আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমজনতার হুঙ্কার - ১

........................... 'রাজাকার' নামের একটা বিচিত্র গোষ্ঠী আমাদের এই বাংলাদেশে এখনো বর্তমান, তাদের মুক্তিযুদ্ধের সময়কার কর্মকান্ডই শুধু নয়, বরং যুদ্ধ পরবর্তিতে তাদের অবস্থান এবং কর্মকান্ড-ও যথেষ্ট আশ্চর্যজনক। সবার চোখের সামনে যারা একটা দেশের লাখ-লাখ লোক কে হত্যা করেছে এবং হত্যার জন্য পাক-বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছে, তাদের প্রতি স্বাধীন বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি কিভাবে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেন, তা আমার বোধগম্য নয়। বঙ্গবন্ধু মহান নেতা ছিলেন সন্দেহ নেই, কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে প্রতিনিয়ত তিনি তাঁর মহত্ত্ব হারিয়ে ফেলছিলেন; অন্ততঃ তাঁর কর্মকান্ড তাই প্রমাণ করে। লাখ- লাখ মানুষের হত্যাকারীদের ক্ষমা করে দেয়া কখনই মহত্ত্বের লক্ষণ হতে পারে না, এটা শুধুমাত্র কাপুরুষতার লক্ষণ। আমি মনে করি বঙ্গবন্ধুর এই কাপুরুষতার কারনেই সেই খুনি, পিশাচের দল পরবর্তী তে মূলতঃ জামায়াতে ইসলামী কে আশ্রয় করে দেশের রাজনীতির মূলধারায় প্রবেশ করে।

অনেক মহা বুদ্ধিজীবি আর আওয়ামী ইতর গোষ্ঠী বলে সে সময়কার আন্তর্জাতীক চাপের কথা, শুনতে হাস্যকর লাগে। যেই আন্তর্জাতিক চাপ আমার ৩০ লক্ষ ভাইয়ের মৃত্যু ঠেকাতে পারেনি, আমার ২ লক্ষ মা বোনের ইজ্জত বাঁচাতে পারেনি, যেই আন্তর্জাতিক চাপ এখন পর্যন্ত পাকিস্তান কে অফিসিয়ালি বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চাওয়াতে পারেনি, সেই আন্তর্জাতিক চাপ নাকি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি (!) কে বাধ্য করেছিল কিছু আত্মস্বীকৃত খুনি কে ক্ষমা করে দিতে! এটা আমার কাছে রূপকথার গল্পের মত মনে হয়। সেই রাজাকার বাহিনী জামায়াতে ইসলামীর লেবাস গায়ে জড়িয়ে ক্রমে সংগঠিত হয়েছে; এইচ,আই,ভি ভাইরাসের চেয়েও ভয়ঙ্কর ভাইরাস হয়ে তারা আজ আমাদের সমাজ এবং চেতনাকে ধ্বংস করে দিতে বদ্ধপরিকর। কেউ কেউ এভাবে গণহারে পুর জামায়াত কে দায়ি করায় আমার প্রতিবাদ করতে পারেন, কিন্তু তারা কি জবাব দেবেন যখন আমি প্রশ্ন করবো, ওই চিহ্নিত রাজাকার গুলোর বিচার বন্ধ করার জন্যই কেন পুরো জামায়াতে ইসলামী কর্মসুচি ঘোষণা করে?অন্যায়কারী আর তাদের সমর্থন কারী কি সমান ভাবে দোষী নয়? এই জামাত-শিবির-রাজাকারদের বংশধর হিসেবেই ইদানিং দেশে ইদানিং নতুন এক প্রজাতির উদ্ভব ঘটেছে; এরা বিদেশী ডিগ্রীধারী, কথাবার্তায় স্মার্ট, পোষাক-আষাক দেখলে বিলেত ফেরত সাহেবের কথা মনে হয়। এরা জামাত-শিবির-রাজাকারদের সর্বাধুনিক, সুচিন্তিত উদ্ভাবন।

ফেসবুক, সামহয়্যার ইন ব্লগ, ইত্যাদি সামাজিক ওয়েবসাইটে এদের বলিষ্ঠ পদচারণা। এসব সাইটে তাদের কার্যাবলীও দেখার মত। এরা পতিতাদের সাথে সঙ্গম শেষে নারী চরিত্রের অধঃপতন নিয়ে ব্লগ লিখে, ডি,ভি,ডি, তে নায়িকার অশ্লীল নাচ দেখে বাথরুমে যায়, সেখানের কাজ শেষ করে এসে বোরকার প্রয়োজনীয়তার কথা নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়। পাশাপাশি দুইটা ছবি আপলোড করে, একটি বোরকাওয়ালি রমণীর, আরেকটি অর্ধনগ্ন বাংলাদেশী নায়িকার। এরা রাস্তায় সাধারণ মানুষের পায়ের রগ কেটে এসে ফেসবুকে ইসলামীক পেজ খোলে, ইসলাম কেন শান্তির ধর্ম তা কোরআন-হাদীসের আলোকে ব্যাখ্যা করে।

