গত পরশুর কথা। ফিরছিলাম জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। আসার সময় পথে চোখ পড়ল একটি সিনেমা হলের সামনে বিলবোর্ডে। সিনেমা হলের নাম সম্ভবত আজাদ। বাইরে বিশাল বিলবোর্ড সাঁটানো, মুভির নাম দেহরক্ষী।
শহরাঞ্চলে যারা থাকেন তাদের সবার চোখেই এই ফিল্মের বিজ্ঞাপন চোখে পড়ার কথা। যাই হোক, এবার বলার চেষ্টা করব ঐ বিলবোর্ডের ছবিটি কেমন ছিল, যদিও জানি আমি চাইলেও ঐ বিলবোর্ডের ছবিটির পুর্ণ বিবরণ দিতে পারবোনা। সবার মাঝখানে অভিনেত্রী ববির বিশাল ছবি। নাভির নিচ থেকে নাভির উপর এক বিঘত পর্যন্ত শরীর প্রদর্শন। গলার নিচেও যথাসাধ্য ফাঁকা রাখার জোর প্রচেষ্টা চলানো হয়েছে এবং মোটামুটি গলার হাড় থেকে নিচের দিকে ৪-৫ আঙ্গুল পর্যন্ত ফাঁকা রাখা হয়েছে।
তার উপরের দিকে মারুফ এক হাতে রিভলবার বাগিয়ে আছে। আরো কিছু রোমান্টিক(?) এবং মার মার কাট কাট টাইপের ছবির খন্ডাংশ দিয়ে বিলবোর্ডটি সাজানো হয়েছে।
আমার উপরের বিবরণ দেখে কেউ কেউ হয়ত আমাকে গালি দেয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়ে নিতে চলেছেন যে, কেন আমি এইরকম সুড়সুড়ি জাগার মত বর্ণনা দিলাম। আচ্ছা বলুন তো, আমার এই লেখা কয়জনে পড়বে? পাঠক সংখ্যা সবমিলিয়ে কোনমতেই হাজার ক্রস করার সম্ভাবনা নেই। কিন্তু আমি যে বিলবোর্ডের কথা বললাম, তা কিন্তু প্রতিদিন কমপক্ষে কয়েকলক্ষ মানুষ দেখছে।
এবার আসুন, আচ্ছা আমার সর্বোচ্চ হাজারখানেক মানুষের মনে সুড়সুড়ি জাগানোর প্রচেষ্টা(?) যদি দোষের হয় তাহলে যারা কোটি কোটি মানুষের সুড়সুড়ি জাগানো থেকে শুরু করে আরো অনেক কিছুর জন্য নিজেদের মেধা-শ্রম সবকিছু দিয়ে সাধনা করে যাচ্ছে, তাদের কি করা উচিত?
যতই আইন করা হোক আর যাই করা হোক এসবের শেষ না করা পর্যন্ত সমাজের নারী নির্যাতন, ধর্ষণ কোন প্রকারেই বন্ধ করা যাবেনা। নারীবাদী নামের মানুষগুলো (আসলে মানুষের গুণাবলী তাদের মধ্যে আছে বলে অন্তত আমি বিশ্বাস করিনা) আসলে নারীদের নিয়ে ব্যবসাই করছে।
একটি তরুণ যুবক যখন এই ছবি দেখে (সিনেমা দেখার কথা বলছিনা, কেবলমাত্র বিলবোর্ডের ছবি দেখার কথা বলছি) তার মনে যখন কোন কুচিন্তা জাগবে, এবং তা বাস্তবায়নের জন্য যখন সে চেষ্টা চালাবে আইন তখন আবার তাকে অপরাধ বলবে। এই বাস্তবতাবিবর্জিত আইন প্রণেতাদের কাছে আমার প্রশ্ন, আপনারা গাছকে ঠিকমত বড় হওয়ার সুযোগ দিয়ে সেই গাছে ফল ধরাকে অপরাধ জ্ঞান করছেন কোন বিবেচনা থেকে? এইসব হল আইনের নামে শয়তানি।
আরে আপনার যখন ইচ্ছে আপনি নারী নির্যাতন বন্ধ করবেন তখন গোড়ায় হাত দিচ্ছেন না কেন? গোড়া না কেটে কিছু দিন পরপর ডাল পালা পরিষ্কার করে কোনদিনই গাছের কোন ক্ষতি করা যাবেনা।
কিন্তু আমি জানি আপনারা এই কাজ করবেননা।
কারণ আপনারা নারীবাদী নন, প্রকৃত পক্ষে আপনারা নারী ভোগবাদী।
শিয়াল তো সবসময়ই চাইবে যে, ভুলিয়ে ভালিয়ে মুরগীকে খাচার বাইরে নিয়ে আসতে। তাই না
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।