মন'রে কৃষি কাজ জানো না, এমন মানব জমিন রইলো পতিত, আবাদ করলে ফলতো সোনা
টেকনোলজি খুব দ্্রুত পাচার হয়। লিগ্যালি এবং ইলিগ্যালি। সেটা কম্পিউটারে কোন প্রোগ্রাম হোক বা ভোট চুরির বিদ্যা হোক। সব খুব দ্্রুত এ পকেট থেকে ও পকেট হয়ে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। ফ্লোরিডা থেকে ভোট চুরির টেকনিক রপ্তানি হয়ে গেছে খুব দ্্রুত।
টাটা কোম্পানী আমাদের দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় মাপের বিনিয়োগ এর ট্রাম্প কর্াড ছুড়ে দিয়েছে। বিষয়টা খুব সেনসিটিভ,তাই আরো বছর দশেক আগের কিছু ফ্ল্যাশব্যাক দিই।
আওয়ামী শাসন আমল থেকেই গ্যাস রপ্তানি করতে হবে এই রকম একটা হেডিং বাংলাদেশের সব পত্রিকা গুলোতে প্রতি চার/পাঁচ দিন অন্তর
অন্তর একবার দেখা যেতো। আমাদের আশে পাশে এই গ্যাসের সবচেয়ে বড় ক্রেতা ভারত। কিছু দিন বাদে এই হেডিং পালটে হয়ে গেলো ভারতে গ্যাস রপ্তানির সম্ভাবনা।
এইযে সম্পদ মানেই বেচতে হবে, কিংবা সন্ত্রাসী মানে গণধোলাই দিতে হবে, সরকারী র্কমচারী মানেই ঘুষ খায় । কোন প্রক্রিয়া কে যখন সমাজে বৈধতা দেওয়া দরকার হয় মাস মিডিয়া এই টেকনিকটা অবলম্বন করে। টেকনিকটা কি ? প্রতিদিন এই বিষয়ে খবর পেশ করা এবং সেই বিষয়ে মানুষের আগ্রহকে সীমিত করা একই সাথে খবরের র্চবিত-র্চবনের মধ্য দিয়ে ওদের যে উদ্দেশ্য সেটাকে মানুষের মাথায় গেঁথে দেওয়া।
এই গ্যাস রপ্তানির খবরর ক্ষেত্রেও মাস মিডিয়া সফল। মানুষের মাথায় এই চিন্তা ঢুকিয়ে দিয়েছে যে গ্যাস রেখে কি হবে, উপরে তোলো , বিক্রি করো কাঁচা টাকা আসবে।
এই নিয়ে অনেক খেঁচা-খেঁচি হলো , হিরিঞ্চি-বিরিঞ্চি হলো। আমেরিকান রাঘব-বোয়াল এসে শেখ হাসিনারে বুঝাল যে ভারতে গ্যাস রপ্তানি করাটাই উত্তম। আপা বুঝলেন এবং এও জানেন এইটা নিয়ে বিরোধীদল হাংগামা করবে। আপা ভারতরে দিবে দিবে বলে অনেক গড়িমসি করলেন। সেই সময় ডেইলি স্টারে তৎকালীন অবসরপ্রাপ্ত দুই পেট্রোবাংলার ডাইরেক্টর একটা যৌথ লিখা লিখলেন এই নিয়ে।
সাধারণত পত্রিকাগুলি এই ধরণের লিখা ছাপেনা। কোন ভুলে ওরা ছেপেছিল।
লিখাটার জিস্ট হলো,
