাতব্বর আছে, বাপজানও ওদের দলে। দলে না থাকি করবি কি বাপজান। জমিজমা তো সব মাতব্বরের কাছে দিয়ে বইসে আছে।
-- চলো, আমরা অনি্ন কোথাও চলি যাই।
-- কোথায় যাবা? শহরে? ওখানে কাম আছে? সবাই তো ওখানেই যায়। তাছাড়া বাপজান বুড়া মানুষ। একা একা করবিডা কি।
মতির বউ কোনো উত্তর দিল না। ছেলেবেলা থেকেই তো ভীষণ ঠান্ডা স্বভাব মতির।
সবার সাথে চলতো, মিশতো, কিন্তু কোনরকম ঝামেলা দেখলেই কেমন যেন মিইয়ে যেতো। বাপ, চাচাদের মতো একেবারেই হয়নি। বাপ তো ছিল মহাদুর্দান্ত। মতির মাকে বিয়ে করার জন্যে উঠিয়ে এনেছিল মন্ডলদের বাড়ি থেকে। মন্ডলরা তো দূরের কথা, মাতব্বর বা অন্য কেউ টু'শব্দটি করার সাহস পায়নি।
মতির মাও ছিল খুব নরম স্বভাবের মানুষ। স্বামীকে ভালবাসলেও সমাজে তার এই মারকুটে ভাব একেবারেই পছন্দ করতো না। ছেলেকে গ্রামের স্কুলে পাঠিয়েছিল। ভালো করতে পারেনি বলে ছেড়ে দিতে হলো মতিকে সেই স্কুল। আর ভালো করবেই বা কি করে।
শান্ত স্বভাব বলে বাড়িতে যে অপমান সইতে হতো ওকে, ডাকাতের ছেলে বলে স্কুলেও সে অপমান আসত অন্যভাবে। এমনকি স্কুলের মাস্টাররাও যখন তখন অনেক কিছু বলে ফেলত। বিছানায় পাশে শুয়ে এসব কথা মতিই তাকে বলেছে একটু একটু করে।
খাওয়া হয়ে গিয়েছিল মতির। থালায় জল ঢেলে হাত ধুয়ে জলটা চুমুক দিয়ে খেতে খেতে বলল,
-- এবার মনে হচ্ছে যেতেই হবি ওদের সাথে।
খুব জোরাজুরি করছে ওরা।
একটু চমকে উঠলো মতির বউ, যদিও এ সমস্যার মুখোমুখি ওদেরকে অনেকবারই হতে হয়েছে। কোথাও কোন খুনখারাবি করতে হলেই ওরা টানাটানি করে মতিকে নিয়ে। ওদের ভেতরেও যেন একটা জিদ কাজ করছে। একই সমাজে থেকে মতি সরদারদের চিরাচারিত পেশা থেকে দূরে থাকবে, সেটা সহ্যই করতে পারছে না ওর গোষ্ঠীর লোকজন।
কিন্তু কোন না কোন ভাবে প্রতিবারই নিজেকে সরিয়ে রাখতে পেরেছে মতি। এবার মতির গলার আওয়াজে একটা হতাশা টের পেলো সে।
-- কুথায় যাবি ওরা?
মতির বউ থালার জলটুকু বেড়া আর মেঝের ফাঁকটুকু দিয়ে ঢেলে দিয়ে প্রশ্ন করল। একটা রুগ্ন বেড়াল এসে সে জলটুকু চুক চুক করে চাটতে লাগল। সেদিকে তাকিয়ে উত্তর দিল মতি,
-- ওই গেরামের জসিম আলী কে নাকি শিক্ষা দিতি হবি।
-- কি করিছে জসিম আলী ?
--আমাদের মাতব্বরের বিলের পারের জমি নাকি- দখল করিছে।
-- ওরা কোর্ট কাছারি করলিই তো পারে।
-- মারপিট না হলি, একটা দু'টা লাশ না পড়লি ওরা কোর্ট কাছারি করে নাহি?
