ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের কবলে পড়েছে দেশ। বিদ্যুৎ খাতে সরকারের সব সাফল্যকে গিলে খাচ্ছে। গত তিন মাসে গ্রীষ্ম মৌসুমেও লোডশেডিং ছিল অনেকটাই সীমিত। কিন্তু হঠাৎ করে বিদ্যুৎ উৎপাদন দুই হাজার মেগাওয়াটেরও বেশি কমে যাওয়ায় নিয়ন্ত্রণহীন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সামনেই বোরো মৌসুম। বোরো মৌসুমের সারের জন্য ইউরিয়া কারখানায় জরুরি ভিত্তিতে গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাস সরবরাহ হ্রাস পেয়েছে। গ্যাসভিত্তিক বেশ কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রাখতে হচ্ছে। 'মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা' হিসেবে দেখা দিয়েছে সিলেটের কৈলাশটিলায় গ্যাস উৎপাদন সাময়িকভাবে বন্ধ থাকার ঘটনা। গ্যাসকূপের উন্নয়ন কাজের জন্য উৎপাদন বন্ধ থাকায় সংকট নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে। আরও কিছু দিন চলবে এ সংকটজনক অবস্থা। ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি শুরু হচ্ছে আগামীকাল থেকে। পরীক্ষামূলক সঞ্চালনের সময় শুরুতে ৪০ থেকে ৫০ মেগাওয়াটের মতো বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। পুরো ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পেতে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। স্মর্তব্য, ১২ জুলাই রেকর্ড পরিমাণ অর্থাৎ ছয় হাজার ৬৭৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হলেও বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ সাড়ে চার হাজার মেগাওয়াট। পিকআওয়ারে বিদ্যুতের চাহিদা থাকে সাত হাজার মেগাওয়াটের মতো। এ সময়ে সর্বোচ্চ উৎপাদন থাকে পাঁচ হাজার মেগাওয়াট। পিকআওয়ারে বিদ্যুৎ ঘাটতি ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। বর্তমান সরকার বিদ্যুৎ ঘাটতি মোকাবিলায় একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করলেও তেলভিত্তিক কেন্দ্রগুলো বন্ধ রাখার ফলে চাহিদা পূরণে হিমশিম খেতে হচ্ছে। গ্যাসের অভাবেও বেশ কিছু গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ। রাজধানীতে বিদ্যুতের অবস্থা দাঁড়িয়েছে এই আছি এই নেইয়ের মতো। কোথাও পাঁচ-সাতবার, কোথাও তার চেয়েও বেশিবার লোডশেডিং হচ্ছে। গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ না থাকাটাই নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। আজকের যুগে বিদ্যুৎ সংকট মানেই হলো জাতীয় জীবনের সর্বক্ষেত্রে সংকট সৃষ্টি হওয়া। উৎপাদন অব্যাহত রাখার পাশাপাশি জনজীবনে স্বস্তি আনে যে বিদ্যুৎ তার উৎপাদন ও বিতরণে সরকারকে আরও যত্নবান হতে হবে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতার স্বার্থেই।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।