আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রত্যেকটি মানুষই আসলে এক একটি মহাবিশ্ব ধারণ করে

যারা উত্তম কে উচ্চকন্ঠে উত্তম বলতে পারে না তারা প্রয়োজনীয় মুহূর্তে শুকরকেও শুকর বলতে পারে না। এবং প্রায়শই আর একটি শুকরে রুপান্তরিত হয়।

আমার এই উপলব্ধিটির বয়স প্রায় বিশ বৎসর হতে চলল। অনেক ছোট বেলায়, তখন বয়স বোধহয় পাঁচ কি ছয় বছর। একা বাসার ছাদে দাঁড়িয়ে আছি এবং অদম্য কৌতুহল নিয়ে রাতের কালো আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি।

এসময় অনেকটা হঠাৎ করেই মনে হল যে আমার উপলব্ধি জগতে একটি নতুন বিষয় ধরা পড়তে শুরু করেছে। আমি বিষ্ময়ে অভিভূত হয়ে এবং নতুন কোন কিছু উপলব্ধি করার আনন্দ নিয়ে বুঝতে শুরু করলাম যে মানুষ, মহাকাশ, জীবন, মস্তিষ্ক এই বিশেষ চারটি বিষয় সবচেয়ে কৌতুহল উদ্দীপক (কোন কিছুর সবচেয়ে..টাকে ধারণ করার প্রবণতা সম্ভবত আমার মধ্যে ইনহেরেন্ট)। আমি অনেক ভাবনা চিন্তা করেও এর কোনটিকেই মাথা থেকে সরাতে পারছিলাম না। এবং এক সময় বুঝতে পারলাম আমি এই উপলব্ধির সাথে অভ্যস্ত হতে শুরু করেছি এবং একটি অবর্ণনীয় আনন্দের সাথেও পরিচিত হতে শুরু করেছি। যারা এ ধরণের উপলব্ধির মধ্য দিয়ে গেছেন তারা হয়ত এর আনন্দটুকুকে এখনো মনে করতে পারবেন।

এছাড়া আরও আগে যখন থেকে আমার স্মৃতি গঠিত হতে শুরু করেছে বলে এখন মনে করতে পারি সে সময় থেকেই আমি আমার মস্তিষ্কের কার্যকরণকে চিহ্নিত করতে পারি। দেখলাম যে, কেন কিছু করছি বা কিভাবে মস্তিষ্ক কাজ করছে এই বিষয়টিকে সহজেই অনেকখানি বুঝতে পারি অনেকখানি পারি না। যেখানে আমার সমবয়সীরা এ বিষয় নিয়ে মাথাই ঘামাচ্ছে না সেখানে আমার মূল আগ্রহের জায়গা হয়ে উঠছে এই উপলব্ধি বিশ্লেষণ। আমি এটা অধিকাংশের সাথে শেয়ারও করতে পারছি না বা শেয়ারের লোক পাচ্ছি না। অনেকটা বেকনের তৃতীয় ব্যাক্তির মত, ঘটমানতা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নিজের ক্রিয়াশীল বাস্তব এবং সেটাকে নিয়ে চিন্তাশীল আরেকজন আমিকে পর্যবেণরত তৃতীয় আমি।

নিজেকে আমার সবসময়ই অন্যদের চাইতে নির্বোধ বলেই মনে হয়েছে। আমার যে বিষয়ে আগ্রহ সেটাতে অন্যদের আগ্রহ নেই বললেই চলে। অথবা আমি যেই নির্বোধ প্রক্রিয়ায় কোন জানা বিষয়কেও একটি নতুন ফর্মেশন দিতে পারি সেটি অধিকাংশের সাথেই দেখি মেলে না। একেবারে ছোটবেলা থেকেই পাঠ করার অভ্যাসের কারণে এবং প্রবণতাগতভাবেই ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিকে বুঝতে পারার(আসলে বোধহয় নির্বোধ হওয়ায় কিছুই বুঝতে না পারার কারণে) মানুষ আমার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। তবে নিখাদ যোগাযোগের প্রয়োজনে আমাকে বারবার অন্যের উপযোগী মিমিক করতে হয়েছে বলে আমার আপে হয়।

তো এই অনুসন্ধানের (বা নিজের আগ্রহ মেটাবার) তাগিদেই আমি সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের কাছে ছুটে গেছি এবং উপলব্ধি করেছি যে প্রতিটি মানুষ সব ধরণের শ্রেণী করণের উর্দ্ধেই এক একটি মহাবিশ্ব ধারণ করে। যেমন ব্লগকে যদি একগুচ্ছো মানব সমষ্টি ধরে নেয়া হয় তাহলে এখানে বৈচিত্রের যে সৃষ্টিশীলতা পাওয়া যাবে তা অতুলনীয়। সামষ্টিক যোগাযোগের প্রয়োজনে অথবা আত্ম প্রকাশের তাগিদে এবং একইসাথে আত্ম উপলব্ধির জন্য আমরা কি না করছি। একে অপরের সাথে যোগাযোগ করা তাই আমার কাছে মানুষের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রবণতা বলেই মনে হয়। এখানে সবচেয়ে পরিচিত ও সবচেয়ে অপিরিচিত নবীন সত্তা উভয়ই আসলে এক একটি মহাবিশ্ব ধারণ করে।

অনেকেই শেয়ার করেন অনেকে করেন না। অনেকে কেবল আনন্দ নেয় অনেকে পাঠ করে। অনেকে এর সবগুলো এবং অসীম সংখ্যক ক্রিয়া ঘটাতে থাকেন। আর তাই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হল এই প্ল্যাটফর্মটা। যেমন যখন বিতর্কের হিংস্রতায় প্রাণ অতিষ্ট তখন ভারসাম্য এবং আগ্রহ ধ'রে রাখার জন্য আমাদের মধ্যেই কেউ কেউ ভারসাম্যের চেষ্টা করেন।

এবং মজার ব্যাপার হল সবসময় সচেতনভাবে করেন না। আমার মনে হয় যে প্লাটফর্ম যত বেশি তীব্র ও অগ্রসর বৈচিত্রকে স্থান দিতে সম সেই প্লাটফর্ম ততবেশি সৃষ্টিশীল। যেহেতু সময় খুবই অল্প, আমাদের মনে হয় নিজ নিজ মহাবিশ্ব ও অন্যান্য মহাবিশ্বকে বোঝার চেষ্টা করাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.