মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ হত্যা ও ধর্ষণের দায়ে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুর কাদের মোল্লাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ১০টা ১ মিনিটে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে তার মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর হয়। জামায়াতের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা আবুদল কাদের মোল্লার বিচার শুরু হয় ২০১২ সালের ২৮ মে। চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করলে তরুণদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। ফাঁসির দাবিতে গড়ে ওঠে আন্দোলন। এ আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন সংশোধন করা হয়। সংশোধনীতে ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের পাশাপাশি বাদী পক্ষের আপিলের সমান সুযোগ নিশ্চিত করা হয়। আপিল বিভাগের রায়ে মুক্তিযুদ্ধকালে হজরত আলী লস্করসহ পরিবারের পাঁচ সদস্যকে হত্যা ও মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে আবদুল কাদের মোল্লাকে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়। আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসিতে স্বস্তি প্রকাশ করেছে ভুক্তভোগীরা। অন্যদিকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে জামায়াতে ইসলামী এবং এর সহযোগী সংগঠন ছাত্রশিবিরের জঙ্গি কর্মীরা। তারা মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর করার আগে থেকেই সহিংস প্রতিবাদ জানাচ্ছিল। ফাঁসির পরও তা অব্যাহত রয়েছে। অন্তর্ঘাতের আশঙ্কা এড়াতে সারা দেশে রেল যোগাযোগ স্থগিত করা হয়েছে। নেওয়া হয়েছে বহুমাত্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধকালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পাশাপাশি তাদের এ দেশীয় দোসররা মুক্তিকামী মানুষের ওপর গণহত্যা চালায়। বাড়িঘরে অগি্নসংযোগ, মুক্তিযুদ্ধকালে লুটপাটসহ পৈশাচিক কায়দায় নির্যাতন চালায় ঘাতক দালালরা। আবদুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি কসাই কাদের নামে পরিচিত ছিলেন। এই জামায়াত নেতার মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর করার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে কাউকে সর্বোচ্চ শাস্তি পেতে হলো। মুক্তিযুদ্ধের চার দশক পর নেতৃস্থানীয় ঘাতক দালালদের বিচারের সম্মুখীন করতে সরকার যে বদ্ধপরিকর তা স্পষ্ট হলো। ঘাতক দালালদের শাস্তি নিশ্চিত না করার যে কলঙ্ক চার দশক ধরে বাঙালি জাতির কপালে লেগে ছিল তা মুছে ফেলা সম্ভব হলো।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।