এদের চরিত্রের সাথে আল-কোরআনে বর্ণিত ‘মুনাফিক’ চরিত্রের আশ্চর্য মিল! আর আল-কোরআনেই উল্লেখ করা হয়েছে, ‘মুনাফিকদের স্থান জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তরে’। আজকে আমাদের কাজ হল শুধু এদের ধরে ধরে মেরে ফেলা, যাতে তাদের উক্ত স্থানে যাবার রাস্তা সুগম হয়। এই বিজয় দিবসের অঙ্গীকার হোক এটাই। সকল রাজনৈতিক চেতনার উর্ধ্বে উঠে আমার মত আমজনতা দের এগিয়ে আসতে হবে এই শয়তান দের বিরুদ্ধে। কোন রাজনৈতিক দলের উপর নির্ভর করে থাকলে অবধারিতভাবেই এদের বিচার আমরা করতে পারব না।

আওয়ামী লীগ এইসব পিশাচদের বিচার এবার করবে বলে মনে হয় না, কারণ এটা তাদের শেষ রাজনৈতিক অস্ত্র। বিচার হয়ে গেলে তো বন্দুকের গুলি শেষ হয়ে যাবে, জনগণকে তখন তারা ঘায়েল করবে কি দিয়ে? বি,এন,পি, কে নিয়ে আমি পুরোপুরি হতাশ। বর্তমান প্রেক্ষাপটে যেখানে প্রতিনিয়ত দলটির জনপ্রিয়তা বাড়ছে (এমন মনে করার কারণ নেই যে তারা ভাল কাজ করছে, বরং আওয়ামী লীগের একটার পর একটা জঘন্য কাজই হাজার খারাপ দিক সত্বেও মানুষ কে বি,এন,পির দিকে আকৃষ্ট করছে। ), আমি ভেবেছিলাম জামাতের সঙ্গ ছাড়ার জন্য এটাই সবচেয়ে ভাল সুযোগ, তারা এই সুযোগ টা নেবে। কারণ এই মুহূর্তে দেশে যদি নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়, তাহলে কারো সহায়তা ছাড়াই বি,এন,পির সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবার কথা।

কিন্তু তারা আবারো তাদের ঘৃণ্য মানসিকতার পরিচয় দিল জামাতের হরতালে সমর্থন জানিয়ে। আমি অন্ততঃ বুঝে গেছি যে ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত করা অজস্র দুর্নীতির জন্য তাদের মনে কোন অনুতাপ নেই, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ভোগ করা শাস্তিও তাদের বিকৃত মানসিকতায় কোন পরিবর্তন আনতে পারেনি। আর এরশাদের জাতীয় পার্টির কথা কি বলব! এই এরশাদের কথা মাথায় নিয়েই বোধহয় রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ একজন রাজনীতিকের চেয়ে একজন বেশ্যা কে বিশ্বাস করা শ্রেয় মনে করেছিলেন। (‘বেশ্যাকে তবু বিশ্বাস করা চলে, রাজনীতিকের ধমণী-শিরায় সুবিধাবাদের পাপ’ (হাড়েরও ঘরখানি)) এখন সময় এসেছে আমরা যারা সাধারন মানুষ, তাদের এগিয়ে আসার। টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত আসুন আমরা কঠিন প্রতিরোধ গড়ে তুলি ঐ সব রাজাকার, আল্-বদর, আল-শামস দের বিরুদ্ধে, তাদের চেতনার ধারক-বাহকদের বিরুদ্ধে এবং তাদের সর্বশেষ সংস্করণ ওইসব মুনাফিকদের বিরুদ্ধে।

একটা একটা করে ধরে এনে এদেরকে ছুরি দিয়ে খুঁচিয়ে-খুঁচিয়ে, দা দিয়ে কুপিয়ে-কুপিয়ে, পা দিয়ে পিষে-পিষে, পাথর ছুঁড়ে মাথা, হাত, পা, চোখ, নাক, মুখ থেঁতলে, গুলি করে ঝাঁঝরা করে দিয়ে তাদের হত্যা করতে হবে। আমরা বঙ্গবন্ধুর মত মহান (!) নই যে ওইসব খুনি, ধর্ষণকারী, মুনাফিকদের ক্ষমা করে দেব। আজ ওই ভাইরাসদের ছেড়ে দিলে কাল ওরা আপনার ভাইয়ের রগ কাটবে, আপনার বোন কে ধর্ষণ করবে, আপনার পিতা-মাতা কে হত্যা করবে। এখুনি সময়, দেশ-মাতৃকার বুকে মাথা ছুঁইয়ে শপথ নেবার। আসুন আমরা একসঙ্গে উচ্চারণ করি, ‘বুভূক্ষ বাঙ্গালী জেগেছে জননী তোমার আর ভয় কিসে? সহস্র একাত্তর দিয়ে হলেও তোমার মানচিত্রে শেয়ালের চিহ্ন মুছে দেব- কথা দিলাম’।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।