আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সেশনজট থেকে কি আমরা মুক্তি পেতে পারিনা???

আমি মানুষ না অণুজীব কইতাম পারতাছিনা। তাই আমার নাম "অনুষ"

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য সেশনজট ক্যানসারের মত একটি ভয়ানক ব্যাধিতে রূপ নিয়েছে। ক্যানসার যেমন কোন মানুষই প্রত্যাশা করেনা, কিন্তু হয়ে গেলে তা থেকে মুক্তি পাওয়া অনেক কঠিন হয়ে পরে। তেমনি সেশনজট হলে আর কিছুই করার থাকেনা। সেশনজটের কারনে নষ্ট হয়ে যায় অনেক শিক্ষার্থীর সম্ভাবনাময় সুন্দর ভবিষ্যৎ।

আমরা যারা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করি তারা কেউই একেবারে সচ্ছ্বল পরিবার থেকে আসিনি, বেশীরভাগ শিক্ষার্থীই নিন্মবিত্ত বা নিন্মমধ্যবিত্ত। পড়ালেখা চলাকালীন একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত পরিবার থেকে টাকাপয়সা এনে খরচ চালায়, কিন্তু একটা সময় দেখা যায় পরিবার আর টানতে পারেনা। কোন শিক্ষার্থী চার বছরের অনার্স কোর্স সাত বছরের নিচে শেষ করতে পারছে কিনা আমার জানা নেই। তারপর আছে মাস্টার্স, তাও তিন বছরের নিচে শেষ করা যায়না। প্রকৃতপক্ষে আমরা পাঁচ বছরের শিক্ষাজীবন দশ বছরেও শেষ করতে পারিনা।

দীর্ঘসময় ব্যাপ্তি পড়ালেখার প্রতি চলে আসে অনীহা। পরিক্ষা সম্পর্কে কোন সুস্পষ্ট ধারনা না থাকায় নিয়মিত পড়ালেখার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে যায়। একটা সময় অনেক সহজ পড়াও চর্চা না থাকার কারনে ভুলে যাই এবং সহজ বিষয়গুলিও কঠিন মনে হয়। দীর্ঘ এই সময়ে কেউ কেউ প্রবেশ করেন কর্মজীবনে, কেউবা সখের বসে আবার কেউবা পেটের দায়ে। ফলে পড়ালেখার মুলস্রোত থেকে অনেকেই বিচ্ছিন্ব হয়ে যান।

তখন মনে কাজ করে কোন রকম পাশ করলেই হল এত বেশি পড়ার দরকার নেই। কোন বছরের পরিক্ষা কোন বছর হবে তা আমরা আন্দাজও করতে পারিনা, সে কারনে ক্যারিয়ার নিয়ে নির্দিষ্ট কোন পরিকল্পনাও করা যায়না। তার উপর আছে নিজের ক্যারিয়ার গোছানোর চিন্তা। অনেক ক্ষেত্রে সুযোগ থাকলেও সার্টিফিকেটের অভাবে কিছু করা যায়না। সবক্ষেত্রে হাপিত্যেশ।

যারা পাবলিক বা প্রাইভেট ভার্সিটিতে পড়ছে তাদেরতো কোন সমস্যা হচ্ছেনা তারা থিকই নিজের মত চলছে। মন্তব্য করা যেতে পারে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছ কেন ভাল স্টুডেন্ট হয়ে পাবলিকে পড়ো না হয় টাকা খরচ করে প্রাইভেটে পড়ো। হ্যাঁ, কথাটাতে যুক্তি আছে। প্রতি বছর লাখ লাখ শিক্ষার্থী উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে, তাদের মধ্যে হাতেগোনা স্টুডেন্ট পাবলিকে চান্স পায়। পর্যাপ্ত আসনের অভাবে যারা পাবলিকে চান্স পায়না তাদেরকে খারাপ স্টুডেন্ট বলেওতো ফেলে দেয়া যায়না।

অনেক জিনিয়াস স্টুডেন্ট আছে যারা কোন না কোন কারনে পাবলিকে চান্স না পেয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে। আমরা প্রথমশ্রেণি থেকে দ্বাদশশ্রেণি পর্যন্ত পরিক্ষা দিয়ে অনার্সে ভর্তি হই, এই ১২ বছরেতো সেশনজট হয়না তবে অনার্সে কেন সেশনজট? আমি ব্যক্তিগতভাবে সেশনজটের জন্য যেসব কারনগুলো দায়ী করবো তাদের মধ্যে, ** ঠিক সময়ে ভর্তি পরীক্ষা না হওয়া। ** শিক্ষকদের উদাসীনতা। ** জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের উদাসীনতা ও অযোগ্যতা। ** রাজনৈতিক অস্থিরতা।

এসব কারণকেই বেশি দায়ী করব। একটু হিসাব করুন, প্রায় ১৮ বছর বয়সে উচ্চমাধ্যমিক পাস, অনার্স-মাস্টার্স করতে লাগে ১০ বছর। সেই হিসেবে পড়ালেখা কোন রকম শেষ করতেই আমাদের বয়স হয়ে যায় ২৮-২৯ বছর। বাংলাদেশে চাকরির বয়সসীমা ৩০ বছর। আবার বাংলাদেশে চাকরির বাজারে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা।

এই ক্ষুদ্র সময়ে ভাল চাকরি পাওয়া প্রায় অসম্ভব। সেশন জটের প্রকৃত কারনগুলি আসলেই কি, এবং এর থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় কি হতে আসুন কমেন্টে আমরা মুক্ত আলোচনা করি।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.