দলকে আন্দোলনমুখী করতে চলতি মাসের মধ্যেই মাঠপর্যায়ের সাংগঠনিক কোন্দল মেটাতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
একই সঙ্গে চলতি মাসের মধ্যে মাঠপর্যায়ের সাংগঠনিক চিত্র তার হাতে জমা দিতে দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ৭৫টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে ৩০টির রিপোর্ট কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে বাকি জেলাগুলোর সাংগঠনিক রিপোর্ট জমা পড়বে বলে আশা প্রকাশ করেছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। দলীয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দেশের প্রায় অধিকাংশ জেলার সাংগঠনিক অবস্থা নানা সমস্যায় জর্জরিত। এর মধ্যে বেশির ভাগ জেলায় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে দ্বন্দ্ব রয়েছে।
আবার অঙ্গসংগঠনের নেতাদের সঙ্গেও তৃণমূল বিএনপির অনেক দূরত্ব রয়েছে বেশ কয়েকটি জেলায়। কেন্দ্র-ঘোষিত কমিটি ছাড়াও রয়েছে একাধিক কমিটি। দলীয় কোন্দল রয়েছে বরিশাল বিভাগের প্রায় সব জেলায়। রংপুর, রাজশাহী, সিলেট ও ঢাকা বিভাগের কয়েকটি জেলায় রয়েছে কম-বেশি কোন্দল। তবে খুলনা বিভাগে তুলনামূলকভাবে কোন্দল কম।
সাংগঠনিক রিপোর্টে এসব সমস্যা তুলে ধরার পাশাপাশি সমাধানের উপায় উল্লেখ করা হয়েছে। বিশেষ করে সংশ্লিষ্ট জেলায় দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতাদের সুপারিশকে বিবেচনা করা হচ্ছে গুরুত্বের সঙ্গে। গত মাসের শেষ ১০ দিন কেন্দ্রীয় নেতারা ৭৫টি জেলা সফর করে তৈরি করেছেন একটি সাংগঠনিক রিপোর্ট। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যান, যুগ্ম-মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদকসহ উচ্চ পর্যায়ের নেতারা সফরের নেতৃত্ব দেন। ইতিমধ্যে ৩০টির মতো সাংগঠনিক রিপোর্ট দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের হাতে জমা দেওয়া হয়েছে।
চলতি মাসের মধ্যেই তুলে ধরা হবে বাকি জেলাগুলোর সাংগঠনিক রিপোর্ট।
জানা যায়, ২৪ অক্টোবরের পর সর্বাত্দক আন্দোলনে যাবে বিএনপি। অক্টোবরের শেষের দিকে কিংবা নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে টানা তিন দিন সড়ক, নৌ ও রেলপথ অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা আসতে পারে দলটির পক্ষ থেকে। লাগাতার হরতালসহ বিভিন্ন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ঘেরাও কর্মসূচি নিয়েও আলোচনা চলছে দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে। ঢাকা থেকে জেলা পর্যায়ের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করতে অন্তত ৪০টি স্পট নির্ধারণ করা হচ্ছে।
প্রতিটি জেলার মহাসড়কগুলোয় বিএনপি ও ১৮-দলীয় জোটের নেতা-কর্মীদের অবস্থান নেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এ ছাড়া তৈরি করা হচ্ছে সব নৌরুট ও রেলপথে পাহারা বসানোর ছক। এসব কারণেই সংগঠনকে শেষবারের মতো ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী করার প্রয়াস চালানোর উদ্যোগ নিয়েছেন বেগম জিয়া।
রংপুর বিভাগে সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ইতিমধ্যে তিনি সাংগঠনিক সফরের ওপর একটি পর্যবেক্ষণ জানিয়ে দিয়েছেন সংশ্লিষ্টদের। তার মতে, রংপুরে ছোটখাটো কোন্দল থাকলেও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জনসভার পর পুরো বিভাগ ঐক্যবদ্ধ।
সরকারবিরোধী আন্দোলনের জন্য রংপুর বিভাগের নেতা-কর্মী ছাড়াও সর্বস্তরের মানুষ প্রস্তুত। স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, 'দলের তৃণমূল পর্যায়ে একেবারেই যে ঝামেলা নেই তা বলা যাবে না। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আবার এক ধরনের নতুন ঝামেলার সৃষ্টি হয়েছে। দলীয় মনোনয়ন পেতে অনেকেই বায়োডাটা নিয়ে এখানে-সেখানে যাতায়াত করছেন। সরকারবিরোধী আন্দোলনে এসব ঝামেলা কোনো প্রভাব ফেলবে না।
কারণ যারা আন্দোলন করেন, তারা পদ-পদবির আশায় বসে থাকেন না। ' দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী জানান, ইতিমধ্যে ৩০টির মতো জেলার সাংগঠনিক রিপোর্ট জমা পড়েছে। তিনি তা দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে হস্তান্তর করেছেন। চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে আলোচনা করে কোন জেলায় কী সমস্যা তা দূর করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।