আসুন আমরা ২টি ভারী বস্তু আল্লাহর কুরান ও রাসুলের(সাঃ) পরিবারকে(আঃ) অনুসরন করি।
জাবের (রা) বর্ণনা করেছেন, এক সময় রাছুলুল্লাহ (সা) এক দল সৈন্যকে কোরায়েশদের এক দল বণিকের পশ্চাদ্ভাবন করার জন্য সমুদ্র তীরবর্তী রাস্তায় পাঠালেন এবং আবু ওবায়দাকে (রা) আমীর বা প্রধান কর্তারূপে নিযুক্ত করে দিলেন। সৈন্য দলের সংখ্যা তিন শত ছিল এবং আমিও তাহাদের মধ্যে একজন ছিলাম। পথিমধ্যেই আমাদের খাদ্য ঘাটতি দেখা দিল। তখন আমাদের আমীর আবু ওবায়দা (রা) আদেশ করলেন, প্রত্যেকের নিকট যা কিছু খাদ্য বস্তু আছে সব একত্র করা হোক।
তাই করা হল এবং দুই বস্তা খেজুর মওজুদ হল। অতঃপর তিনি স্বয়ং প্রতিদিন অল্প অল্প করে খাদ্য আমাদিগকে বন্টন করে দিতে লাগলেন। এতদ্সত্ত্বেও তা প্রায় নিঃশেষ হয়ে আসল, এমনকি আমরা মাথাপিছু মাত্র একটি খুরমা পাচ্ছিলাম। ঘটনা বর্ণনাকারী জাবেরকে (রা) এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করলো, মাত্র একটি খুরমায় একটি লোকের কি হ’ত? জাবের (রা) বললেন, যখন ঐ একটি হ’তেও বঞ্চিত থাকতে হ’ল তখন ঐ একটিরই মূল্য বোধ হ’ল। ইতিমধ্যেই আমরা সমুদ্রের নিকটে পৌঁছে সমুদ্র তীরের অদূরে একটি বিরাট বালুচরের ন্যায় দেখলাম।
আমরা উহার নিকট উপস্থিত হয়ে দেখতে পেলাম, উহা একটি বিরাটকায় মৎস; যাহার নাম “আম্বর। ” প্রথমে আমাদের আমীর উহাকে একটি মৃত জীব বলে খেতে ইতস্তত করলেন। অতঃপর তিনি আমাদিগকে বললেন, ইহা খেতে দ্বিধাবোধ করার কারন নেই, যেহেতু আমরা রাছুলুল্লাহ'র (সা) প্রেরিত লোক এবং আল্লাহর রাস্তায় বের হয়েছি। এতদ্ভিন্ন তোমরা সকলেই খাদ্যাভাবে অতিশয় কাতর হয়ে পড়েছো, তাই তোমরা ইহা খেতে পার। সেখানে আমাদের দীর্ঘ এক মাসকাল অবস্থান করতে হ’ল।
আমরা তিন শত সৈনিক দীর্ঘকাল পর্যন্ত ঐ মৎসটিই খেতেছিলাম, এমনকি ঐ মৎস খাওয়ার ফলে আমাদের শরীর মোটা-তাজা হয়ে গেল। আমরা উহার চোখের গর্ত থেকে সূর্য তাপে গলিত তৈল কলস ভরে ভরে উঠাতাম এবং এত এত কলস উঠিয়ে ছিলাম। একদা আমাদের সেনাপতি আমীর আবু ওবায়দা (রা) আমাদের মধ্য থেকে ১৩ জন লোককে ১৩টি কলসসহ উহার চোখের গর্তের মধ্যে নামিয়ে দিলেন। অন্য একদিন তিনি উহার একটি পাঁজরের কাঁটা উঠিয়ে ধরলেন এবং আমাদের মধ্য থেকে সর্বাধিক দীর্ঘকায় ব্যক্তিকে সর্বাধিক উঁচু একটি উটের উপর আরোহণ করিয়ে ঐ কাঁটার তলদেশ দিয়ে যাতায়াত করালেন, তাহাতে কাঁটাটির বাঁক তাহার মাথা স্পর্শ করল না। অতঃপর আমরা তথা হ’তে প্রত্যাবর্তনের প্রস্তুতি করলাম এবং সঙ্গে ঐ মৎস্যের কিছু খন্ড নিলাম।
মদীনায় এসে আমরা রাছুলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহে অসাল্লামের নিকট পূর্ণ ঘটনা বললাম। তিনি বললেন, উহা আল্লাহ তা’আলার পক্ষ থেকে তোমাদের জন্য একটি বিশেষ রিযিক ও খাদ্য সামগ্রী ছিল। তোমাদের নিকট উহার কোন অংশ থাকলে আমাকেও খেতে দাও। আমরা কিছু অংশ তাঁহার জন্য পাঠিয়ে দিলাম, তিনি উহা খেলেন (মাছ যত বড়ই হোক, মরা হলেও উহা হালাল)। [ দ্র: বোখারী; ৩য় খ. ৮ম সংস্করণ, পৃ: ১, শায়খ আজিজুল হক]।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।