সরকার মূলধন ঘাটতি মেটাতে রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংককে চার হাজার ১০০ কোটি টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত বুধবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে ব্যাংকগুলোর সঙ্গে এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি পূরণে সরকারের এই দাতা হাতেমতাইসুলভ ভূমিকা ব্যাংকগুলোকে সমূহ সংকট থেকে রক্ষা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে লুটপাটের আখড়া নামে পরিচিত চার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের লুটেরা কর্মকাণ্ডে লাগাম না দিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ জোগান দেওয়া অপতৎপরতাকে উৎসাহিত করবে কিনা তা এখন দেখার বিষয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সরকার সোনালী ব্যাংককে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা, অগ্রণী ব্যাংককে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা, জনতা ব্যাংককে ৮০০ কোটি টাকা এবং রূপালী ব্যাংককে ২০০ কোটি টাকা দেবে। এর ফলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে এলসি খোলার ক্ষেত্রে চারটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক যে প্রতিকূল অবস্থায় পড়েছিল তার অবসান হবে। দুর্নীতি ও ঋণ কেলেঙ্কারিতে পর্যুদস্ত চার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংককে বাঁচাতে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ যে প্রেসক্রিপশন দিয়েছিল সে অনুযায়ী সরকার মূলধন ঘাটতি পূরণের উদ্যোগ নিল। চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত চার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের মূলধন ঘাটতির পরিমাণ ৯ হাজার ৬৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মূলধন ঘাটতির শিকার ছিল সোনালী ব্যাংক। যাদের ঘাটতির পরিমাণ ৪ হাজার ৫৪৪ কোটি টাকা। জনতার ঘাটতি ১ হাজার ৬২৩ কোটি। অগ্রণীর ২ হাজার ৪৮১ কোটি এবং রূপালীর ৪১৫ কোটি টাকা। অব্যবস্থাপনার কারণে চার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের হাজার হাজার কোটি টাকা আত্দসাৎ হয়েছে। সাধারণ একজন কৃষকের ৫ হাজার টাকার ঋণ অনাদায়ী হয়ে পড়লে তাকে কোমরে দড়ি বেঁধে জেলে ভরার ঐতিহ্য থাকলেও ভুয়া কাগজপত্র দাখিল করে যারা হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নেন তারা থাকেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। রাজনৈতিকভাবে নিয়োগকৃত ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ও মহাক্ষমতাধর ট্রেড ইউনিয়নের যোগসাজশে জনগণের টাকা লুটপাট চলছে প্রতিটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে। এগুলো যেন দেখার কেউ নেই। লুটেরাদের কবল থেকে জনগণের অর্থ রক্ষার একমাত্র উপায় হলো বেসরকারিকরণ। সেক্ষেত্রে উদ্যোগের অভাব থাকায় দেশবাসীকে অসহায়ভাবে লুটেরাদের মহোৎসব দেখতে হচ্ছে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।