'' বাংলাদেশের প্রকৃত গ্যাস মজুদ জানা যায়নি, যা আন্দাজ করা হচ্ছে তার হিসেবে বলা যায় ভারত যে পরিমাণ গ্যাস চাইছে সে পরিমাণ রপ্তানি করতে গেলে যমুনা ব্রিজের উপর দিয়ে যাওয়া গ্যাস পাইপের পুরো ক্যাপাসিটি লাগবে । সে ক্ষেত্রে
1। আামদের সম্ভাব্য ইন্ডাস্ট্রিয়াল এরিয়া হওয়ার সম্ভাবনা যেটুকু আছে উত্তর বংগের সেটা অংকুরে শেষ।
2। গৃহস্থালি কাজের জন্য উত্তর বংগবাসী আর পাইপ লাইন দিয়ে গ্যাস ব্যবহার করতে পারবে না।
** এখন বাংলাদেশে সিলিন্ডারজাত গ্যাস ফ্রান্স থেকে আমদানী করা হয়।
শেষে একটা জোক ছিল, তাহলে আমাদের বেগমরা ভাত কিভাবে রান্না করবে ? আামদের গ্যাস বিক্রি করে এত পয়সা হবে যে বেগমরা বোয়িং করে দিল্লি গিয়ে ভাত রান্না করে আসবে। আর দিল্লির বিবিরা আমদানী করা গ্যাসের সিলিন্ডার দিয়ে রান্না করবে।
এখন যারই মগজ আছে সে হিসাবটা বুঝতে পারেন।
যাই হোক আপা গড়িমসির ফলাফল হাতে হাতে পেলেন, জটিল একটা পরাজয় দিয়ে। আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তাও ছিলনা এটা ঠিক। কিন্তু মজা হচ্ছে এখন সরকার হয় পাশ্চাত্যের অংগুলি হেলনে। এটা লাস্ট ইলেকশন দেখলে স্পষ্ট হয়।
আপা হজ্জ্ব করে এসেই চিল্লাচিল্লি করা শুরু করলেন যে ভোটে কারচুপি হবে। কেন? এই জোনের সিআইএর ডিসিশান মেকিং জেদ্দায়, আপা-ভাবীরা হজ্জ্ব ও করে , সাথে গ্রহ বাবার দোয়াও নে। আপা ওখান থেকেই বুঝে গেলেন উনারা হেরে গেছেন। এমনকি ঢাকায় যারা এক আধটু কান খোলা রাখেন তারা নিশ্চয়ই শুনতে পেয়েছিলেন যে আওয়ামী লীগ 70টা আসন ও পাবেনা এরকম একটা কথা ছড়িয়ে গিয়েছিল। যাই হোক এটা নিয়ে ভাবাভাবি করে কাজ নেই।
অকাট বদমাশদের একটা দল , আরো অকাট্য
বদমাশদের কাছে হেরে গেছে এটাই সত্য।
বিষয় হচ্ছে আমাদের একটু খানি তেল -গ্যাস আমাদের ভাগ্য নিয়ন্তা হতে বসেছে এটা জনগণ বোঝে কি ?
ভারতে গ্যাস গেলো না, এবার ভারত নিজেই আসল বিএনপি সরকারের সময় টাটা নাম নিয়ে।
গ্যাস যখন পাঠাতে চাও না, তখন আমরাই আসলাম ভাইয়ে ভাইয়ে ভায়রা এসো একটা সহজ পথে যাই। বিএনপি নানা ধরণের নাটক করছে শেষ অংকে টাটার সাথে চুক্তি মনে হয় হয়েই যাবে।
টাটা কি চায় , কেনো চায় এটা সবাই বোঝার কথা , এটার সুদূর প্রসারী র্অথনৈতিক ক্ষতি কি আমি সেটাই বলি ?
