আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের) গৃহে একদিন- পর্ব ২



এ এক আকর্ষণীয় ভ্রমণ এ ভ্রমণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ঘর পানে ভ্রমণ ও তার জীবন চরিতের পানে কিছু অবস্থান। তাঁর আদর্শ, আচার-আচরণ ও ব্যবহারই তো একজন মানুষের ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষার সর্বশেষ বস্তু। তবে এটি তখন হবে যখন আমরা এ হতে নেকী ও সওয়াবের প্রত্যাশা করতে পারি। এ ভ্রমণ তো হল এক অপূর্ব নসিহত, উপদেশ, জীবনাদর্শ, উত্তম নমুনা এবং অনুসরণ ও অনুকরণ। আর এ ভ্রমণ কোন দৈহিক কোন ভ্রমণ নয়, এ ভ্রমণ হল, কিতাব ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীদের মুখনিঃসৃত বর্ণনা কেন্দ্রিক একটি ব্যতিক্রম ভ্রমণ।

কেননা, শুধু তিনটি মসজিদ ব্যতীত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ঘর বা কবর যিয়ারত করা ইত্যাদির উদ্দেশ্যে ভ্রমণ করা বৈধ নয়। এ মর্মে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন:তিনটি মসজিদ ব্যতীত সওয়াবের প্রত্যাশায় ভ্রমণ করা বৈধ না; [আর তা হল:] মসজিদুল হারাম, আমার এ মসজিদ ও মসজিদুল আঁকশা। বুখারী ও মুসলিম অতএব, আমাদের উচিৎ হল, আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদেশ পালনার্থে উল্লেখিত তিনটি মসজিদ ব্যতীত অন্য কোনও দিকে সওয়াবের প্রত্যাশায় ভ্রমণ করবো না। আল্লাহ তা‘আলাও বলেন: রাসূল তোমাদেরকে যা দেয়, তা তোমরা গ্রহণ কর এবং যা হতে তোমাদেরকে নিষেধ করে তা হতে বিরত থাক। সূরা হাশর, আয়াত: ৭ অতএব,যে সব বিষয় আমাদের জন্য আদর্শ ও নমুনা তা ব্যতীত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পরিত্যক্ত চিহ্ন ও নির্দশনাবলী অন্বেষণ করব না।

এ সম্পর্কে ইবনে ওজ্জাহ বলেন: যে বৃক্ষের নিচে বাইয়াতে রিযওয়ান সংঘটিত হয়েছিল, ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু সে বৃক্ষ কর্তন করার নির্দেশ দেন ও তা কেটে ফেলা হয়। কেননা জনগণ সে গাছের নিচে গিয়ে সালাত আদায় করত। তাই তিনি জনগণের উপর ফিতনার আশঙ্কা করেছিলেন। কিতাব আল-ইতিসাম লিল ইমাম সাতবী পৃ: ২৪৮ ইবনে তাইমিয়া রাহেমাহুল্লাহ গারে হেরা বা হেরা গুহা সম্পর্কে বলেন: নবুওয়তের প্রাক্কালে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গারে হেরাতে গিয়ে ইবাদাত করতেন এবং তাতেই সর্ব প্রথম অহি অবতীর্ণ হয়। কিন্তু অহি নাযিলের পর কখনও তিনি সেখানে উঠেননি, এমনকি তিনি তার নিকটবর্তীও হননি।

তিনি তো কোন দিন যাননি, বরং তার কোন সাহাবিও কোন দিন যাননি। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নবুওত প্রাপ্তির পর তেরটি বছর মক্কাতেই অবস্থান করেছেন কিন্তু তিনি কখনও সেখানে যাননি এমনকি সে পাহাড়েও তিনি উঠেন নি। হিজরতের পর তিনি মক্কাতে কয়েকবার এসেছেন, যেমন হুদাইবিয়া সন্ধির ওমরার সময়, মক্কা বিজয়ের বছর এবং সেখানে তিনি প্রায় ২০দিন অবস্থান করেছেন, জিরানা ওমরার সময়ও তিনি গারে হেরাতে যাননি। মাজমুউ আল-ফাতাওয়া ২৭/২৫১। এই তো আমরা নবীর শহরে উপস্থিত হবো, এই তো আমাদের সামনে দেখা যাচ্ছে এ শহরের সর্ব বৃহৎ নিদর্শন, আর তা হল ওহুদ পাহাড়।

যার সম্পর্কে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: এ পাহাড় আমাদেরকে ভালবাসে আর আমরাও তাকে ভালবাসি। বুখারী, হাদিস: ২৮৯৩ ও মুসলিম, হাদিস: ১৩৬৫ রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] ঘরে প্রবেশের পূর্বে তার ঘরের ভিত্তি ও কাঠামোর দিকে খেয়াল করি। আমরা তাঁর জীর্ণ কুটির ও সাধারণ বিছানা দেখে আশ্চর্য হবো না। কেননা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন এ ধরার বিলাস ত্যাগীদের মাঝে এক বিরল দৃষ্টান্ত। তিনি দুনিয়ার চাকচিক্য ও সম্পদের দিকে কখনও দৃষ্টিপাত করতেন না।

তার নয়ন শীতল হতো নামাযের মাধ্যমে তিনি বলেন: «بل جعلت قرة عينه في الصلاة». “বরং তার নয়ন শীতল হতো নামাযের মধ্যেই । ” সহীহ ইবনে হাব্বান, হাদিস: ৬৩৫২ আবু দাউদ: ৩০৫৫। তিনি দুনিয়া সম্পর্কে বলেন: “আমার ধন-সম্পদ ও দুনিয়া বা আমার ও দুনিয়ার উদাহরণ হল: কোন মুসাফির গরমের দিনে চলতে চলতে কোন বৃক্ষের ছায়া তলে দিনের কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিলো, তারপর তা ছেড়ে চলে গেল। তিরমিযী আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ঘরের সামনে এসে পৌঁছেছি, আমরা মদিনার রাস্তা দিয়ে যাচ্ছি... এই তো আমাদের সামনে ভেসে উঠছে রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] এর স্ত্রীদের কক্ষগুলি, যা খেজুর পাতা ও মাটি দ্বারা নির্মিত, আর কিছু পরস্পর মিলিত পাথর দ্বারা, আর তার ছাদগুলি সম্পূর্ণই খেজুর পাতার ছাউনি। হাসান রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন: আমি ওসমান বিন আফফান রাদিয়াল্লাহু আনহুর খিলাফতের যুগে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্ত্রীদের ঘরে প্রবেশ করে দেখতাম, ঘরের ছাদ হাত দিয়ে নাগাল পেতাম।

ইবনে সায়াদ এর তাবাকাতুল কুবরা ১/৪৯৯,৫০১, এবং দেখুন: ইবনে কাসীরের সীরাতুন্নাবাবিয়্যায় ২/২৭৪ এতো অতি সাধারণ জীর্ণ-শীর্ণ কুটির এবং ছোট ছোট কক্ষ, তবে তা ঈমান ও আল্লাহর অনুসরণ, অহি ও রিসালাত দ্বারা সজ্জিত। মূল বই

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.