আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রাজনৈতিক অস্থিরতায় সংকটে ব্যাংক

এর ফলে ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বাড়ার আশঙ্কা করছেন ব্যাংকারা।
এই প্রেক্ষাপটে মঙ্গলবার এক বৈঠকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত না করার পাশাপাশি তাদের ঋণের সুদ স্থগিত রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
বছরের শেষ মাস ডিসেম্বর ব্যাংকগুলোর জন্য ঋণ আদায়ের মাস হলেও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে এই মাসে ঋণের কিস্তি আদায় খুব বেশি ভাল হবে না বলে আশঙ্কা করছেন ব্যাংকাররা।
তারা বলছেন, নভেম্বর মাসেই বিভিন্ন ব্যাংকের পাঁচ থেকে ১০ শতাংশ গ্রাহক তাদের ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে পারেননি। অনেকে কিস্তির পুরো টাকা না দিয়ে আংশিক পরিশোধ করছেন।


ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন এবিবির ভাইস চেয়ারম্যান ও পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেলাল আহমেদ চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, অনেক গ্রাহকই ঋণের কিস্তি দিতে পারছেন না। কেউ কেউ কিস্তির পুরো টাকা না দিয়ে কিছু কম দিচ্ছেন।
“এর ফলে ব্যাংকগুলোর খেলাপী ঋণে বাড়তে পারে। ”
অনিশ্চিত পরিবেশ ও পরিবহন ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হওয়ায় এমন হচ্ছে বলে মনে করেন এই ব্যাংকার।
এক্সিম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মাদ হায়দার আলী মিঞা বলেন, “গার্মেন্ট মালিক বা ট্রেডিং করে এমন অনেক ব্যবসায়ী ঋণের কিস্তি দেওয়ার সামর্থ্য নেই বলে জানিয়েছেন।

গড়ে ৫ থেকে ১০ শতাংশ পর্যমন্ত ইনস্টলমেন্ট কমে গেছে।
তিনি বলেন, “সবাই সময় মত ঋণ পরিশোধ করতে না পারায় ব্যাংকের মন্দ ঋণের পরিমাণ বেড়ে যাবে। ব্যাংকগুলোকে প্রভিশন করতে হবে। ”
ইস্টার্ন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী রেজা ইফতেখার বলেন, “সামগ্রিকভাবে ঋণের কিস্তি পরিশোধ আগের তুলনায় কম হচ্ছে।
“মূলত, মাঝারি মানের ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের অনেকে কিস্তি পরিশোধে হিমশিম খাচ্ছে।

আবার অনেক কিস্তির পুরো টাকা দিতে পারছেন না, আংশিক দিচ্ছেন। ”
কোনো গ্রাহক পর পর তিন কিস্তি ঋণের অর্থ পরিশোধে ব্যর্থ হলে তাকে খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত করতে হয়। একই সঙ্গে ওই ঋণের বিপরীতে ব্যাংকগুলোকে ঋণের মান অনুযায়ী ২০ থেকে ১০০ শতাংশ পর্য্ন্ত প্রভিশন (নিরাপত্তা সঞ্চিতি) রাখতে হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংকগুলোর বিতরণকৃত মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে চার লাখ ৪২ হাজার ২৬২ কোটি টাকা। আমদানি ও অভ্যন্তরীণ বিলে ব্যাংকগুলোর দেওয়া ঋণের পরিমাণ ১৯ হাজার ৮৬৩ কোটি টাকা।

   
এছাড়াও একলাখ ৩৯ হাজার ৫৬৭ কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে ব্যাংকগুলোর, যার মধ্যে ব্যাংকের নিজস্ব সম্পদও রয়েছে।
ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গত কয়েক মাসের বিক্ষোভ, হরতাল ও অবরোধে দেশের অর্থনীতির অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন পচনশীল পণ্যের উৎপাদক ও ব্যবসায়ী, রপ্তানিকারক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, পরিবহন ব্যবসায়ীরা। এসব ব্যবসায়ীর এখন ব্যাংকের সুদ ও কিস্তি পরিশোধ করার সামর্থ্য নেই। ”
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, “সেজন্য আমরা আজ (মঙ্গলবার) সাধারণ সভা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, রাজনৈতিক কর্মসূচিতে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ঋণ খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত না করার পাশাপাশি তাদের ঋণের সুদ স্থগিত রাখার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ করবো।


বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ হাসান জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সাম্প্রতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে সব খাতই সমস্যায় পড়েছে, যার প্রভাব পড়ছে ব্যাংকের ঋণ বিতরণ ও আদায়ে। বেসরকারি খাতের ঋণ বিতরণ ও আদায় দুটোই কমেছে। ”

সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.