আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সূক্ষ্ম পরিমাপের নতুন পদ্ধতি

বস্তু পরিমাপের জন্য অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাজ্যের একদল গবেষক এবার নতুন একটি পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন। তাঁদের দাবি, ‘অফ রেজোন্যান্ট ইমেজিং’ নামের পদ্ধতিটি প্রয়োগ করে মহাবিশ্বের সবচেয়ে শীতল বস্তু পরিমাপ এবং এ সম্পর্কিত গবেষণা করা যাবে।

নিউ জার্নাল অব ফিজিকস সাময়িকীতে এ গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। পরম শূন্য তাপমাত্রার (-২৭৩ দশমিক ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা -৪৫৯ দশমিক ৬৭ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা শূন্য কেলভিন) সামান্য বেশি তাপমাত্রাকে বিজ্ঞানীরা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করেন। কারণ, তাঁদের মতে, মহাবিশ্বে কোনো বস্তুর তাপমাত্রা পরম শূন্য তাপমাত্রার চেয়ে কম হতে পারে না।


১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝি পর্যায়ে পদার্থবিজ্ঞান গবেষণাগারে গ্যাসীয় বস্তুর তরলীকৃত অবস্থা তৈরি করেন, যার নাম বোস-আইনস্টাইন কনডেনসেট। ওই অবস্থায় বস্তুর তাপমাত্রা সর্বনিম্ন (পরম শূন্য তাপমাত্রার কাছাকাছি) হয়ে থাকে। কিন্তু নিখুঁতভাবে পরিমাপ করা সম্ভব হয়নি। এর কারণ সম্পর্কে গবেষকেরা বলেন, কোনো বস্তুকে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার নেওয়া হলে তাতে অদ্ভুত সব বৈশিষ্ট্য দেখা যায় এবং বস্তুটি তখন পদার্থবিদ্যার প্রচলিত নিয়মকানুন মানে না। তখন সামান্যতম আলোতেই বস্তুটির ওই অবস্থা পরিবর্তিত হয়ে যায়।

তাই তাপমাত্রা পরিমাপ তো দূরের কথা, বস্তুর ওই অবস্থা বজায় রাখাটাই কঠিন হয়ে পড়ে। তখন বস্তুটির ছবিও তোলার উপায় থাকে না।

বোস-আইনস্টাইন কনডেনসেট অবস্থায় থাকা বস্তুর তাপমাত্রা পরিমাপ প্রসঙ্গে যুক্তরাজ্যের নটিংহ্যাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মাইকেল হাস বলেন, ওই অবস্থায় তাপমাত্রা পরিমাপের বিষয়টি অনেকটা ফ্রিজ না খুলে ও যন্ত্রটির ভেতরের আলো না জ্বালিয়েই ভেতরের শীতলতা পরিমাপের মতো।

সম্ভাব্য সর্বনিম্ন তাপমাত্রা পরিমাপে যেসব প্রতিকূলতা ছিল, ‘অফ রেজোন্যান্ট ইমেজিং’ পদ্ধতি উদ্ভাবনের ফলে সেগুলো দূর করা সম্ভব হয়েছে। গবেষকেরা বলেন, নতুন পদ্ধতি প্রয়োগের ফলে নির্দিষ্ট আলো কোনো পরমাণুর ওপর পড়ে এবং শোষিত না হয়েই ফিরে আসে।

এর মানে হলো, বোস-আইনস্টাইন কনডেনসেট অবস্থায় কোনো বস্তুর অবস্থা অপরিবর্তিত রেখেই কিছু ছবি তোলা সম্ভব। পরে সেই ছবি একটি কোয়ান্টাম ফিল্টারের সাহায্যে বিভিন্ন বিশ্লেষণের মাধ্যমে বস্তুটির তাপমাত্রাসহ বিভিন্ন পরিমাপ জানা যাবে।

গবেষকদের আশা, ‘অফ রেজোন্যান্ট ইমেজিং’ পদ্ধতি প্রয়োগ করে কোনো বস্তুর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা পরিমাপের পাশাপাশি সূক্ষ্মভাবে বস্তুটির ওপর অভিকর্ষজ ত্বরণের প্রভাব পরিমাপ করা সম্ভব হবে। আর তাহলে খনিজ সম্পদ উত্তোলন থেকে শুরু করে রাডার ফাঁকি দেওয়ার প্রযুক্তি (স্টেলথ) পর্যন্ত বিভিন্ন ক্ষেত্রে আসবে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। অবশ্য নতুন পদ্ধতিটি এখনো পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে।

ফক্সনিউজ।

 

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।