বরিশালে গত বৃহস্পতিবার খেলা নিয়ে কথা কাটাকাটি রক্তাক্ত পরিণতি ডেকে এনেছে। এক যুবকের নিহত হওয়াকে কেন্দ্র করে পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করলেও তার জের কাটেনি। শুক্রবার হাসপাতালে আহত এক যুবকের মৃত্যুর গুজবে ভর করে এক দল লোক চড়াও হয় কালিখোলা গ্রামের হিন্দুপাড়ায়। শুরু করে লুটপাট। নির্বিচারে ঘরবাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। নিমিষে ভস্মীভূত হয়ে যায় বাড়িঘর, ধান এমনকি গোয়ালে বাঁধা গরু। পাশাপাশি দুটি গ্রামের দুই দল যুবকের মধ্যে খেলা নিয়ে বচসা অস্বাভাবিক কিছু নয়। এটিকে তারুণ্যের স্বভাবসুলভ আচরণ হিসেবেও ধরা যায়। কিন্তু তা শেষ পর্যন্ত খুনোখুনিতে রূপান্তরিত হওয়া দুর্ভাগ্যজনক। পুলিশ খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিনজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে। কিন্তু পরদিন আহত একজন মারা গেছে এ গুজবকে সম্বল করে একদল লোক হত্যা মামলার আসামিসহ গ্রামের হিন্দুদের বাড়িতে যেভাবে চড়াও হয়েছে তা বর্বরতার শামিল। হত্যার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সন্দেহভাজনরা হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক এ বিবেচনায় যারা হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে তারা প্রকারান্তরে বাংলাদেশের মানুষের অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে আঘাত করেছে। দুটি গ্রামের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করা সত্ত্বেও কেন পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়নি তা একটি বিবেচ্য বিষয়। উত্তেজনা প্রশমনে পুলিশ প্রশাসনের আন্তরিকতার অভাব যে ছিল না তার প্রমাণ মেলে খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ত্বরিত গ্রেফতারের ঘটনায়। কিন্তু সংশ্লিষ্ট এলাকার নিরাপত্তা রক্ষায় মাত্র চারজন পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকায় দলবদ্ধ লোকজনের হামলা মোকাবিলায় তারা কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি। আশার কথা, উপদ্রুত এলাকায় পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। ঘটনা তদন্তে গঠিত হয়েছে তদন্ত কমিটি। সম্প্রীতি রক্ষায় নেওয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। আমরা আশা করব লুটপাট ও অগি্নকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণে প্রশাসন যথাযথ উদ্যোগ নেবে। যারা আইন হাতে তুলে নেওয়ার অপচেষ্টা চালিয়েছে সে দুর্বৃত্তদের আইনের আওতায় আনারও পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।