আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শিরোপা ফিরে পেল শেখ জামাল

গত মৌসুমে প্রথম যখন নাম লেখান শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রে, তখন কেউ মাথা ঘামায়নি সনি নর্দেকে নিয়ে। প্রতিপক্ষ দলগুলোরও আলাদা কোনো পরিকল্পনা ছিল না তাকে ঘিরে। অন্য আট-দশজন বিদেশি ফুটবলারের মতোই বরণ করেছে তাকে। কিন্তু সময় যত গড়িয়েছে, ছোট্ট দেশের ছোটখাটো স্ট্রাইকারটি ততই আলো ছড়িয়েছেন। আলোকিত করেছেন বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের সবুজ ঘাসের চত্বরকে।

মন জয় করার ফাঁকে ফাঁকে স্টেডিয়ামমুখী করতে থাকেন ফুটবলপ্রেমীদের। বিশ্বসেরা ক্লাব বার্সেলোনার একাডেমির নর্দে গত মৌসুমে প্রতিপক্ষকে দুমড়েমুচড়ে একাই তিন-তিনটি শিরোপা উপহার দেন শেখ রাসেলকে। সেই নর্দে এবার তাঁবু পাল্টে নাম লেখান শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবে। গেলবার যে আলোর নাচন ছড়িয়েছিলেন, এবারও সেটা অব্যাহত। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের সবুজ ঘাসের চত্বরে চাতুর্যপূর্ণ ফুটবল খেলে মৌসুমের প্রথম শিরোপা উপহার দিয়েছেন শেখ জামালকে।

টানা চার বছর ফেডারেশন কাপের ফাইনাল খেলা শেখ জামালকে দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা উপহার দিয়েছেন তিনি। গতকাল ফাইনালে নাসিরের গোলে জামাল হারিয়েছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদকে। গোল না পেলেও টুর্নামেন্ট সেরা নর্দেই ছিলেন গোলটির স্রষ্টা।

জোসেপ আপুচির কোচিংয়ে শেখ জামাল টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই পাসিং ফুটবল খেলছে। অন্যদিকে শফিকুল ইসলাম মানিকের কোচিংয়ে মুক্তিযোদ্ধার খেলার ধরন অনেকটাই রক্ষণাত্দক।

চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইতালির মতো কাউন্টার অ্যাটাকনির্ভর। গতকাল রক্ষণাত্দক ভঙ্গিতেই খেলা শুরু করে মুক্তিযোদ্ধা। বিশেষ করে জামালের নর্দেকে আটকাতে আলাদা ফর্মেশন তৈরি করেন মানিক। ৮৩ মিনিট পর্যন্ত সফলও ছিলেন। যদিও বেশ কয়েকবার মুক্তির রক্ষণভাগ ভেঙেছেন হাইতিয়ান স্ট্রাইকার।

কিন্তু গোলের দেখা পাননি। এর অন্যতম কারণ, মুক্তির গোলরক্ষক রাসেল মামুন লিটনের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স। মুক্তির রক্ষণাত্দক ফুটবলের মাঝেই প্রথম আক্রমণে যায় জামাল। পঞ্চম মিনিটে জামালের রক্ষণভাগের রায়হান হাসান লম্বা পাস দেন নর্দেকে। নর্দে সেটা ধরে শট নিলেও গোলবারের বাইরে দিয়ে চলে যায়।

১৬ মিনিটে আচমকা কাউন্টার অ্যাটাকে গোল পেয়ে যেতে বসেছিল মুক্তি। বাঁ প্রান্ত থেকে মুক্তির স্ট্রাইকার এনকোচা কিংসলে প্লেসিং শট করেন জামালের গোলবার লক্ষ্য করে। গোলরক্ষক জিয়াউর রহমান ঝাঁপ দিয়ে তা রক্ষা করেন। ৩৪ মিনিটে জামালের নাইজেরিয়ান ফুটবলার আবদুল্লাহ হেড করেন নর্দের ফ্রি কিকে। কিন্তু বল গোলবারের দেখা পায়নি।

প্রথমার্ধ গুটিকয়েক আক্রমণেই শেষ হয়ে যায়। ছুটির দিনে ফাইনাল দেখতে আসা দর্শকদের মন ভরেনি প্রথমার্ধের খেলা দেখে।

দ্বিতীয়ার্ধে দুই দলই গোলের জন্য মরিয়া হয়ে খেলতে থাকে। প্রথমার্ধ যদি জামালের দখলে থাকে, তাহলে দ্বিতীয়ার্ধের অধিকাংশ সময়ই ছিল মুক্তির দখলে। যদিও আক্রমণ তেমন ধারাল ছিল না।

৫৬ মিনিটে এনকোচার বাড়ানো বল ধরে বিপ্লব ফাঁকায় দাঁড়ানো এলিটা কিংসলেকে দেন। কিংসলের শট নিলেও সেটা সরাসরি গোলরক্ষক জিয়ার হাতে পেঁৗছায়। ওই আক্রমণের পর মধ্যমাঠেই আনাগোনা করেছে বল। ৮৩ মিনিটে আরাধ্য গোলের দেখা পায় শেখ জামাল। বাঁ প্রান্ত থেকে কর্নার করেন নর্দে।

মুক্তির রক্ষণভাগের ফুটবলারদের ফাঁকি দিয়ে বলটি যখনই ছোট বক্ষের মাঝে এসে দাঁড়ায়, তখনই জামালের রক্ষণভাগের নাসির উদ্দীন চৌধুরী লাফিয়ে হেডে জালে পাঠান। ওই গোলের পর শেখ জামাল রক্ষণভাগকে জোরালো করে তুলে। এর পর আর গোল হয়নি। দ্বিতীয়ার্ধে খেলা বন্ধ ছিল কিছু সময়। তাই খেলা অতিরিক্ত ৫ মিনিট হয়।

কিন্তু সেখানেও আর কোনো গোলের দেখা মেলেনি। তাই রেফারি মিজানুর রহমান শেষ বাঁশি বাজানোর সঙ্গে সঙ্গেই শিরোপা জয়ের নায়ক সনি নর্দেকে কাঁধে নিয়ে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে শেখ জামালের ফুটবলাররা। জামাল এর আগে ২০১১ সালে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ফেডারেশন কাপে। মুক্তিযোদ্ধা শেষবারের মতো শিরোপা জিতে ২০০৫ সালে।

 

 



অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.