আমরা এখন র্দজির জাতে পরিণত হয়েছি আমাদের পাট-চা ধ্বংস করে।
কাপড় সেলাই কোন ভাবেই একটা বুনিয়াদী র্অথনীতি না। উদ্্বৃত্ত তৈরির র্অথনীতি না। এটা স্রেফ গতর খাটা , মাইনে পাওয়া। নিজেদের কাঁচামাল ও না, নিজেদের টেকনোলজিও না, নিজেদের ব্রেইন ওনা। আর এই ধরনের ম্যানুফ্যাকচারিং এর বেনিফিসগিয়ারীদের সন্তানেরা কানাডায় পড়াশোনা করে , সিংগাপুরে শপিং করে।
এটার চালিকা শক্তি সাভারে ভবন ধ্বসে আলু-কচুর মত র্ভতা হয়।
বাংলাদেশের একপাশে ভারতের অনুন্নত সাতটা রাজ্য। যেগুলোতে একটা ইট পাঠাতে অতিরিক্ত অন্তত 300 কিলো অতিক্রম করতে হয়। আমরা ভৌগোলিক ভাবে একটা সুবিধাজনক অবস্থানে আছি। ভারত সে কারণেই ট্রানজিট সুবিধা চায় দূরত্ব কমানোর জন্য ( ফেনসিডিল গুলো যাওয়ার পথে ফেলে যাতে পারবে ) ।
তার মানে আমরা আমাদের দেশের চাইতেও বড় একটা অঞ্চলের ব্যবসা দখল করতে পারি, যে খানে প্রতিদ্্বন্দী আসলে কেউ নেই। ইতিমধ্য বাংলাদেশে এত রি-রোলিং মিল হওয়ার মূল কারণ ও এটা। বাংলাদেশ থেকে গৃহ র্নিমাণ সামগ্রি থেকে শুরু করে অনেক কিছুই সেভেন সিস্টারসে যাচ্ছে।
টাটা কিসের কারখানা করতে যায় ?
সার কারখানা এবং ইস্পাত । গ্যাস ব্যবহার করে সার আমরা বানাতে পারিনা।
টাটার সারে কি ফসল বেশী হবে? টাটা প্রথম র্পযায়ে রোল কয়েল বানাবে । যেটা বাংলাদেশে অনেকেই করছে, ওরা টাটা নামক হাতির পদপিষ্ট হবে। টাটার ইস্পাত কারখানার কিছু প্রোডাক্ট আমরা বানাইনা এটা ঠিক। কিন্তু জনগন কি ভাবে দেখে বিষয়টাকে? টাটা আসলে অনেক টাকা আসবে, অনেক লোকের চাকরী হবে। এটা সাময়িক লাভ, নিজেদের গ্যাস ব্যবহার করে নিজেরা ফ্যাক্টরি করলে নিজেদের একটা শিল্প হবে, চাকরী হবে ।
টাটার শিল্প হলে চাকরি হবে , কিন্তু গ্যাসের দামে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হব। আর পরিস্থিতি নাজুক হলে বা গ্যাস শেষ হয়ে গেলে পশ্চিম পাকিস্তানী বণিকদের মত ওরা বাক্স পেটরা গুটিয়ে চলে যাবে। যে কাজ মিত্তাল এবং টাটা ইন্দোনেশিয়ার ক্ষেত্রে করেছে। তারমানে কাকের বাসায় পুষ্টি পাইয়া , বড় হইয়া কোকিলার হাত ধরে ফোটো।
এই সহজ হিসাব জনগণের মাথায় ঢোকে না।
জনগণ কসাইয়ের মত কাঁচা টাকায় বিশ্বাসী। মজা হচ্ছে এই কাঁচা টাকা কি আদৌ জনগনের পকেটে আসে বা আসবে ? গরু লালন - পালন করে দুধ -মাখনের ব্যবসা, চামড়া প্রক্রিয়াজাত করে জুতার ব্যবসা করা এই লাইনে কেউ ভাবতে পারে না, দাদারা চায়ও না আমরা ভাবি। সবাই জবাই কইরা কিছু খাও , কিছু বেচ এই নীতিতে বিশ্বাসী।
এখন কে কে বেগম দিল্লি পাঠাবেন, হাত তুলেন ।
আমারে যদি বলেন তবে বলি, গ্যাস বা তেল কোনোটাই যদি পাওয়া না যায় তবে আমি খুব খুশি হব।
কারণ আমি চাইনা বাংলাদেশ নাইজেরিয়া হয়ে যাক। তেল পাওয়া গেলে এই দেশ শেষ হয়ে যাবে এটা নিশ্চিত। কারো বাপের সাধ্য নাই ঠেকায়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।