আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ডায়াবেটিস ও মাড়ির জটিলতা**

ডায়াবেটিস রোগটির সঙ্গে মাড়ির রোগের সম্পর্ক এখন প্রতিষ্ঠিত সত্য। ইতোমধ্যে বৈজ্ঞানিক গবেষণায় বেশ উল্লেখযোগ্য মিল খুঁজে পাওয়া গেছে। একজন ডায়াবেটিস রোগীর মুখের ভেতরে নানান ধরনের রোগ হতে পারে, যেমন- ডেন্টাল ক্যারিজ, মাড়ির রোগ, মুখের বিভিন্ন ধরনের সাদা ঘা, দাঁতের ক্ষয়, কোষ প্রদাহ, অাঁকাবাঁকা দাঁত ইত্যাদি। এ সব রোগ দাঁতের বা মুখের অসুস্থতার কারণেই শুধু নয়, দেহের অন্য কোনো রোগ, অপুষ্টি বা বিপাকজনিত কারণেও হতে পারে। মুখের রোগগুলোর মধ্যে ডেন্টাল ক্যারিজ ও মাড়ির প্রদাহই পৃথিবীর সব দেশে বেশি। আমরা জানি, দেহে রক্তপ্রবাহের কাজ হচ্ছে কোষে অঙ্েিজন ও অন্যান্য উপকরণ বহন করা ও অবশিষ্ট বাজে অংশ বের করে আনা কিন্তু ডায়াবেটিসের কারণে রক্তপ্রবাহগুলো চিকন বা সরু হতে থাকে। ফলে দেহে রক্তের স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হয়। সেইসঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে যায়। এই সময়ে মাড়িতে কোনো আঘাত লাগলে প্রদাহ দেখা দেয়। তা ছাড়াও আগের কোনো মাড়ির রোগ থাকলে মাড়ির সংক্রমণ আরও বৃদ্ধি পায়। একজন ডায়াবেটিকের যদি রক্তের শর্করা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকে তবে তার আগের ধারণকৃত ডেন্টাল প্লাকের কারণে প্রদাহটি আরও বাড়তে থাকে, ফলে ডায়াবেটিকদের মাড়ির এই প্রদাহজনিত রোগ অনিয়ন্ত্রিত অবস্থায় বেশি দেখা যায়। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের জন্য সৃষ্ট যেমন পাঁচটি জটিলতা ইতোমধ্যে চিহ্নিত করা হয়েছে। তার মধ্যে সাম্প্রতিক গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী মাড়ির এই রোগকে ষষ্ঠ জটিলতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।

মাড়ির প্রদাহ বেশি হওয়ার কারণ হলো_ দেহে ইনসুলিন ঘাটতি হলে আমিষেরও ঘাটতি হয়, ফলে কোষকলার স্বাভাবিক বৃদ্ধি, সংস্কার ও উৎপাদন ব্যাহত হয়। তাই মুখের কোনো স্থানে ঘা হলে ও প্রদাহ থাকলে শুকাতে বিঘ্ন ঘটে। দেহে রোগ প্রতিরোধ শক্তি কমে আসে, ফলে দাঁতের গোড়ায় প্লাক জমা থাকলে সহজেই মাড়ির প্রদাহ শুরু হয়। ডায়াবেটিস রোগীদের দন্তক্ষয় বা ডেন্টাল ক্যারিজ রোগ হতে পারে। তার কারণ হিসেবে বিজ্ঞানীরা উল্লেখ করেছেন_ ক. মুখের লালার সঙ্গে গ্লুুকোজ মুখে এক ধরনের অণুবীক্ষণিক জীবাণুুর সঙ্গে মিশে অম্ল বা এসিড তৈরি করে। এই অম্ল দাঁতের শক্ত আবরণ এনামেলকে ক্ষয় করতে থাকে এবং ধীরে ধীরে দাঁতের ভেতরে গর্তের সৃষ্টি করে। খ. মুখের লালার স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হয় এবং পরিমাণ কমে যায়, ফলে মুখের অতিরিক্ত শুকনো পরিবেশে আহারের কণাগুলো ধুয়ে মুছে যেতে পারে না। এই খাদ্যকণাগুলো দাঁতের গায়ে বা ফাঁকে জমে থেকে দাঁতের ক্ষয়রোধের পরিবেশ সৃষ্টি করে।

দাঁত বা মুখের যত্নের সতর্কীকরণ ইঙ্গিত : প্রথমেই ডায়াবেটিস রোগটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করা প্রয়োজন। রক্তের শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখাই হচ্চে দাঁত ও মাড়ির রোগ প্রতিরোধের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ। প্রতি ছয় মাস অন্তর একজন ডেন্টাল সার্জনকে দিয়ে পরীক্ষা করা প্রয়োজন। ডেন্টাল সার্জনকে অবশ্যই ডায়াবেটিসের কথা বলে রাখবেন। লেখক : অনারারী সিনিয়র কনসালটেন্ট ডেন্টিস্ট্রি বিভাগ, বারডেম। ফোন : ০১৮১৯২১২৬৭৮

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.