দুষিছে সবাই, আমি তবু গাই শুধু প্রভাতের ভৈরবী!
মারাত্নক দুশ্চিন্তায় পরেছে রুশো। ওরা ওকে জ্বালিয়ে শেষ করে দিচ্ছে। দিন কিংবা রাত, বাসা কিংবা বাহির সব সময় ওকে ফলো করছে। ওদের ভাবনা চিন্তা কখনই রুশোর সাথে মিলবে না। আপাতত দৃষ্টিতে ওদের ভাল মনে হতে পারে, কিন্তু চার্লির সাথে কি করল? চার্লি রুশোর পোষা কুকুর।
ওদের কে দেখলেই চিৎকার করে উঠত অবলা জীবটা । সেদিন রাতে চার্লির বাড়াবাড়ি টা ছিল বেশিরকমের। ফলাফল ঘাড় মটকে পরেরদিন সিড়িতে পরে থাকলো কুকুরটা। নির্দয় ভাবে মেরে ফেলা হয়েছে। ফ্ল্যাটের দারোয়ানের হাতে টাকা গুজে চার্লির সৎকার করে ফেলে সে।
কিন্তু কতদিন?
গতকাল যা ঘটলো, এরপর কি নিজে রুশো রেহাই পাবে। অফিসে রুশোর ইমিডিয়েট বস শাকিল সাহেব আচ্ছামত অপমান করে রুশোকে। দোষ রুশোর ছিল, লাঞ্চ টাইমে বাহিরে প্রায় ঘন্টা দুয়েক কাটাই সে। এরপর নিজের চেয়ারে বসে ছিল রুশো। কিন্তু কিছুক্ষন পর সবার হইচই শুনে ছুটে যায়।
পরে আছে শাকিল সাহেব তার চেম্বারের এক কোনে। মুখ দিয়ে গলগল রক্ত। কে যেন বলে উঠল স্ট্রোক, হাসপাতালে নিয়ে যান। রুশো ছুটে বের হয়ে আসল সেখান থেকে, হাসপাতালে নিয়ে যেয়ে লাভ নাই। রুশো জানে এটা ওদের কাজ।
ওদের কে ডেকেই ভুল করেছিল সে। সেদিন রাতেই মারা যায় শাকিল সাহেব।
নিজের ফ্ল্যাটে বসে আছে রুশো। একা। বুঝতে পারছে, চারপাশে ওরা আছে।
রুশোর দাদু প্রফেসর আসলাম সাহেব থাকলে এত কিছু হত না। কিন্তু আসলাম সাহেব আত্নহত্যা করেছিলেন। আর ওর দাদুর লিখা সেই ডায়েরিটা অনুযায়ী কাজ করতে যেয়ে এই অবস্থা আজকে। কিন্তু ওর ভয় অন্যদিকে। কিছুক্ষন আগেই নীলা ফোন দিয়ে সম্পর্ক টা ভেঙ্গে ফেলেছে।
রুশো বুঝতে পারছিল কানাডা প্রবাসীর কাছ হতে অফার আসলে কেউ থেমে থাকে না। আজকে আনুষ্ঠিক ভাবে ব্রেক আপটা হল। কিন্তু ওদের একজন সম্ভবত ছুটে যাচ্ছে নীলার কাছে। নীলার একই অবস্থা হবে। রুশোর চারপাশ ঘিরে যারা ওর সামান্য সমস্যা করবে, ওরা ওদের কাউকে বেঁচে থাকতে দিবে না।
এইভাবে চলে? কিছুক্ষন পর হয়ত নীলার খবর টা আসবে মোবাইলে। তার আগে কিছু করতে হবে। মাথা খাটাও রুশো...
রুশো পরিষ্কার বুঝতে পারলো কেন ওর দাদু আত্নহত্যা করেছিল। তিনিও ওদের কে ডেকেছিলেন। কিন্তু তিনি জানতেন এর পরিনাম।
তাই সঙ্গে সঙ্গে... রুশো কেও একই কাজ করতে হবে। এখনই। ছুটে গেল ধারালো ব্লেড টা নিতে। বুঝতে পারছে ওরা ওকে আটকাতে চাচ্ছে। রুশো থামবে না।
ওহ এতক্ষন রুশো তো ওদের পরিচয় দেয়নি। সাধারন মানুষ এদের কে প্রেতাত্মা বলে। রুশোর দাদুর মতে এরা সবচেয়ে ভয়ংকর প্রেতাত্মা। যাদের ক্ষমতা অনেক বেশি। স্বয়ং লুসিফার এদের কে এড়িয়ে চলে।
রুশোর দাদু আর রুশো দুজনই এদের কে ডেকে ফেলেছিল।
পরিশিষ্টঃ সেদিন রাতে কি এক ভয়ানক রোগে নীলা কে হাসপাতালে নিয়ে যায় ওর পরিবারের লোকজন। কিন্তু কিভাবে শেষ মুহুর্তে সে সুস্থ হয়ে উঠে। দুদিন পর ফ্ল্যাটের লোকজন দরজা ভেঙ্গে বের করে রুশোর লাশ। আত্মহত্যা করেছে সে।
তদন্ত চলছে। রুশো জানতো না যে ওর দাদু আরেক জায়গায় লিখে রেখেছিল যে এই প্রেতাত্মা গুলোর সমাপ্তি যে ডেকেছে তার মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে ঘটে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।