চিকিত্সাসংক্রান্ত সনদ (মেডিকেল সার্টিফিকেট) জালিয়াতির অভিযোগে আটক জাহাঙ্গীর আলম নামের এক চিকিত্সককে মামলার আগেই পুলিশ ছেড়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ শুক্রবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে তাঁকে আটক করে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করেছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পুলিশের দাবি, জাহাঙ্গীর থানা থেকে পালিয়ে গেছেন।
এ ব্যাপারে রমনা অঞ্চলের উপ-কমিশনার (ডিসি) মারুফ হোসেন প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ‘ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়ার পর থানায় যোগাযোগ করেছি। থানা থেকে আমাকে জানানো হয়েছে, আটক চিকিত্সক পালিয়ে গেছেন।
’
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানায়, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে যথারীতি হাসপাতাল পরিদর্শন করছিলেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোস্তাফিজুর রহমান। তখন তিনি হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় চিকিত্সকদের গ্রন্থাগার থেকে দায়িত্বরত পুলিশ ও আনসারদের মাধ্যমে জাহাঙ্গীরকে আটক করেন। এরপর তাঁকে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করা হয়।
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে জাহাঙ্গীরকে নরসিংদীর সিভিল সার্জন কার্যালয়ে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি মন্ত্রণালয়ের উপসচিবের স্বাক্ষর জাল করে নিজেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগে নিয়োগ দেখান।
বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর মন্ত্রণালয় ঘটনার তদন্ত করে অভিযোগের প্রমাণ পায়। বছর দুয়েক আগে মন্ত্রণালয় তাঁকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, শুধু জালিয়াতি করে নিয়োগ নয়, অর্থের বিনিময়ে রোগীদের চিকিত্সাসংক্রান্ত সনদ দিতেন তিনি। অথচ সনদ দেওয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি হচ্ছেন হাসপাতালের সহকারী রেজিস্ট্রার। বহিষ্কারের পরও জাহাঙ্গীর হাসপাতালের প্যাড-সিলসহ আনুষঙ্গিক বিষয় জাল করে সনদ দিয়ে আসছিলেন।
হাসপাতালে তাঁর বিচরণ ও অভিযোগের তথ্য পাওয়ার পর বেশ কিছুদিন আগে তাঁকে আটক করে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছিল। অথচ আজ চিকিত্সকদের লাইব্রেরির বিকল্প চাবি তৈরি করে তিনি সেখানে ঢোকেন এবং একজন রোগীর স্বজনকে একই কায়দায় ভুয়া সনদ দিচ্ছিলেন। তখনই তাঁকে আটক করে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করা হয়।
বেলা দুইটার দিকে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ওই চিকিত্সক থানায় আছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লিখিত অভিযোগ দিলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
বিকেলে লিখিত অভিযোগ দিতে থানায় যান হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার জিল্লুর রহমান। জিল্লুর জানান, ‘থানার কর্তব্যরত পুলিশ কর্মকর্তার কক্ষে জাহাঙ্গীরকে রাখা হয়েছিল। আমি ব্যক্তিগত কাজে ওই কক্ষ থেকে বাইরে বের হই। কিছুক্ষণ পর ওই কক্ষে গিয়ে দেখি জাহাঙ্গীর নেই। ’
জানতে বেশ কয়েকবার ফোন করা হলে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) পাওয়া যায়নি।
পরে যোগাযোগ করা হলে রমনা বিভাগের ডিসি মারুফ বলেন, ‘চিকিত্সক পালিয়ে গেছেন বলে আমাকে থানা থেকে জানানো হয়েছে। জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মামলা হবে। দায়িত্বে অবহেলার কারণে সংশ্লিষ্ট পুলিশের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।