অ আ বাংলাদেশ, তার নাগরিকদের জন্য গেলো ডিসেম্বরটা ছিলো এক ধরনের চোখ ফোটার মৌসুম। বিজয়ের চার দশক পর আমরা আবারো তিক্ততার সাথে অনুধাবন করলাম বাংলাদেশের ভেতরেই স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি এখনো কতোটা তৎপর।
যুদ্ধের সময় তাদের কর্মকান্ড যেমনটা ছিলো; দেশ বিরোধী, বিধ্বংসী এবং শত্রুভাবাপন্ন, আজও তেমনটাই চলছে । চোখের সামনে আমরা দেখতে পেলাম যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নস্যাৎ করতে তারা কিভাবে হামলা চালালো বিচারক এবং বিচার ব্যবস্থারই ওপরে। গতকালতো এদের এক পান্ডা বিচারের কাঠগড়ায় দাড়িয়ে হুমকিভরা স্বরে জানালো 'বাংলাদেশ হয়েছে বলে কারো কারো দেখছি বাড় বেড়ে গেছে'।
একাত্তরে পরাজিত কিন্তু বিদেশী প্ররোচনায় মদমত্ত এই শক্তি এতোদিন তাদের অপকর্ম করে আসছিলো ধর্মের আড়ালে লুকিয়ে, কোমলপ্রাণ বাঙালীও অবুঝের মতো ধর্মের আড়ালে লুকানো অপরাধীকে আলাদা করে চিনতে চাইছিলো না। যখনি এদের অপকর্ম প্রতিভাত হতে গিয়েছে, ওমনি এরা লুকিয়েছে গিয়ে ধর্মের পেছনে। সৌদিআসক্ত পরকাল নিয়ে চিন্তিত বাঙালী (উদ্ভটত্ব প্রকট!) সহজেই বিভ্রান্ত হয়ে যেতো। কিন্তু এবার দেখলাম অন্যরকম...
গত সপ্তাহে আমরা দেখলাম সিলেটের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক একটি ভাষ্কর্য স্থাপন নিয়ে শিক্ষক নামধারী সৌদি ইজমের কিছু প্রতিনিধি সম্পূর্ন মিথ্যার ওপর ভিত্তি করে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করলো পরোক্ষে। আশা নিয়ে আমরা এও দেখলাম, তাদের সেই চেষ্টার হালে পানি পেলোই না।
এবার কিন্তু সচেতন বাঙালী ধর্মের পেছনে লুকাতে দিলো না ওই শিক্ষক নামধারী 'ছাগু' বৃন্দকে। তরুণ প্রজন্ম এ ক্ষেত্রে আবারো এক হলো।
ধর্মনিরপেক্ষ এই জনপদে সৌদি বা যেকোনো ধর্মকে আঁকড়ে রাজনীতি কিংবা ব্যবসা করবার অভিপ্রায়ে যে ব্যক্তি বা গোষ্ঠী মুক্তিযুদ্ধ এবং তার মূলনীতির বিরূদ্ধাচরণ করবে, তাদের সকলকেই বাঙালী 'ছাগু' হিসেবে সম্বোধন করবে। ভাষ্কর্য ইস্যুতে আমরা এটাই শিখলাম।
আশার কথা ভাষ্কর্য ইস্যুতে এবার কিন্তু সেই ছাগু শিক্ষক ও তার অর্ধশত চামুন্ডা ধর্মের পেছনে গিয়েও বাঁচতে পারে নি।
সে ছাগু হিসেবে চিরতরে চিহ্নিত হয়ে গেছে। এরই মতো যারা ভবিষ্যতে ধর্মকে পুঁজি করে রাজনীতি করবার অভিপ্রায় রাখেন, দয়া করে মুখের ভেতরে জিহ্বা শক্ত করে আটকে রাখুন।
ইশ্বরে সঙ্গে মানুষের ব্যক্তিগত যে বন্ধন-বোঝাপড়া, তাকে পুঁজি করে যদি কোনো অতি চালাক ব্যবসা করবার ইরাদা পোষণ করেন, তবে মনে রাখবেন, সেইই 'ছাগু'। মুক্তিযুদ্ধের ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা আমার স্বদেশের মূলনীতির বিরোধী তার ধর্মাশ্রয়ী রাজনীতি। আর এই কারনে, ধর্মাশ্রয়ী রাজনীতি-বাজ 'ছাগু' দেশের স্বাধীনতা বিরোধীও বটে।
আজকের তরুণ প্রজন্ম দীর্ঘ চার দশক পুরনো এই বিভ্রান্তি কাটিয়ে উঠেছে দেখে সকলেই আজ আনন্দিত। আগের প্রজন্মগুলি ধর্মীয় কিংবা নানাবিধ বিভ্রান্তিতে জড়িয়ে উদ্দেশ্যহীন হতাশ জীবন যাপন করতে গিয়ে দেশটাকে সামনের দিকে এগুতে বাধা দিয়ে গেছে।
কিন্তু আজকের তরুণ দেশের ইতিহাস জানে, শ্রদ্ধা করে সেই আত্মত্যাগী বীর মুক্তি'দের, যারা নিজের প্রাণ এবং পরিজনের মায়া তুচ্ছ করে বুক পেতে দিয়েছিলো পেশাদার সেনাবাহিনীর সামনে। যাদের রক্ত ও প্রাণের বিনিময়ে আজকের স্বাধীন বাংলাদেশে আমরা সবুজের চাষ করি, বৃষ্টি অনুভব করি ত্বকে আর এখনো গান করি আনন্দে। আত্মত্যাগের এই গর্ব কয়টা দেশের আছে? বাংলাদেশী হিসেবে আমি গর্বিত, এই দম্ভ প্রকাশে আমার উচ্চতা যেন বেড়ে যায়, আমার অস্তিত্ব প্লাবিত হয় কি এক অদ্ভুত আবেগে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।