আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভোলায় ডাকাতিতে ডিজিটাল পদ্ধতি

ভোলার মেঘনা-তেঁতুলিয়ার সাগর মোহনায় সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে জলদস্যুরা। তারা ডিজিটাল সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে মোবাইল ফোনে দাবি করছে চাঁদা। দাবিকৃত টাকা না পাঠালেই জেলেদের ওপর হামলা, মারধর, এমনকি অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে মুক্তিপণের টাকা আদায় করে ছেড়ে দেওয়া হয় তাদের। উপকূলীয় বিভিন্ন ঘাটে জেলে ও মাছ ব্যবসায়ীরা জানান, জানুয়ারি ফেব্রুয়ারি দুই মাসে প্রায় দেড় শতাধিক জেলেকে অপহরণ করে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অন্তত কোটি টাকার মুক্তিপণ আদায় করেছে।

জানা যায়, সম্প্রতি উপকূলীয় মহেষখালী, স্লুইসগেট, চৌমোহনী, হুজুরের খাল, হানিফ মাঝির খাল, কাটাখালী মাছঘাট থেকে প্রায় ৯০টি নৌকায় হামলা করে ৯০ জন জেলেকে অপহরণ করেছে দস্যু রুবেল বাহিনী। এসব জেলেকে ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়িয়ে আনতে হয়েছে। একদিকে আইনি জটিলতা অন্যদিকে জলদস্যুদের ভয়_ এ দুই কারণে জলদস্যুদের দেওয়া বিকাশ নম্বরে মুক্তিপণের টাকা দিয়ে জেলেদের ছাড়িয়ে আনতে বাধ্য হচ্ছে তাদের পরিবার। চরফ্যাশনের কুকরি-মুকরি ইউনিয়নের চরমনুরা মাছঘাটের জেলেরা জানান, নৌকার মালিক ও আড়তদারদের ফোন করে মোবাইল ব্যাংকে টাকা পাঠাতে বলছে। গত প্রায় দুই মাসে দস্যুদল ঘাটের ১০টি নৌকায় হামলা করেছে। ঢালচরের মৎস্য ব্যবসায়ী ও জেলেরা জানান, ১ মার্চ থেকে মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে। কোস্টগার্ড ব্যস্ত থাকছে জাল আর জাটকা ধরার কাজে। জেলেদের নিরাপত্তায় তারা কাজে আসছে না। পুলিশ অভিযান চালালেও তা আরও বাড়ানো উচিত। ওই ঘাটের জেলে ইউসুফ মাঝির ভাষ্য, গত এক মাসে তাদের ঘাটের তিনটি নৌকায় ডাকাতি হয়েছে। কিছুদিন আগে হেলাল মাঝিকে দস্যুদের কবল থেকে ২৫ হাজার টাকার বিনিময়ে ছাড়িয়ে আনা হয়েছে। জেলেরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মোবাইল ব্যাংকিং শুরু হওয়ার পর অপহরণ বেড়েছে। ভোলার প্রতিটি মাছঘাটে জেলে ও আড়তদার দস্যুদের হাত থেকে বাঁচতে মোবাইল ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাঠাচ্ছেন। প্রতিটি ঘাটে দস্যুদের এজেন্ট রয়েছে। তারা ক্ষমতার চাদর গায়ে দিয়ে ঘুরে বেড়ায়। এসব এজেন্টরাই নৌকা ছাড়িয়ে দিচ্ছে। কিন্তু ভয়ে মুখ খুলতে পারছেন না জেলেরা। জেলেরা জানান, ভোলার চর জহিরুদ্দিন, মনপুরা ঢালচর, হাতিয়া-রামগতির চরে জলদস্যু রুবেল বাহিনী, স্বপন বাহিনী, কামাল বাহিনী, বেলাল বাহিনীর দৌরাত্দ্য বেড়ে চলেছে। সাগর মোহনার থানা দক্ষিণ আইচার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, জলদস্যুদের তৎপরতা কিছুটা কমেছে। দু-চার দিনের মধ্যে কোথাও দস্যুদের হামলার খবর পাওয়া যায়নি।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.