থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন চলছেই। জরুরি অবস্থা উপেক্ষা করে তৃতীয় দিনের মতো গতকাল মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রসহ কয়েকটি মন্ত্রণালয় অবরোধ করেছে সরকারবিরোধীরা। আন্দোলনের শীর্ষ নেতা সুথেপকে (থগসুবান) গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারির অনুমোদন দিয়েছেন আদালত।
রাজধানী ব্যাংককের ব্যাং সুয়ে থানার কর্মকর্তা কর্নেল সুনথর্ন কংক্লাম বলেন, ‘আমরা সুথেপের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির জন্য আদালতের কাছে আবেদন জানিয়েছি। ফৌজদারি আদালত তা অনুমোদন করেছেন।
এরপর সুথেপকে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে। তিনি আত্মসমর্পণ না করলে দেখামাত্র তাঁকে গ্রেপ্তার করবে পুলিশ। ’
সুথেপ সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলের জ্যেষ্ঠ নেতা। গত সোমবার কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী অর্থ মন্ত্রণালয়ে অবরোধ করার সময় তিনিও ছিলেন। পরে তিনি ‘সব কটি মন্ত্রণালয়’ অবরোধের ঘোষণা দেন।
এরপর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ আরও কয়েকটি মন্ত্রণালয় অবরোধ করে বিক্ষোভকারীরা।
সোমবার সরকারবিরোধীরা অর্থ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ওই দিনই রাজধানী ব্যাংকক ও আশপাশের এলাকায় জরুরি অবস্থা জারি করেন প্রধানমন্ত্রী ইংলাক।
রাজধানী ব্যাংকক ও আশপাশের এলাকায় ইন্টারনাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট (অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা আইন) জারি করার পর প্রধানমন্ত্রী ইংলাক বলেন, ‘সরকার যখন কোনো আইন জারি করে, তখন তা জনগণের ওপর প্রয়োগ করার জন্য করে না। সরকার জনগণকে কোনো অবৈধ আন্দোলনে যোগ না দেওয়ার ও আইনের প্রতি সম্মান দেখানোর আহ্বান জানাচ্ছে।
’
ইংলাকের পদত্যাগ চেয়ে বিক্ষোভকারীরা দাবি করেন, ইংলাক তাঁর ভাই থাকসিন সিনাওয়াত্রার কথায় দেশ পরিচালনা করছেন।
২০০৬ সালে এক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন থাকসিন। এর পর থেকে দেশটিতে কয়েক দফা বিক্ষোভ হয়। এবার একটি বিতর্কিত দায়মুক্তি বিল পাসের উদ্যোগ নিয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। বিলটি পাস হলে থাকসিন বিদেশ থেকে দেশে ফেরার সুযোগ পাবেন বলে বিরোধীদের অভিযোগ।
২০১০ সালে সরকারবিরোধী বিক্ষোভের পর রোববার থেকে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভ সবচেয়ে বড়। গতকাল জাতীয় পতাকা হাতে হাজারো বিক্ষোভকারী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, পর্যটন ও পরিবহন মন্ত্রণালয় অবরোধ করে। মন্ত্রণালয়ের ভেতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
বিক্ষোভকারীদের মুখপাত্র আকানাত সমসাক বলেন, ‘আমরা সম্পূর্ণ অহিংস আন্দোলন করছি। ইতিমধ্যে কয়েকটি মন্ত্রণালয় অবরোধ করা হয়েছে।
একই উপায়ে সারা দেশের সব কটি সরকারি কার্যালয় অবরোধ করার জন্য আমাদের সমর্থকদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। ’
প্রধানমন্ত্রী ইংলাক ও তাঁর ক্ষমতাসীন পুয়ে থাই পার্টি পার্লামেন্টে বিতর্কিত ওই বিলটি পাসের লক্ষ্যে দুই দিনের বিতর্ক শুরু করেছে।
বিরোধীদের অভিযোগ, থাকসিনকে দুর্নীতির অভিযোগ থেকে মুক্তি দিতেই বিলটি পাসের চেষ্টা করছে ক্ষমতাসীন দল। কাল বৃহস্পতিবার বিলটির ওপর পার্লামেন্টে ভোটাভুটি হবে। এএফপি ও বিবিসি।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।