একদিন সব শুন্য হবে
ছোট্ট একটা বাড়ী ! মাথার উপর
টিনের চাল ! শ্রাবনের মাতাল
দুপুরে চালের টুং টাং শব্দ ! বাড়ীর
পাশে পাকা ঘাটের টলটলা পানির
পুকুর । পুকুরের জলে মাছের গাঁই
দিয়ে বেড়ানো ।
বড়শি নিয়ে সকাল
থেকে বসে আছি । একটা মাছও
ধরতে পারি নি । আমার দুই
পাশে আমার জমজ দুই
মেয়ে চৈতি আর ইতি ।
কিছুক্ষন পরপর
ওরা হাত তুলে মাছের জন্য আল্লাহর
কাছে দুয়া করছে । কিন্তু লাভ
হচ্ছেনা । আর উনি জানালার
ধারে বসে বসে মুখ টিপে হাসছেন ।
-কি জেলে সাহেব ? কয়টা মাছ
ধরলেন ? মাছ নেয়ার জন্য ক্রেন
নিয়ে আসবো ?
-না ম্যাডাম ক্রেনে হবে না !
আরো বড় কিছু লাগবে !
-ও আচ্ছা ! তা আজ মাছের
সাথে রাগ করে না খেয়ে থাকবেন
নাকি ?
না আর বসা ঠিক হবে না । চৈতি -
ইতির নিশ্চয় ক্ষুধা পেয়েছে ।
ওদের
মুখগুলো কেমন শুকনো শুকনো লাগছে ।
-চলো মা-রা উঠে পড়ি ।
-না আব্বু একটা মাছ ধরা হোক ।
-উহু ! আজ মাছদের জন্য শনি বার
ঘোষনা করলাম ।
-শনি বার কি আব্বু ?
-আল্লাহর নবী দাউদ (আঃ)
শনিবারে যখন আল্লাহর
দেয়া কিতাব যাবুর পাঠ করতেন তখন
মাছেরা এসে নদীর কিনারায় ভীড়
করে শুনত ।
কেউ যেন তাদের এ
দুর্বলতার সুযোগ
না নিতে পারে তাই শনি বার দিন
মাছ ধরা ছিল নিষিদ্ধ ।
-এখনও কি শনিবারে মাছ
ধরা যাবে না আব্বু ?
-ধরা যাবে মা । তোমাদের আম্মু
রেগে যাবে চল
তাড়াতাড়ি উঠে পড়ি ।
-আব্বু তুমি এত ভিতু কেন ? আচ্ছা চল !
***
গ্রাম্য মেলার আসল মজা বিকেলে ।
যখন হঠাৎ করে বেড়ে যায় মানুষের
কোলাহল ।
সারাদিন ঝিমঝিম
করে মেলা চলে আর শেষ
বিকেলে যেন বয়ে যায়
দমকা হাওয়া । চৈতি একটু মন খারাপ
করেছে । আব্বু
আসলে ইতিকে বেশি পছন্দ করে ।
নাহলে তাকে নীল
চুঁড়ি কিনে দিয়ে ইতিকে লাল
চুঁড়ি কক্ষনো কিনে দিত না । ইশ লাল
চুঁড়িতে ইতিকে কত্ত সুন্দর লাগছে !
আর ওকে লাগছে পঁচা! অনেক পঁচা !
ওর কান্না আসছে !
-কি হয়েছে আম্মু ? কাদছো কেন ?
-তুমি অনেক পঁচা ।
আমাকে নীল
চুঁড়ি কিনে দিলে কেন ?
-ওমা ! নীল চুঁড়িতে আমার
আম্মুকে নীল পরীর মত লাগছে যে !
-উহু তুমি সব সময়
বানিয়ে বানিয়ে কথা বল ।
সময় বয়ে বয়ে চলে । বিকেল
গড়িয়ে আসে নিশীথ আঁধার । আকাশ
বেয়ে নেমে আসে রুপালী তাঁরার
দল ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।