আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইভটিজিং- সমাধানে ইসলামের নির্দেশনা



ইভটিজিং একটি সামাজিক ব্যাধি ও জাতীয় কলঙ্ক। আমাদের সমাজে এখন তা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। সকলেই নিজ নিজ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে এর প্রতিকার নিয়ে ভাবছেন। আইন হচ্ছে, শাস্তি হচ্ছে, মিছিল- মানববন্ধন হচ্ছে। পত্রিকাগুলোতে কলাম, ফিচার লেখা হচ্ছে, টিভি প্রতিবেদন হচ্ছে।

সকলেই চান জাতিকে এই কলঙ্ক থেকে মুক্ত করতে। আগেই বলেছি, সকলে নিজ নিজ দৃষ্টি থেকে এর প্রতিকারের কথা ভাবছেন। কেউ একটি মত পেশ করছেন, অন্যজন তা খন্ডন করে আরেকটি পথ বাতলাচ্ছেন। এসকল মতামতের সাথে আমি আমার কোনো মত যোগ করতে চাই না। কারণ মানুষ দুর্বল, তার চিন্তা -ভাবনা পরিবেশ ও পারিপার্শ্বিকতা দ্বারা প্রভাবিত।

ফলে তার চিন্তা- ভাবনাও দুর্বল ও অসম্পূর্ণ। তাই স্রষ্টার দেয়া সমাধান তুলে ধরাই আমার এ প্রবন্ধের উদ্দেশ্য। তিনিই তো সৃষ্টি করেছেন নারী ও পুরুষ। তাদেরকে দিয়েছেন ভালো ও মন্দ স্বভাব। সুতরাং তাঁর নিকট থেকেই নির্দেশনা নিতে হবে; ভালো স্বভাবকে কীভাবে কাজে লাগানো যায় এবং মন্দ স্বভাব থেকে কীভাবে বেঁচে থাকা যায়।

আর তার কাছ থেকেই জানা দরকার কোন্ রোগের নিরাময় কিসে। কীভাবে আমরা বাঁচতে পারব ইভটিজিং এবং এ জাতীয় সামাজিক অবক্ষয় থেকে। ইসলাম নারীর মর্যাদা ও নিরাপত্তার সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ইসলাম নারীর মর্যাদা ও নিরাপত্তার সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে এবং এ জাতীয় সমস্যার সমাধানে আল্লাহ তাআলা নারী পুরুষ উভয়কে কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন, যা মেনে চললে আমরা ইভটিজিং এবং সামাজিক আরো অনেক সমস্যা থেকে বাঁচতে পারব ইনশাআল্লাহ্। এ সকল নির্দেশনার মূলকথা হলো, আল্লাহ পুরুষকে তার দৃষ্টি অবনত রাখতে বলেছেন এবং এমন সব কাজ থেকে বিরত থাকতে বলেছেন, যা তার অন্তরে অন্যায়ের উদ্রেক ঘটায়। পুরুষ যদি তার দৃষ্টি অবনত রাখে তাহলে ইভটিজিংয়ের আবেদনই সৃষ্টি হয় না।

তেমনি নারীকেও বলেছেন তার দৃষ্টি অবনত রাখতে, যাতে তার মনেও পুরুষকে দেখে কোনো কুমন্ত্রণা না আসে এবং নারীকে আরও বলেছেন, সে যেন তার সৌন্দর্য্য ও সাজসজ্জা পর- পুরুষের সামনে প্রকাশ না করে। নারী পুরুষ উভয়েই যদি স্রষ্টার এই নির্দেশনা মেনে চলে তাহলেই পুরুষ বাঁচবে এ অন্যায় থেকে এবং পুরুষের মা-বোন নারী বাঁচবে জুলুম থেকে। নারীর অবস্থানস্থল ও কর্মস্থল এরপর প্রথম কথা হল, নারীর অবস্থানস্থল ও কর্মস্থল ঘর। এখানে বসেই নারী একটি সৎ ও যোগ্য জাতি নির্মাণের দায়িত্ব পালন করে। এখানেই সে বেশি নিরাপদ।

সুতরাং এ কথা ভাবার কোনো অবকাশ নেই যে, যে নারী ঘরে বসে এ মহান দায়িত্ব পালন করছে,সে জাতির উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারছে না। সুতরাং ঘরের বাইরের উন্নয়নেও তাকে অংশগ্রহণ করতে হবে। জাতির উন্নয়নের দুই ক্ষেত্র : ঘর ও বাহির। এ দুইয়ের একটি ক্ষেত্র যখন খালি ও গুরুত্বহীন হয়ে পড়বে তখন অপর ক্ষেত্রে শত চেষ্টা করেও উন্নতি লাভ সম্ভব হবে না। মানবোন্নয়নই নারীর প্রধান কাজ; কোম্পানির পণ্য উৎপাদন নয়।

প্রয়োজনে যদি নারীকে ঘর থেকে বের হতে হয় আর প্রয়োজনে যদি তাকে ঘর থেকে বের হতে হয় তাহলে সে যেন জাহেলী যুগের নারীদের মত নিজেকে প্রদর্শন না করে। কারণ নারীর নিরাপত্তাহীনতার প্রথম কারণ হল নিজেকে অশালীনভাবে মানুষের সামনে পেশ করা। আল্লাহ তায়ালা বলেন- ﻭ ﻗﺮﻥ ﻓﻲ ﺑﻴﻮﺗﻜﻦ ﻭﻻ ﺗﺒﺮﺟﻦ ﺗﺒﺮﺝ ﺍﻟﺠﺎﻫﻠﻴﺔ ﺍﻷﻭﻟﻰ، ﻭ ﺃﻗﻤﻦ ﺍﻟﺼﻼﺓ ﻭ ﺁﺗﻴﻦ ﺍﻟﺰﻛﺎﺓ ﻭ ﺃﻃﻌﻦ ﺍﻟﻠﻪ ﻭ ﺭﺳﻮﻟﻪ، ﺇﻧﻤﺎ ﻳﺮﻳﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﻟﻴﺬﻫﺐ ﻋﻨﻜﻢ ﺍﻟﺮﺟﺲ ﺃﻫﻞ ﺍﻟﺒﻴﺖ ﻭ ﻳﻄﻬﺮﻛﻢ ﺗﻄﻬﻴﺮﺍ. ﻭ ﺍﺫﻛﺮﻥ ﻣﺎ ﻳﺘﻠﻰ ﻓﻲ ﺑﻴﻮﺗﻜﻦ ﻣﻦ ﺁﻳﺎﺕ ﺍﻟﻠﻪ ﻭ ﺍﻟﺤﻜﻤﺔ، ﺇﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﻛﺎﻥ ﻟﻄﻴﻔﺎ ﺧﺒﻴﺮﺍ. আর তোমরা স্বগৃহে অবস্থান কর। আর প্রাকজাহেলী যুগের মত নিজেদের প্রদর্শন করো না। তোমরা সালাত কায়েম কর, যাকাত দাও এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূলের অনুগত থাক।

হে নবী- পরিবার! আল্লাহ তো তোমাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করতে চান এবং তোমাদেরকে সম্পূর্ণরূপে পবিত্র করতে চান। আর তোমাদের ঘরে আল্লাহর আয়াত ও যে জ্ঞানের কথা আলোচনা হয় তা স্মরণ রাখ। আল্লাহ অতি সূক্ষ্মদর্শী ও সব বিষয়ে অবহিত। -সূরা আহযাব : ৩৩-৩৪

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.