আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মহামান্য ফার্স্ট পটাটু।

মানবিক, যৌক্তিক আর অযৌক্তিক। সোজা কথা আরেকটা মানুষ। দশ জনের ভীরে ডুবে থাকার প্রানান্ত চেষ্টায় থাকা মানুষ। সন ২০২৫। স্থানঃ আদালত ভবন।

দৃশ্যপটঃ বারো বছর আগের একটি হত্যা মামলার রায়। মহামান্য বিচারপতি ফার্স্ট পোটাটু সাহেব আদালতে তার ভারী পাছাখানা তশরিফ রেখেছেন। উপরে আল্লাহ্‌ আর নিচে ফার্স্ট পোটাটু নামে সব ফয়সালা হয়ে থাকে এখন। বাংলাদেশে এখন আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বেশ ভালো বলেই জানে সবাই। ফার্স্ট পোটাটু সাহেব প্রতিদিন এই রায় দিয়ে দেন।

একটা সময় দেশটাতে এক একটি মামলার নিষ্পত্তি হতে অনেক সময় লাগতো। ২০-২৫ টি লাশ ফেলে দেয়ার মামলা কে তখন মোটামুটি গ্রহনযোগ্য বলে ধরে নিয়ে চার্জশীট দাখিল হবার কথাও শোনা যায়। এর চেয়ে কম হলে ওটাকে দুষ্টুমি বলে চালিয়ে দেবার রীতি ছিল বলে প্রচলিত একটা মিথ ও আছে। ব্যাপারটা এমন, আপনার সাথে আমার ঝগড়া হল, আমি আপনার বাসায় গিয়ে আপনার সকল সম্পদ লুণ্ঠন করলাম, আপনার পরিবারের নারীদের শ্লীলতাহানি করলাম, অতপর গুনে গুনে সবাইকে দুষ্টুমি পূর্বক খুন করলাম। তারপর আপনি রিপোর্ট লেখাতে গেলে বললাম, ও ম্যান, আই ওয়াজ জাস্ট কিডিং ম্যান!!!! যাই হোক, সেই তুলনায় এখন সব অতি দ্রুত হয়।

ফার্স্ট পোটাটু রিপোর্ট করে, সেটাই ধ্রুব বলে ধরে নিয়ে মুন্ডুপাত করা হয় তাবৎ অপরাধীর। মাঝে মাঝে ফার্স্ট পোটাটু সাহেবের লুজ মোশন হয়। আফটার অল এত বড় বিচারপতি, তো তখন যা হয় তা হোল, পাঁচ দশ বছর আগের ঘটনা উনারা সিন্দুকে বন্দী করে রাখেন। তারপর ওরস্যালাইনের ঘাটতি হলে তা প্রকাশ করেন। কিন্তু, মাঝের বছরগুলোর ওলটপালট হিসাব রাখা হয় না কারুরই।

যাই হোক- মামলা চলছে। ২০১৩ সালে ঘটা বাংলাদেশ ক্রিকেটের সম্মান হত্যা মামলার রায়। রায় পড়ে শোনাচ্ছেন মহামান্য বিচারপতি ফার্স্ট পোটাটু সাহেব। অভিযুক্ত আসামি কেবল একজন বলে গন্য করেছেন তিনি। বাকি জড়িত রা সবাই স্রেফ দুষ্টুমি করছিলেন।

ফার্স্ট পোটাটু সংবিধান, ১০/১(ক) মোতাবেক যার ক্ষমতা যত বেশী তিনি তত বেশী দুষ্টুমি করার ক্ষমতা রাখেন। এই আইনবলে একজন ক্ষমতাধর ৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত জুয়া খেলার, ২৭ টি খুন করার, ৫০ কেজি মারিজুয়ানা, ৩০ কেজি আফিম, ৭০ কেজি হেরোইন বহন করার দুষ্টুমি ভোগ করতে পারবেন। আবার, অবস্থাদৃষ্টে ফার্স্ট পোটাটু সেই আইন পরিবর্তন, পরিবর্ধন করার ক্ষমতাও রাখে। অবশেষে সামান্য প্রতীক্ষার পর রায় ঘোষিত হল। আসামী জনাব ঝাঁঝরাফুল মিয়ার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ ফার্স্ট পটাটু আইন মোতাবেক সত্য প্রমানিত হওয়াতে বিচারপতি ফার্স্ট পটাটু তাকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন।

পুরো বাংলাদেশ এই রায়ে খুশী। আগামীকাল বাদ জোহর তার শুভ ফাঁসি অনুষ্ঠিত হবে। বিচারপতি তা লাইভ সম্প্রচারের জন্যে সকল চ্যানেল সমুহ কে নির্দেশ দিয়ে দিয়েছেন। আর বাকিদের গুলো স্রেফ দুষ্টুমি হওয়াতে তাদের মান সম্মান সহ বাজির অর্থ ফেরত দেবার জন্যে উল্টো বাজিকরদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আমিও সাধারণ জনগণ।

সবার এই দুষ্টুমি মানিয়া লইলাম। আর সাথে মহামান্য বিচারপতির রায়। হেইল মিঃ ফার্স্ট পটাটু। হেইল বাংলাদেশ। এন্ড লাস্ট বাট নট দা লিস্ট... হেইল ভোঁদাই জনগণ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.