আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমজনতার রোজনামচা

shohoj shorol vabe shob kichu vabi /jotil vabe vabte parina / ১৬/০১/১৩ একদিন বাসায় একটা মেয়ে এল কাজ করবে বলে । এত সুন্দর মেয়ে যে চোখ সরছিল না । আবার মেয়েটার কাপড় চোপড় ও যথেষ্ট ভাল। এরকম একটা মেয়ে কাজ করতে এলে কেন নিজের ও লজ্জা লাগে বুঝলাম না । নাকি ওর মত মেয়ের বাসায় কাজ করা উচিত না এই বোধ এর কারনে এরকম খারাপ লাগে অথবা হয়তো আমাদের এরকম অসহায় অবস্থা যে আমরা আসলে এদের জন্য কিছু করতে পারছিনা ।

কিন্তু ভাবছিলাম আসলে পৃথিবীর অন্য কোন উন্নত দেশে জন্ম হলে মেয়েটার জীবনটা হয়তো অন্যরকম হতো । এখানে মেয়েটা কদিন আর সুন্দরী থাকবে ! জীবনের কষ্টে কষ্টে এর সৌন্দর্য হারিয়ে যাবে । হয়তো কোন রিকসাওয়ালা অথবা দিনমজুর এর সাথে বিয়ে হবে এরপর ছেলেমেয়ে হবে অনেকগুলো আর দরিদ্র হওয়ার কারনে স্বাভাবিক ভাবে জীবনের সকল কষ্ট বরণ করে জীবনীশক্তি নিঃশেষ হবে অল্প কিছুদিন পরেই । আমার কাছে মাঝে মাঝে মনে হয় আসলে মানুষের জন্মটাই ভাগ্য । যেমন বস্তিতে জন্মগ্রহণ করলে তার বাকী জীবন শুধু বয়ে যাওয়া ।

অল্প কিছু সৌভাগ্যবান আছে যারা জীবনকে জয় করতে পারে। দারিদ্রকে জয় করতে পারে । নইলে পঙ্কে পঙ্কে জীবনটা কেটে জীবনী শক্তি নিঃশেষ হয়ে যায় । তবু মানুষ বেঁচে থাকে । এর মধ্যেই হাসি- কান্না- দুঃখ- কষ্ট-আনন্দ ।

সব , সব কিছু । আমার অফিসের পিয়ন একটা ছেলে আছে । ওকে ঠকিয়ে একজন তার অনেক টাকা নিয়ে গেল । কিন্তু ভয়ে সে তার বিরুদ্ধে কিছু করতেও পারছে না । বললাম আশু এত ভয় পাও কেন ? মরলে মরবা আর কি ।

ও উত্তর করলো যে “ আরো একটু বাঁচার ইচ্ছে আছে আমার । ঐ সময় আমি হাসতে হাসতে শেষ হয়েছি ওর কথা শুনে । ও খুব গরীব । তাই বলে জীবনকে কি ভালবাসে না ? আসলেই জীবনে বেঁচে থাকার আনন্দই আলাদা । বেঁচে থাকুক সকলে বাঁচার আনন্দটুকু নিয়ে ।

০৮/০১/১৩ কিছুদিন আগে তসলিমা নাসরিনের একটা লেখা পড়লাম । অনেক কথাই বলা ছিল সেখানে । হুমায়ূন আহমেদ ধনী এবং পুরুষ লেখক বলে বেশী গুরুত্ব পেয়েছেন তার চিকিৎসার জন্যে । তার মা সাধারণ নারী বলে তিনি গুরুত্ব পাননি । তিনি ভুগেছেন , কষ্ট পেয়েছেন ইত্যাদি ।

তার এই ক্ষুদ্রতার উত্তর আর কি দেয়া যায় । আবার লিখেছেন হুমায়ূন আহমেদ এর লেখা আমাদের আই বাংলায় জনপ্রিয় কেননা আমরা তাবৎ জনগণ কম শিক্ষিত । আর পাশের দেশ ভারতের জনগণ বাংলাদেশের মানুষের চাইতে শিক্ষিত , পড়াশোনা জানা । তাই ওখানে তিনি জনপ্রিয় নন । সমরেশ মজুমদার , সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় অনেক চেষ্টা করেও তাকে জনপ্রিয় করতে পারেন নি ।

খারাপ লাগলো তসলিমার এই লেখা পড়ে । অথচ সেও এই দেশেরই মেয়ে । বাংলাদেশের মেয়ে হয়েও বাংলাদেশের মানুষকে যেমন ছোট করলেন লেখককেও ছোট করলেন । হুমায়ূন আহমেদের লেখা যে কত পড়েছি। নেশার মত লাগে তার লেখা ।

কেউ যদি পড়তে বসে তবে কিছুতেই শেষ না করে উঠতে পারবে না । ওনার লেখা মধ্যাহ্ন , লীলাবতী যখন পড়ছিলাম আমার মনে হচ্ছিল আমি একটা ঘোরের জগতে বাস করছি । হিমু আর মিসির আলীর চরিত্র হুমায়ূন আহমেদই পারেন সৃষ্টি করতে । ইতিহাস আমার খুব পড়তে ইচ্ছে করে না । কিন্তু বাদশাহ নামদার পড়ে তো কেমন যেন সম্মোহিতের মত অবস্থা হল আমার ।

এত সুন্দর করে একজনের চরিত্রকে জীবন্ত করা যায় এটা হুমায়ূন আহমেদ এর বই না পড়লে কেউ বুঝতে পারবে না । যারা পড়েনি তাদের দুর্ভাগ্য । সেটা তাদের শিক্ষার অহংকার না । অহমিকা । facebook এ আমার ফ্রেন্ড লিস্টএ বেশ কয়েক জন ভারতীয় বাঙ্গালী কবি , লেখক আছেন ।

তাদের কয়েক জনকে জিজ্ঞেস করেছি হুমায়ূন আহমেদ এর বই ওনারা পড়েন কিনা । ওনারা উত্তর করলেন ওখানে হুমায়ূন চর্চা কম হয় । আবার বলছেন হিমুর মত অবাস্তব চরিত্র তিনি তৈরী করছেন স্রেফ জনপ্রিয় হবার ইচ্ছেয় । এরপর এমন রাগ হল । ভাবলাম আর পড়বো না তাদের লেখা ।

কিন্তু আসলে না পড়াটাই খুদ্রতা । সাহিত্য তো সার্বজনীন । সাহিত্য আর শিল্প দেশ , জাতি কাল এর সীমানা মানে না । সাহিত্য আর শিল্পের আবেদন দেশ ,জাতি , কাল এর সীমানা অতিক্রম করে তা পৌঁছে যায় সকল মানুষের হৃদয়ে । এটাই তো নিয়ম ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।