আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইভটিজিং প্রতিরেধ ও বোরকার ব্যবহার: একটি সামগ্রিক আলোচনা

বিবেকহীন বুদ্ধিজীবী

একাত্তরের গণধর্ষণ আমি দেখিনাই/ টাঙ্গাইলের গণধর্ষণ আমি দেখিনাই/ দিল্লির গণধর্ষণ আমি দেখিনাই/ কাশ্মীরে বি এস এফ এর গণধর্ষণ আমি দেখিনাই/ সাভারের বোরকা পড়া সেই মেয়েটির ইভটিজিং হওয়া আমি দেখিয়াছি/ তাই আজ লেখিতে বসিয়াছি। এ লাইন গুলো দেখে হয়তবা অনেকেই ভাববেন আমি হয়তবা কবিতা লেখছি আসলে তা নয়। ইতোপূর্ব বেশ কয়েকটি ব্লগ আমি লেখেছি কিন্ত তাতে কোন বাস্তব অভিজ্ঞতা আমার ছিলনা। আজকে আমি একটি বাস্তব অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরব। গত ১৫ই জানুয়ারি আমি একটি রাস্তা দিয়ে হাটছিলাম।

নিয়মিতই আমি এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করি। আমার ১০গজ সামনে দিয়ে স্থানীয় মাদ্রাসার পোশাক বোরকা পরিহিতা একটি মেয়ে হাটছিল। হঠাৎ মেয়েটির সাথে একটি ছেলে যোগ দিল প্রথমে ভেবেছিলাম হয়তবা তার আত্মীয় হবে। কিন্ত আমার ধারনা তখনই ভুল প্রমানিত হল যখন দেখলাম ছেলেটি যতই মেয়েটির কাছে যাচ্ছে মেয়েটি ততই দূরে যাওয়ার চেষ্টা করছে। আমি ঘটনা বুঝার জন্য দ্রুত হাঁটলাম।

কাছাকাছি গিয়ে শুনতে পারলাম ছেলেটি বলছে, আপু প্লিজ ফোন নাম্বার টা দেন এ কথা বেশ কয়েকবার বলল ছেলেটা। মেয়েটা বলল আপনি যান এখান থেকে। তাতেও কোন কাজ হলনা। ছেলেটি এবার তার নিজের মোবাইল নাম্বার দেওয়ার চেষ্টা করল কিন্ত মেয়েটি নিলনা। আমি প্রতিবাদ করতে চাইলাম কিন্ত পারলাম না কারণ এর মধ্যেই একটু পাশেই দাড়িঁয়ে থাকা ৫ জন ছেলের মধ্য থেকে একটি ছেলে এসে মেয়েটাকে বলল আপনি যদি তাকে না ভালবাসেন তাহলে সে আজকেই আত্মহত্যা করবে।

মেয়েটি নির্বাক হেঁটে চলল। আমার ইচ্ছে হচ্ছিল মেয়েটিকে তার পরিচয় জিজ্ঞাসা করি কিন্ত সাহস হলনা আবার সে যদি আমাকেও ইভটিজার ভেবে বসে। এটা ছিল প্রকৃত ঘটনা। এখন বিষয়টা হল আমরা বলে থাকি যে, মেয়েরা বোরকা পড়লে ইভটিজিং এর শিকার হবেনা। কিন্ত তা কি আজ ভুল প্রমাণিত হল? নাকি অন্য কোন কারণ আছে? আমার বিশ্বাস মেয়েটি তার বাবা কে বা কোন মিডিয়াতে এ বিষয়টি প্রকাশ করবেনা।

কারণ সে যেহেতু বোরকা পড়ে তাই তার আত্মসম্মানবোধ একটু বেশী। আমার লেখাটি বোরকা বা হিজাবের বিরুদ্ধে নয়, ইভটিজিং এর বিরুদ্ধে ও কিভাবে ইভটিজিং প্রতিরোধ করা যায় সে বিষয়ে। ২০১০ সালে যখন ইভটিজিং এর মাত্রা অনেক বেড়ে যাচ্ছিল তখন আইন প্রতিমন্ত্রী বলেছিলেন যে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গেটে পুলিশ মোতায়েন করা হবে। কিন্ত এখন তো পুলিশই ইভটিজিং করে। তাহলে ইভটিজিং কি অপ্রতিরোধ্য? আমি বলব অবশ্যই না।

কিন্ত কিভাবএ প্রশ্নের উত্তর দেওয়াটা অনেক সহজ কিন্ত বাস্তবায়ন মোটেই সহজ নয়। আমাদের সমাজ পুরুষ শাসিত হওয়ার কারণে আমরা খুব সহজেই মেয়েদেরকে বোরকা পড়তে বাধ্য করতে পারি। কিন্ত ছেলেদেরকে খুব সহজে ধর্মীয় বিধি বিধান মানতে বাধ্য করতে পারিনা। সেজন্যই বোরকা পড়ার পরও অনেকেই ইভটিজিং এর শিকার হচ্ছেন। ইভটিজিং প্রতিরোধের একমাত্র্র উপায় হল ছেলে মেয়ে উভয়কেই ধর্মীয় বিধান মেনে চলতে হবে।

যে সকল বক্তারা হিজাবের কথা বলেন তারা যেন তাদের ছেলেদের কেও পর্দার বিধান মেনে চলতে বলেন। আর অনেক মেয়েরা আছেন যারা বোরকা পড়ার পরেও প্রেম করে বেড়ান যাতে কেও চিনতে না পারে তারা যেন প্রেম করা ছেড়ে দেন অথবা বোরকা পড়া ছেড়ে দেন। বোরকার মত মহৎ একটি পোশাক কে অপমান করবেননা। সবশেষে যে কথাটি বলব তা হচ্ছে আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। প্রত্যেক ব্যক্তিকেই নিজ নিজ ধর্মের অনুশাসন/ আইনগুলো মেনে চলতে হবে।


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.