আমার ব্লগ আমি আমার ডায়েরীর মতো করে ব্যবহার করি। এখানে আমি একটা গল্প অথবা কবিতা লিখতে পারি, অথবা আজকে কিসের তরকারী দিয়ে ভাত খেলাম, সেইটাও লিখতে পারি। ।
অনিলা। আমার গার্লফ্রেন্ড।
ওদের বাসায় আমি কখনই তেমন একটা যাইনা। কোন রাগ-অভিমানের কারনে নয়। যাইনা যাইনা। কোন কারন নেই। গতকালও যেতাম না, যদি না ওর মা ফোন দিয়ে এতটা জোড়াজুড়ি করতো।
আন্টিকে ছুতো দিয়েছিলাম,
“আমি আমার খালার বাসায় আসছি। বাসায় ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে যাবে। আজকে তো আসতে পারবো না আন্টি। ”
আন্টি প্রতি উত্তরে বললেন,
“ঠিক আছে বাবা। তুমি বরং সন্ধায়ই আসো।
গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে। ”
শীতের দিনে বাসা থেকে বের হইনা বললেই চলে। তার ওপর আবার অনিলাদের বাসা আমাদের বাসা থেকে মোটামুটি বেশ খানিকটা দূর। রিক্সায় প্রায় আধাঘন্টা সময় লাগে। গত কয়েকদিন যাবত সূর্য মামা ছুটিতে গেছে।
আর এই কয়েকদিন আমার সারাদিনের অবস্থান ছিল কম্বলের নিচে। টানা চার-পাঁচদিন পর আজকে দুপুরে রোদের দেখা মিলেছে। তবে এত সুন্দর একটা মিষ্টি রোদ দেখেও আমি মনমরা হয়ে দুপুরটা কাটিয়ে দিলাম। কারন এই সুন্দর আবহাওয়াতেই অনিলার বাসায় যাওয়া যেত খুব ভালোভাবে। কিন্তু নিজের বোকামিতে সন্ধ্যা বেলার কনকনে শীতেই আমাকে কাঁপতে কাঁপতে যেতে হলো অনিলার বাসায়।
আন্টি পাঁচ মিনিট কথা বলে চলে গেলেন। অথচ আমি তাঁর গুরুত্বপূর্ণ কথার মাথামুন্ডু কিছুই বুঝলাম না। অনিলা এতক্ষণ দারিয়ে ছিল। এখন আমারপাশে বসলো। আমি বললাম,
- অনিলা! শাড়িতে তোমাকে অনেক সুন্দর লাগছে।
সত্যিই অনেক সুন্দর লাগছে!
- ছাই সুন্দর লাগছে। (অনিলার মুখে লজ্জিত হাসি)
- অনিলা জানো? তোমার এই টিপটিপে হাসিটা দেখার জন্যই মূলত আজকে এসেছি।
অনিলা খুব চেষ্টা করছে হাসিটা লুকিয়ে ফেলতে। কিন্তু পারছে না। আমার চোখের দিকে তাকিয়ে হাসি লুকানোর ব্যর্থ চেষ্টা করছে।
- অনিলা!
- হুম বলো!
- মানুষ সবচাইতে বেশি কী করে বলতো?
- উমম...... কী করে কী করে...!
- এই সামান্য কথাটাও জানো না? শোন তাহলে। মানুষ সবচাইতে বেশি কথা বলে।
- ও হ্যা। কথা বলে।
- ধুর! কথা বলেনা।
কথার চাইতে মানুষ চিন্তা বেশি করে।
অনিলা চোখ টিপটিপ করে আমার দিকে তাকাচ্ছে।
আমি বললাম,
- হাসছো না কেন? না হাসলে কথা বলবো না।
অনিলা এবার খুব ভালোভাবেই হেসে ফেললো। ওর হাসিতে আমার বুকের বাম পাশটা চিনচিন করে উঠলো।
- অনিলা!
- হুম।
- আমি সবচাইতে বেশি কী করি বলতো?
- জানিনা। (মুখ টিপে হাসছে)
- কী করি বলবো?
- হুম বলো।
- তোমাকে ভালোবাসি।
অনিলা এবার ওর অভিমানী মুখ ঘুড়িয়ে বললো,
- ছাই বাসো।
বাইরে দেখা তো করবেই না। হাতেপায়ে ধরে বাসায় আসতে বললেও আসো দুই মাসে একবার। তুমি আমাকে ছাই বাসো!
এবার আমি শব্দ করে হাসতে লাগলাম। আমি জানি, আমার হাসিটা খুবই বিদঘুটে। কিন্তু তারপরেও আমার এই বিদঘুটে হাসি দেখেই অনিলা আমার প্রেমে পরেছিল।
ছেলেদের হাসি দেখে যে মেয়েরা প্রেমে পরতে পারে, এইটা আমি আগে জানতাম না।
আমি অনিলাকে বললাম,
- দুষ্টু মেয়ে অনিলা। আমি তোমাকে ভালোবাসি না? এস কাছে এস। আজকে তোমাকে ভালোবাসা দেব।
অনিলার মুখ এতক্ষণে লজ্জায় রক্তিম।
আমি অনিলার হাত ধরে একটা টান মেরে কোলে বসিয়ে বললাম,
“কী? ভালোবাসবো?”
অনিলা মুখটা আরও লাল করে কাঁপা কাঁপা ঠোটে আস্তে করে বললো,
“জানিনা!”
এরপর আর কিছু না বলেই আমি ওদের বাসা থেকে বেড়িয়ে আসলাম। আমি মেইন গেটটা অতিক্রম করার সময় একবার পেছনে তাকিয়ে দেখলাম, অনিলা মুখটা ভোতা করে দরজার সাথে গাল লাগিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তারপর হাটতে হাটতে চিন্তা করতে লাগলাম, শেষবার ওর চোখের দিকে তাকিয়ে কী দেখেছিলাম।
অভিমান? ভালোবাসা? নাকি অন্যকিছু? ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।