নিজস্ব প্রতিবেদক
জানুয়ারিতে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করতে না পারায় আগামী এপ্রিল-মে মাসে তিন ধাপে সারা দেশে তালিকা হালনাগাদের পরিকল্পনা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এ হালনাগাদে ভোটার তালিকা থেকে বাদ যাবেন মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিতরা।
ইসি সূত্র জানিয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ১৮ বছর বয়সীদের ভোটার তালিকাভুক্ত করতে এপ্রিল-মে মাস থেকে তিন ধাপে কার্যক্রম নেবে ইসি। প্রতি বছর জানুয়ারিতেই ১৮ বছর বা তদূধর্্ব ব্যক্তিদের ভোটার তালিকাভুক্ত করার বিধান রয়েছে। কিন্তু উপজেলা নির্বাচন থাকায় 'সুবিধাজনক' সময়ে এ হালনাগাদ কার্যক্রম নেওয়া হচ্ছে।
ইসির জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের তত্ত্বাবধানে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান করা হয়। ২০১৪ সালের ১ জানুয়ারিতে ১৮ ও তার বেশি বয়সী নতুন ভোটার এবং আগে বাদ পড়াদের অন্তর্ভুক্তির পাশাপাশি স্থানান্তর, সংশোধন ও মৃতদের বাদ দিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হবে।
২২ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারক প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে এক আনঅফিশিয়াল (ইউও) নোটে লেখেন_ ১৫ মে থেকে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে হালনাগাদের কাজ সম্পন্ন করা যেতে পারে। এ পরিপ্রেক্ষিতে হালনাগাদের কর্মপরিকল্পনা নেওয়া হবে বলে জানান ইসির এক কর্মকর্তরা। তিনি বলেন, একটা নোট পেয়েছি আমরা। তিন ধাপে কাজ শেষ করার কথা রয়েছে। এ-সংক্রান্ত প্রস্তাব কমিশন সভায় পর্যালোচনা করা হবে। কমিশনের অনুমোদনসাপেক্ষে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ জেলা-উপজেলা, সিটি-পৌরসভা এলাকাভিত্তিক, কখন, কোথায়, কী কর্যক্রম নেওয়া হবে তা চূড়ান্ত করবে বলে জানান এই কর্মকর্তা। ইসি কর্মকর্তারা জানান, বর্ষা মৌসুম সামনে রেখে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রথম ধাপে উপকূল ও হাওর এলাকা; দ্বিতীয় ধাপে মফস্বল শহর এলাকা ও শেষ ধাপে সিটি করপোরেশন এলাকাকে বাছাই করা হতে পারে। এ ক্ষেত্রে ভোটারদের তথ্য সংগ্রহ, ছবি তোলা ও আঙুলের ছাপ নেওয়া; তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের সময় নির্ধারণ করা হবে এবং খসড়া তালিকা তৈরির পর তালিকা চূড়ান্ত করা হবে। ভোটার তালিকা প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানান, চলমান প্রক্রিয়া হিসেবে ভোটারযোগ্যরা বছরব্যাপী তালিকাভুক্ত হচ্ছেন। দেশে এসে প্রবাসীরাও ভোটার হচ্ছেন। তবে ভোটের সময়ে স্থানান্তরসহ কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ রাখা হয়। ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩১ মার্চের মধ্যে উপজেলার ভোট শেষে তা উন্মুক্ত হয়ে যাবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে ২০০৭ সালে গাজীপুরের শ্রীপুরে পাইলট প্রকল্প দিয়ে ছবিসহ ভোটার তালিকা কার্যক্রম শুরু হয়। ২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে ভোটার তালিকায় নাম ছিল ৮ কোটি ১০ লাখ ৫৮ হাজার ৬৯৮ জনের। ২০০৯-১০ সালের হালনাগাদের পর ভোটার সংখ্যা দাঁড়ায় ৮ কোটি ৫৭ লাখ ৭৪৭ জন। এর আগেও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের কারণে পরের দুই বছর তা সম্ভব হয়নি। দশম সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে চার ধাপে গেল বছর তিন বছরের (২০১১-২০১৩) ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ একসঙ্গে সম্পন্ন করা হয়। এতে প্রায় ৭০ লাখ ১৭ হাজার ৫২১ জন নতুন অন্তর্ভুক্ত (পুরুষ ৪১ লাখ ৯১ হাজার ২০৬ ও নারী ২৮ লাখ ২৬ হাজার ৩১৫) হয়েছে। এ পুরো কার্যক্রমে মৃত ৭ লাখ ৪১ হাজার ৬৯ জন বাদ পড়ে। বর্তমানে ৯ কোটি ১৯ লাখের বেশি ভোটার রয়েছে। ইসি কর্মকর্তারা জানান, বছরওয়ারি হিসাবে প্রতিবারের মতো এবারও ২০ লাখের বেশি ভোটার নতুন করে তালিকাভুক্ত হতে পারে। প্রায় ১৬ কোটি জনসংখ্যা হিসাবে নতুন ভোটারদের নিয়ে এ বছর মোট জনসংখ্যার অন্তত ৫৮ শতাংশ ভোটার হবে।
বাদ যাবেন যুদ্ধাপরাধীরা : একাত্তরের মানবতাবিরোধী দণ্ডিত অপরাধী ও দালালদের এ হালনাগাদের সময় ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে বলে জানান ইসি কর্মকর্তা। সংশোধিত নতুন আইন অনুযায়ী তাদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে ফাঁসি হয়েছে আবদুল কাদের মোল্লার। তার নামও হালনাগাদের সময় বাদ দেওয়া হবে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।