আমি সুমাইয়া বরকতউল্লাহ। ছাত্রী। লেখালেখি করা আমার ভীষণ পছন্দ। আমি ছড়া, গল্প লিখি। পত্রিকায় নিয়মিত লিখি।
লেখালেখি করে বেশ কয়েকটা পুরস্কারও পেয়েছি। শিশু অধিকার রক্ষায় বিশেষ অবদান রাখার স্বীকৃতি স্বরূপ (প্রিণ্ট মিডিয়া) পর পর ৩ বার জাতিসংঘ-ইউন
"কইন্যা হইয়া জন্ম নিছ, এত বাহানা কইর না, যেইডা দেই হেইডা খাও-যেইডা কই হেইডা হোনো" এমন কত কথা যে শুনতে পাওয়া যায় গ্রামে গেলে। দেখে মনে হয় পিতা-মাতারা তাদের মেয়েকে পরের বাড়িতে গিয়ে কাজ করে খাওয়ার জন্য আর বাড়ির সকলের মন জুগিয়ে চলার জন্য তৈরি করে।
ছেলেশিশুর বেলায় তেমনটি হয় না। কারণ ছেলেরা থাকবে বাড়িতে।
সে বাড়ি-ঘর দেখবে। সম্পদ আর পিতা-মাতাকে রক্ষা করবে। ছেলেশিশুটি হবে বংশের বাতি। তাই তার এত যত্ন। অনেক পিতা-মাতার ভেতরেই এমন একটা চিন্তা কাজ করে।
জাতীয় ছেলেশিশু দিবস নেই তবে আজ জাতীয় কন্যাশিশু দিবস। স্কুলে এই নিয়ে অনুষ্ঠান হলো। রেলি হলো। আলোচনা হলো। কন্যাশিশুর নানান সমস্যা আর অধিকার নিয়ে বিতর্ক অনুষ্ঠান হলো।
বিতর্কে জয়লাভ করার জন্য অনেক কিছু জানতে হলো আমাদের। অনুষ্ঠানে কন্যাশিশুর বাস্তব অবস্থা নিয়ে তর্কের ঝড় তুলেছি আমরা। বেশ ব্যস্ততার মাঝে পার করে দিলাম দিনটি। মনে হলো আমরা অনেক কিছু করে ফেলেছি।
এতকিছু করে বাসায় আসার পর টেলিভিশনের পর্দায় আদুরি নামের ছোট্ট মেয়েটিকে দেখে মনটা খুব খারাপ হয়ে গেল।
পিতা-মাতা কত আদর করে তার নাম রেখেছিল আদুরি। আর সেই আদুরির কপালে আদরের এই ছিরি!
শিশু অধিকার রক্ষায় সরকার অনেক সুন্দর আইন করেছে। কেউ শিশুর ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে কিছু করাতে পারবে না। শিশুর থাকা-খাওয়া, নিরাপত্তা ও আদর-যত্ন এবং লেখাপড়ার সুযোগ দিতে হবে। অবহেলা করা বা কষ্ট দেওয়া যাবে না, অসম্মান করা যাবে না।
বড় হয়ে ওঠার জন্য তাকে সুযোগ করে দিতে হবে। তার ওপর অন্যায়ভাবে বা জোর করে কিছু করা হলে জেল-জরিমার ব্যবস্থা আছে।
শিশুদের অধিকার রক্ষার জন্য প্রতি থানায় শিশু ডেস্ক আছে। কেউ বিপদে পড়লে এক দেৌড়ে থানায় গিয়ে বিচার চাইতে পারবে। আর আইনের আশ্রয় নিতে পারবে।
এত কিছুর পরেও কি শিশুদের ওপর বড়দের অত্যাচার বন্ধ হয়ে যাবে? না। এর জন্য সবচেয়ে বেশি দরকার বড়দের সচেতনতার। কারণ সব শিশুরাই থাকে সব বড়দের আশ্রয়ে। বড়দের কথায় চলতে হয় শিশুদের। তাই বড়রা যতদিন সচেতন না হবেন ততদিন শিশুরা শান্তি পাবে না।
শিশুরাই জাতির ভবিষ্যৎ। আর বড়রা শিশুদের সাথে যেই রকম আচরণ করবে, শিশুদের যে রকম করে তৈরি করবে, দেশের ভবিষ্যৎ ঠিক সেই রকমই হবে।
আসুন আমরা শিশু অধিকার রক্ষায় কাজ করি। আসুন কন্যাশিশু আর ছেলেশিশুকে আলাদা ভাবে না দেখে শিশু হিসেবে দেখি।
দেশটাকে সুন্দর করে গড়ে তুলতে হলে, প্রত্যেকটা শিশুকে সুন্দরভাবে বেড়ে ওঠার সুযোগ করে দিতে হবে।
প্রতিটি শিশু কোনো না কোনোভাবে বড়দের ওপর নির্ভরশীল। তাই শিশু অধিকার রক্ষার দায়িত্ব পুরোটাই বড়দের।
বড়রা একদিন শিশু ছিলেন। তাঁরা খুব ভালো করেই জানেন শিশুদের জন্য বড়দের কী কী করতে হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।