কখনো চাই নাই দূরে থাকি...তবু দূরগুলো বারে বারে আসে...
বাংলাদেশ ইন্ডিয়ারে হারাইলো, খেলা সারারাইতভর জাইগা দেখলাম, মনটা ভালোই ছিলো পরের দিন...কিন্তু মনে হইলো ক্রিকেট বাণিজ্যতো বেশ দাঁড়াইছে! আমাগো ব্লগেও তার প্রমাণ জলজ্যান্ত হাজির...সবাই আছে ক্রিকেটেই সারাক্ষণ...কোথাকার কোন মন্দিরা বেদী টেলিভিশনের ভারতীয় দর্শকগো মাথায় রাইখা ইংরেজী/হিন্দি মিশাইয়া কি জানি কয়...তার ব্যবচ্ছেদে আমরা তুলকালাম! তার পোশাকেও খুঁত ধরি...রুচী বোধ খারাপ বইলা আমাগো দেশী সংস্কৃতিবানগো কাছে ভালোই গালি খায় বেচারী...
এক জয়ে আমরা, মানে বাংলাদেশীরা উদ্্বেলিত হই... আশায় বুক বাঁধি, এইবার! আমরা দোয়াখায়েরের মিছিল লাগাই...আমরা প্রশংসার তুবড়ি ছোটাই...ক্রিকেট আমাগো জাতীয় জীবনে সকল বিভেদ মুইছা দেয়। আশরাফ রহমান আর জামাল ভাস্কর একমতো চিন্তা করে...দেশের একটা জয় এইরম...এতোটাই শক্তিশালী! ছাগল আর বাঘেরে একঘাটেই জল খাওনের স্বপ্ন দেখায়...
ভারত আর পাকিস্তান এই দুই শক্তিরে নিয়া আমরা কাইজ্জা করি, কে কার চেয়ে বড় শয়তান সেইটা নিয়া হুজুগে মাতি...এরপর কার যে লাভ আর কার যে ক্ষতি হয় সেইটা...মনে হয় না কেউ জানে!
শ্রীলংকা বাংলাদেশরে হারাইলো, খেলা সারারাইতভর জাইগা দেখলাম, এখন এক নির্লিপ্ত মনে প্রায় ফাঁকা অফিসে বইসা ব্লগপোস্ট লেখি, কারো কিছু যায় আসে না। খেলা যতোদূর বুঝি বাংলাদেশ কাইলকা খুবই খারাপ খেলছে এইটা যেমন সত্য, তার লগে তাগো সামর্থ্যও যে একটা সীমানাতে বাধা এখনো, সেইটা উদ্ভাষিত...একজন জাতীয়তাবাদী হিসাবে আমার মান খুব ভালো না। একজন ইউনুস নোবেল পাইলে, বাংলাদেশ দল অস্ট্রেলিয়া-ভারত কিম্বা শ্রীলংকারে হারাইলে আমি উল্লাশে মাইতা উঠনের আবেগ ধারণ করতে পারি না, স্রেফ একটু ভালো লাগা, পরিচিত নামের বদৌলতে মনে হয় এতোটুকু ঘটে। মনে হয় আমার নিউজিল্যান্ডার বন্ধু সায়মন ডেকেন ফরমুলা ওয়ান জিতলেও আমি ঠিক এইরম খুশিই হমু। আরেকটু আছে বৃহৎ শক্তির পরাভব দেখনের বাসনা...টুইন টাওয়ার ভাঙনের পর এতো লোক মারা গেলো...আমি কিন্তু প্রথমেই একটু খুশিই হইছিলাম...সাম্রাজ্যবাদের ধ্বংসে আমার আনন্দ আছে...এইটারে পারভারসিভ কইলে তাই...আমি এইরমই!
আইজকা দেখলাম ইমন পোস্টাইছে হার্পারের প্রতি ক্ষোভ নিয়া, ভালো পোস্ট...কিন্তু আমার মনে পইড়া গেলো তার এর আগের ক্রিকেট সম্পর্কীত পোস্টটার কথা। সেইখানে সে বলছিলো, তার পুরা পরিবার নাকি রানার সমরণে ঐ খেলাটা দেখছে...খেলার চেয়ে রানা আর সেতু বেশি ছিলো তাগো চেতনায়। আমার একটা উদ্ভট কথা মনে হইলো, আসলেই উদ্ভট! আতকাইয়া উঠতে পারে অনেকেই এইকথা শুনলে...আমার মনে হইছে প্রতি খেলার আগে যদি একজন কইরা তরুণ খেলোয়াররে মাইরা ফেলন যাইতো! খেলায় জিততে যদি আমার উপলক্ষ্য লাগে...দোয়া লাগে...করুণা লাগে...সেই খেলার দরকার কি! খেলাটাইতো থাকে না সেইখানে...বরং বাণিজ্যতো ভালো এই আবেগের চাইতে! দোষ কি বাণিজ্যের! তারাও তো আসলে এইসবরেই পুঁজি কইরা চলে!
আমি বিশ্বকাপে আজীবন ওয়েস্ট ইন্ডিজরে সাপোর্ট দেই...ক্রিকেট খেলাটা যখন বুঝতে শিখছি ঐ টাইমে তারা দোর্দন্ড প্রতাপে সবাইরে লৌড়াইতেছে বিশ্বময়। বিশ্ব চ্যাম্পিয়ান ভারতরে পরের সিরিজেই হোয়াইট ওয়াশ! টানা 11 টেস্ট অপরাজিত সেই আমলে...ক্যারিশমাটিক সব খেলোয়ার...ভিভ-লয়েড-মার্শাল-গার্ণার-কানহাই-হোমস-রবার্টস! ভাবন যায় একটিমে এইসব প্লেয়ার! এখনো ঐ ভালোবাসাটা আছে...লারা সেঞ্চুরী করুক মনে প্রাণে চাই, প্রতি খেলাতেই...পাকিস্তানের সার্কাস্টিক কিম্বা ইন্ডিয়ার বোরিং ক্রিকেট ঠিক নিতে পারি না, আশির দশকে কৈশোরত্তীর্ণ আমি।
কি যে আসলে লিখতে চাইছিলাম আমি! কি যে লিখলাম! কিছুই বুঝতেছিনা...মনে হয় বহুদিন পর ব্লগে আবার বর্ণমালা সাজাইলাম...অনুভূতির বর্ণমালা...যারা শুণ্যতারে ঢাকে...যারা অহেতুক আবেগেও প্রাণময়তা জাগায়...আবার একই সাথে যুক্তির পরম্পরাতে ভাবতে শিখায়! বর্ণমালারা এমনই...
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।