দশম সংসদ নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে। সংবিধান অনুযায়ী ২৪ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ হিসেবে যে কোনো সময় নির্বাচন কমিশন দশম সংসদ নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণা করবে- এমনটিই আশা করা হচ্ছে। নির্বাচন হলো জনগণের উৎসব। এ উৎসব জনগণ যাতে অবাধে পালন করতে পারে সে জন্য নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টি করা দরকার। কিন্তু দশম সংসদ নির্বাচন জাতির ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেললেও নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টির বিষয়টি এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করবে এমন গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকার ও বিরোধী দলের ঐকমত্য একটি অপরিহার্য শর্ত হলেও সে বিষয়টি এখনো অনিশ্চিত। সরকার বলছে, নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী। সন্দেহ নেই তাদের এই যুক্তি অকাট্য। এর সঙ্গে দ্বিমত পোষণের কোনো অবকাশই নেই। তবে সে সাংবিধানিক ধারা সব পক্ষের গ্রহণযোগ্য কিনা তাও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ বিষয়ে সরকার ও বিরোধী দলের মতপার্থক্য নিরসনে সংলাপের আয়োজন করা হবে- এমনটিই চেয়েছে দেশের মানুষ। কিন্তু জনপ্রত্যাশা পূরণের কোনো উদ্যোগ না থাকায় সংকট আজ ঘনীভূত হয়ে উঠেছে। নির্দলীয় সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি প্রতিষ্ঠায় বিরোধী দল একের পর এক হরতাল দিচ্ছে। অন্যদিকে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠানের জেদ ধরে সরকারের পক্ষ থেকে সংলাপকে কার্যত এড়িয়ে চলা হচ্ছে। দুই পক্ষের আপসহীন মনোভাব দেশের গণতান্ত্রিক শাসনের জন্য বিড়ম্বনা ডেকে আনছে। গণতান্ত্রিক রাজনীতি হলো সমঝোতার রাজনীতি। এখানে আপসহীনতার কোনো স্থান নেই। আপসহীন শব্দটি যতই বীরোচিত মনে হোক না কেন এটির সঙ্গে স্বেচ্ছাচারিতার সম্পর্কই বেশি। প্রধান দুটি দল সমঝোতার বদলে আপসহীন সাজার কসরৎ করে দেশকে বিপদের দিকেই ঠেলে দিচ্ছে। এ বিপদ ঘোরতর হয়ে উঠেছে লাগাতার হরতাল আর তার বিপরীতে বিরোধীদলীয় নেতাদের গ্রেফতারের অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্তে। আমরা মনে করি, গণতন্ত্রের স্বার্থে এই অপখেলা থেকে সবারই সরে আসা উচিত। নির্বাচনকে নির্বিঘ্ন করতে এখনই সংলাপে বসার উদ্যোগ নিতে হবে। খুঁজে পেতে হবে সমঝোতার পথ। নির্বাচনের জন্য উৎসবী পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। এটিই আজ দেশবাসীর কাম্য বিষয়।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।