আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শিক্ষার্থীরা খেলে, শিক্ষক ঘুমান

শিক্ষার্থীরা কেউ খেলছে, কেউ শিক্ষকের অপেক্ষায় ক্লাসে বসে আছে। স্কুলে চার শিক্ষকের মধ্যে আছেন একজন শিক্ষক। তিনি অফিস কক্ষ আটকে ঘুমাচ্ছেন। এভাবেই কেটে যাচ্ছে স্কুলের পুরো সময়। অবশেষে শিক্ষার্থীরা পাঠগ্রহণ না করেই বাড়ি ফিরল।

এই ঘটনা একদিনের নয়, প্রায় প্রতিদিনের।

আজ শনিবার সরেজমিন মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার তেঁতুলবাড়িয়া ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী ‘রামদেবপুর, মথুরাপুর, ইসলামপুর (আরএমআই) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে’ গিয়ে পাওয়া গেল এমনই চিত্র।

মেহেরপুর শহর থেকে প্রায় ৩৩ কিলোমিটার দূরের ওই স্কুলটি (আরএমআই) ১৯৯১ সালে স্থাপিত। স্কুলের মোট শিক্ষার্থী ১৫৮জন। স্কুলে প্রধান শিক্ষকসহ চারজন শিক্ষক আছেন।

সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং ১১ থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণীর ক্লাস হওয়ার নিয়ম। কিন্তু সকাল ১০টায় গিয়ে দেখা গেল, শিক্ষার্থীরা কেউ খেলছে, কেউ শিক্ষকের অপেক্ষায় শ্রেণীকক্ষে বসে আছে। সকাল সাড়ে ১১ টা, তখনও একই অবস্থা। শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন করলে সবাই সমস্বরে উত্তর দিল, ‘নাম লিখবেন না, আমরা রক্ত দিব না। ’ জানা গেল- বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) থেকে ঘনঘন শিশুদের রক্ত পরীক্ষা করতে যায়।

তাই শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই আতঙ্ক। কিন্তু এনজিওর নাম জানে না কেউই।

শিক্ষার্থী শীলা খাতুন জানায়, বেশির ভাগ দিনই এভাবে খেলে তারা বাড়ি ফেরে। আরেক শিক্ষার্থী সুমাইয়া খাতুন জানায়, সকাল সাড়ে ৯ থেকে সে বসে আছে, কোনো ক্লাস হয়নি। শিক্ষার্থী পূর্ণিমা জানায়, তিন ঘণ্টা বসে, কোনো স্যারের দেখা পাইনি।

রিয়া খাতুন রোল জানায়, কোনোদিন ক্লাস হয়, হয় না। তারপরেও ক্লাস হবে এমন প্রত্যাশায় স্কুলে আসি নিয়মিত।

সাড়ে ১১টার পর স্কুলের দ্বিতীয় তলার কার্যালয়ে দরজার কড়া নাড়লে ঘুম ভরা চোখ নিয়ে দরজা খোলেন স্কুলে চার শিক্ষকের মধ্যে উপস্থিত একমাত্র শিক্ষক আবুল কাশেম। তিনি জানান, ‘বসে থাকতে গিয়ে ঘুমিয়ে গেছি। তাই ক্লাস নেওয়া হয়নি।

এ সময় সাংবাদিকের উপস্থিতি টের পেয়ে হাজির হন শিক্ষক গোলাম মোস্তফা। তিনি জানান, কাজ ছিল, তাই খাতায় উপস্থিতি স্বাক্ষর দিয়ে তিনি বাড়ি যান। আরেক শিক্ষক জহিরুল ইসলাম স্কুলে কেন অনুপস্থিত তাও কেউ জানে না। স্কুলের প্রধান শিক্ষক মতিয়ার রহমান মুঠোফোনে জানান, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা নিতে শহরে আছি, তাই স্কুলে নেই। তবে, দু’জন স্যারকে রেখে এসেছি।

তাঁদের তো ক্লাস নেওয়ার কথা। কেন ক্লাস নেননি গিয়ে দেখব।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.