জ্যোতিষীরা যে মানুষের উপকার করার থেকে অপকার অনেক বেশী করে সে বিষয়ে আমার কোন সন্দেহ নেই । মূলত মানুষকে বোকা বানিয়ে এবং তাদের মানসিকভাবে দূর্বল করে দিয়ে তাদের কাছ থেকে কিছু টাকা কামিয়ে নেওয়াই এদের একমাত্র লক্ষ্য ।
জ্যোতিষশাস্ত্রের ভিতরে আদৌ কিছু সারমর্ম আছে কিনা সেটা আমার জানা নেই, কিন্তু এটা সহজেই বুঝতে পারি যে এর উপর ভিত্তি করে জীবনের কোন সিদ্ধান্ত নেবার মতো বোকামো আর হয় না ।
অনেকক্ষেত্রে জ্যোতিষীরা কিছু সম্ভাবনার কথা বলে যা হয়ত কিছুটা মিলে যায় । কিন্তু সেই মিলে যাওয়াটা হয়ত সংখ্যাতত্ত্বের বিচারে এমনিই হত ।
তারপর জ্যোতিষীরা যেভাবে বিচার করে তা যেকোনও সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষের পক্ষে মেনে নেওয়া কষ্টকর । যেমন তাদের গ্রহের লিস্টে রাহু আর কেতু আছে যার দেখা এখনও পাওয়া যায় নি । এছাড়া তারা সূর্য এবং চাঁদকেও গ্রহ হিসাবে ধরে । তারপর জ্যোতিষীদের মহাবিশ্ব পৃথিবীকেন্দ্রীক যা একেবারে ভুল ।
জ্যোতিষীদের লোকঠকানো ব্যবসা বন্ধ করার জন্য ভারতে আইন অবধি আছে ।
কিন্তু তাকে কলা দেখিয়ে জ্যোতিষীরা দিব্যি করে খাচ্ছে ।
মানুষ যত সফল হয় তত তার নিজের প্রতি আস্থা কমে । প্রতি মূহুর্তেই সে বিফল হবার ভয় পায় । এইজন্য দেখা যায় ফিল্মস্টার, খেলোয়াড়, রাজনীতিবিদ, সাহিত্যিক সবাই জ্যোতিষীর দ্বারস্থ হচ্ছেন ।
পশ্চিমবঙ্গের বেশির ভাগ পত্র পত্রিকাতেই রাশিফল ছাপা হয় ।
অতি আধুনিক ইংরাজী পত্রিকাগুলিও বাদ যায় না । এছাড়া টিভি চ্যানেল গুলিতে রোজ সকালে রাশিফলের অনুষ্ঠান প্রচারিত হয় । এছাড়া বিভিন্ন চ্যানেলের স্লট ভাড়া করে নিয়ে জ্যোতিষীদের লোকঠকানো অনুষ্ঠান তো আছেই ।
এমনকী ইন্টারনেটের বিভিন্ন ভারতীয় পোর্টালে রাশিফলের জন্য আলাদা পাতা পর্যন্ত থাকে । মোবাইলে এসএমএস আসে পণ্ডিতজীর কাছ থেকে মিনিটে ছয় টাকা খরচ করে পরামর্শ নেবার জন্য ।
পুরো ব্যাপারটাই যে করা হয় স্রেফ ব্যবসা বাড়ানোর জন্য সেটা বোঝা শক্ত নয় ।
এই কুসংস্কারাচ্ছন্ন দেশে আবার বিদেশ থেকে কুসংস্কার আমদানি করা হয় যেমন চৈনিক বুজরুকি ফেং শুই । এই বুজরুকি দেখিয়ে আর বেচে কলকাতায় কিছু লোক প্রচুর টাকা করে ফেলেছে ।
মুম্বাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে জ্যোতিষীদের রমরমা বাজার তাদের মতামত না নিয়ে কোনো কাজই করা হয় না । সেখানে লাগে রহো মুন্নাভাই সিনেমাতে জ্যোতিষীদের বিরুদ্ধে কিছু কথা বলা হয়েছে ।
তাই দেখে মনে ভরসা জাগে যে সুস্থভাবে চিন্তা করার লোক এখনও মনে হয় আছে ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।