সযতনে খেয়ালী!
ভায়োলিনের সুর আমার বরাবরই পছন্দ। বাঁশী আর ভায়োলিনের মধ্যে একটা ঠান্ডা-লড়াই ও জমে উঠতে পারে অবশ্য এনিয়ে। কিটারোর চাইতে শেরাটনে বাজানো বাঁশিওয়ালার প্রতি আমার আলাদা একটা টান অনুভূত হয়, সেটা বোধকরি সুরের আধুনিকতার সীমানা ছাড়িয়ে শিল্পীর আন্তরিকতার ছোঁয়ার কারনে। প্রবাস জীবনের শুরুর দিকে আমার কাছে একটা এ্যালবাম ছিলো, "রোমান্টিক ভায়োলিন"। সারাক্ষণ বুঁদ হয়ে থাকতাম ভায়োলিনে।
যখন বাঁশীর সুরে "ফ্লাই" শুনলাম প্রথম, মজে গেলাম সেটাতেও। একেএকে জড়ো করলাম সেই এ্যালবামের মনেধরা সুর গুলোও। সব ছাঁপিয়ে তখন ঘর উজার করে বাজতো ফ্লাই- ফ্লাই - আর ফ্লাই, মনের মধ্যে উড়িয়ে চলা ভাবনার উদ্্রেক করে।
যাযাবরী মনন লালন করি আমি, খালি উড়াল দিতে চায় ফাঁক-ফোঁকর পেলেই। বাঁধা-ধরা কোন কিছুই বেশীদিন ভালো লাগে না।
সুযোগ পেলেই দে-দৌড়, ধনাধন দৌড়...।
এবারো দিলাম একটা দৌড়, না আপাতত উলটো না। সোজা সাপ্টা দৌড়, যে কারনেই ফেরার তাগিদটাও ততটাই বোধ করছি, যতোটা করেছিলাম দৌড় দেবার সময়ও। মাঝখান থেকে চারটা দিন আরো কিছু উদ্ভট পরিস্থিতির সামনে পড়তে হয়েছে। উপায় নাই গোলাম হোসেন- হয়ে মাথা কাত করে, ক্যাবলা কান্তের মতো নাক-মুখ খিঁচিয়ে নিম পাতার রসের মতো গিলতে হয়েছে।
শুরুটাই আসলে ভালো হয়নি! মোবাইলে নতুন নতুন ইন্টারনেট ব্যবহার করি। বড়ই তামশার জিনিষ। একবার নেট-এ ঢুকলে বের হবার আর রাস্তা খুঁজে পাইনা। ভাষা ইংরেজী করে চেষ্টা করেছি, নেটে ঢুকে না। বিদেশী ভাষায় কানেক্টেড হবার পরে, ডিসকানেক্ট ক্যামনে হয়- এইটা তো যাযাবর জানে না! ফলাফল, নেট চলে টিল দ্যা এন্ড অফ...
সেদিন মোবাইলের স্ক্রীনের দিকে তাকাইয়া ট্রেন থেকে নামতে গিয়া প্লাটফরমে খাইছি উষ্ঠা! ব্যাপার না, অনেকেই শুকনাতেও হোঁচট খায়, আমিও খাইছি, নম্মাল! কিন্ত আমার এইবার যাযাবরী যাত্রার শুরুতে - কোলন শহরের নয়মার্কট (নিউমার্কেট)- এর (সাবওয়ে) ট্রাম স্টেশনে নামতে গিয়া ঘটলো অঘটন টা।
চোখ আমার যথারীতি মোবাইলের সুন্দরী স্ক্রীনে। সিঁড়ি দেখলেই লাফায়া নামার নিয়ম। সেই নিয়ম পালন করতে গিয়াই...। নব্য টাইলস করা সোঁপানে ডান পা পড়লো প্রজেক্টেড জায়গাটার একটু তফাতে, খানিকটা ত্যাড়া হয়েই। চোখ তখনো মোবাইল থেকে সরে না।
একটু পরে ধপাস শব্দ শুনে "কোন হালায় শুকনার মধ্যে আছাড় খাইলোরে" বলে বিরক্তি ভরে চারদিক তাকিয়ে বুঝলাম, উক্ত ব্যাক্তিটি আমিই।
সম্বিত ফিরে পেয়ে দেখি সিঁড়িতে কাইজ হয়ে পড়ে আছি, ডান পা নাড়াতে পারছিনা। সবচাইতে যে অস্বস্তিকর ব্যাপার ছিলো তা হলো চারদিকে কম করে হলেও চারজোড়া ললনার আটজোড়া চোখ, এদিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসে। মোবাইলটা কিন্ত তখনো হাতে ধরা! "যাক বইছি যখন, পানডা খাইয়া লই" ভাব নিয়া টুইস্টেড ঠ্যাঙটা নিয়ে টেনে টেনে ট্রামে উঠলাম। কারন তখন ব্যাথার চাইতে অক্টেড ললনার চোখ গুলোই বেশী পীড়া দিচ্ছিলো ।
ভাইয়ের বাসায় আসলে সময়টা ভালোই কাটে। ইচ্ছেমতো, পাগলের মতো ঘুমাই। ভাবী বিদেশী হলেও রান্নাটা শিখে গেছে আগুন। আমি গরীবে-মুফতি, কি-না-কি খাই, এই দিকটা বেশ ভালোই চিন্তা করে। আর আমিও এখানে এলে আগামী এক মাসের খাওয়া উটের মতো করে স্টোর করে নিয়ে যাই! খাওয়া আর ঘুম ছাইড়া যাইতে শখ হয় না।
কিন্ত যাইতে তো হইবোই, আইজ আর কাইল...।
[গাঢ়] শিরোনামটার সাথে লেখাটা গেলো কি? আসলে শিরোনামটার উদ্দেশ্য ছোট্ট তুমিন![/গাঢ়]-যার একটু শুভকামনা পাওনা আমাদের কাছ থেকে!
[link|http://www.esnips.com/doc/ffcd16c8-5cd3-4bb4-aaa1-2e9ff69aa77c/Arnob---tomar-jonno|MvbUvi Rb
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।