ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের বিশ্বজনীন জরিপে বাংলাদেশে শিক্ষা খাতে দুর্নীতি কমার আভাস দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার প্রকাশিত 'বৈশ্বিক দুর্নীতি প্রতিবেদন : শিক্ষা' শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়, শিক্ষা খাতের দুর্নীতিতে বিশ্বে এখন শীর্ষ দেশ ভারত। এ দেশটিতে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে ঘুষ প্রদানের হার ৪৮ শতাংশ। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশে ঘুষ প্রদানের হার ১২ শতাংশ। চলতি বছরের প্রথমদিকে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল 'গ্লোবাল করাপশন ব্যারোমিটার-২০১৩' প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এ প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের ১৪ শতাংশ মানুষ মনে করে শিক্ষাব্যবস্থা দুর্নীতিগ্রস্ত। বৈশ্বিক প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০১২ সালে বিশ্বজুড়ে শিক্ষাসেবা গ্রহণকালে প্রতি পাঁচজনের একজনকে ঘুষ দিতে হয়েছে। গরিবদের জন্য এ হার প্রতি তিনজনে একজন। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে ঘুষ প্রদানের হার ১৭ শতাংশ। শিক্ষাক্ষেত্রে বাংলাদেশে দুর্নীতি কমার যে আভাস দিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল তা একটি আশাজাগানিয়া ঘটনা। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে নেপাল ও মালদ্বীপ ছাড়া অন্য সব দেশে শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতি বাংলাদেশের চেয়ে বেশি। স্বীকার করতেই হবে শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতি কমার পেছনে বর্তমান সরকারের বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়ামক ভূমিকা রেখেছে। পরীক্ষায় নকল বন্ধ, বিনামূল্যে বই বিতরণসহ কিছু ইতিবাচক সাফল্য দুর্নীতি কমাতে সহায়তা করলেও এখনো শিক্ষাক্ষেত্রে যে দুর্নীতি আছে তা জাতীয় লজ্জার বিষয় বললেও অত্যুক্তি হবে না। শিক্ষা ভবনকে বলা হয় দুর্নীতির ঘাঁটি। মন্ত্রী ও সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের সদিচ্ছা সত্ত্বেও এ ভবনটিকে শিক্ষক নিগ্রহের কেন্দ্রস্থল বলে ভাবা হয়। ট্রান্সপারেন্সির পক্ষ থেকে শিক্ষা ক্ষেত্রে দুর্নীতি কমার সুসংবাদ যে দিন ঘোষিত হলো অর্থাৎ মঙ্গলবার থেকে প্রাথমিক শিক্ষকরা প্রধান শিক্ষকের পদ দ্বিতীয় শ্রেণীতে উন্নীত ও বেতন স্কেল বৃদ্ধির দাবিতে জাতীয় শহীদ মিনারে অনশন কর্মসূচি পালন করছেন। শিক্ষকদের প্রতি আমাদের সবারই কৃতজ্ঞ থাকা উচিত। সে বিবেচনায় আমরা তাদের দাবিদাওয়ার ব্যাপারে সহানুভূতিশীল। তবে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রেখে এ ধরনের কর্মসূচি পালন বাঞ্ছনীয় নয়। ইতোমধ্যে প্রেসনোট জারি করে শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত না রাখলে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি, হুমকি পাল্টা হুমকি নয়_ অনশন প্রত্যাহারে শিক্ষকদের সঙ্গে সরকারের আলোচনায় বসা উচিত। এ ক্ষেত্রে কোনো সংঘাতই কাম্য হওয়া উচিত নয়।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।