কথা আর বেশীদূর এগুতে পারেনি। বাদল এসে ডেকে নিয়ে গেল মতিকে বাইরে। যখন ফিরে এল তখন অনেক রাত।
স্বামীর জন্যে অপেক্ষা করে করে শুয়ে পড়েছিল বউ। ফেরার পর তার বুকে মুখ গুঁজে ঘুমিয়ে পড়লো।
পরদিন কাকও তখন ডাকেনি এমন অন্ধকারে বেরিয়ে পড়তে হলো মতিকে ওদের সাথে। বউকে আদর করে বিদায় নেবার সময়টুকুও পেল না।
পটলের বাবার কাছে গিয়ে বাদলের দেখা পেল মতির বউ।
দু'জনেই গম্ভীর হয়ে কি একটা নিয়ে যেন কথা বলছিল। ওকে দেখেই মুখ ঘুরিয়ে ফেলল বাদল। আরো গম্ভীর হলো দু'জনের চেহারা।
-- কোন খোঁজ পাইছেন জ্যাঠামশাই।
উত্তর দিল বাদল।
ওর চেহারায় আষাঢ়ের মেঘ। তী্ন দৃষ্টিতে একবার তাকালো মতির বউ এর দিকে,
-- অমন মাইনষের খোঁজ না পাওয়াই ভাল। যে নিজের লোকদের বিপদে ফেলে। ওখন পুলিশ আসি আমাদেরকে ধইরে নিয়ে যাক !
-- কি হয়ছে বাদল ভাই? তুমি এমন কথা কইছো ক্যান?
মতির বউ এর আকুতির কোন জবাব দিলনা বাদল। পটলের বাবার দিকে তাকিয়ে বলল,
-- যা বলার তুমি বল খুড়ো।
আমি গেলাম।
বলেই কারো দিকে দৃষ্টি না দিয়ে বেরিয়ে গেল বাদল। মতির বউ জ্যাঠামশাইয়ের পায়ের উপর গিয়ে পড়ল।
-- মতি আসল কাজে বাগড়া দিয়ে বিপদে ফেইলেছে আমাদের সবাইকে। পটলের বাবার গলার আওয়াজেও ক্রোধের প্রকাশ।
-- কি অইছে জ্যাঠামশাই?
ভয়ে ফ্যাস্ফেসে হয়ে গেল মতির বউ এর গলার আওয়াজ। পায়ের নিচের মাটি যেন নড়ে উঠল টালমাতাল।
-- জসিম আলী চিনে ফেলিছিল বাদলকে।
-- তো?
-- চিনে ফেলেছিল বলে জসিম আলীকে খুন করতে চেয়েছিল সবাই। কিন্তুক মতি খুন করতে দ্যায় নাই।
একা লাঠি নিয়া সবার বিপক্ষে দাঁড়াই ছিল।
-- ও অহন কই জ্যাঠামশাই? ঘরে আহেনা ক্যান?
-- সে আমি কেমনে কমু? নৌকায় সবাই নাকি গালমন্দ করিছে, মারতে চাইছিল ওকে। তাই গেরামে ফেরে নাই। আর তুমিই বা কেমন মানুষ বৌমা, সোয়ামীকে সমাজ ছাড়া কইরা রাহ !
আর কোন প্রশ্ন করল না মতির বউ। পটলের বাবার পায়ের উপর থেকে সরে বসল ধীরে ধীরে।
অাঁচলে চোখ মুছল। বুকের ভেতরের জমাট অন্ধকার যেন ভর করেছে চোখের সামনে। পটলের বাপেরও যেন দয়া হলো তাকে দেখে।
-- তুমি এহন বাড়িত যাও বৌমা। লাজ কমলে দু'দিন পরেই ফিরে আসবে ঘরে।
বাড়ি ফিরে সারারাত বুক ভরে কাঁদল মতির বউ। তারপর একসময় মতির তেলচিটে বালিসটা জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়লো ।
জসিম আলীর আত্মীয়রা বদলা নিল যথারীতি। পরদিন একটা লাশ ভেসে উঠল নদীর কচুড়িপানাকে ঠেলে সরিয়ে। শীতের সোনালি সকাল তাই ঝিলমিলিয়ে উঠল না প্রতিটি সকালের মতো।
কুয়াশা চাদর হয়ে কিছুটা বেশী সময় জড়িয়ে থাকল সে লাশের বেআব্রুশরীরে ...
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।