আমার টিভি দেখা হলো একটার পরে একটা চ্যানেল বদলে যাওয়া, এভাবে কিছু ভালোলাগলে খানিক থেমে যাওয়া। গতরাতে একটা অনুষ্ঠানে থমকে গেলাম। স্ট্যানর্ফোড বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্রাইট স্টুডেন্টেদের প্রজেক্ট। অনুন্নত দেশের দরিদ্র মানুষকে সাহায্য করার জন্য অল্প খরচে তারা কোন প্রকল্প উপস্থাপন করতে পারবে তার মেধা বিবেচনা চলছে। ছাত্রছাত্রীরা উপস্থাপন করেছে তাদের সাধ্য এবং ইচ্ছা ও বিশেষত্ব মতন প্রজেক্ট।
বেঁধে দেয়া সময়ে প্রাথমিক উপস্থাপনায় নতুনত্ব এবং সঠিক প্রয়োগের ব্যবহার দেখিয়ে শিক্ষকদের পছন্দে উত্তির্ণ হতে পারলে অন্যদেশে প্রকল্প নিয়ে যাওয়ার সুযোগ আসবে। তাদের টেনশনের সাথে মিশে রইলাম খানিক। সব দেশের সব সংস্কৃতির ছাত্রছাত্রী মিলে মিশে একাকার। তাদের মধ্যে কোন দেশ বা নারী পুরুষের প্রভেদ দেখলাম না। তারা শুধুই আবিষ্কারের নেশায় মত্ত।
ছয়টি দল মনোনীত হলো। সেখানে একটি বাংলাদেশের মেয়েকেও দেখা গেলো। কাকতালীয় ভাবে যে সুযোগ পেলো বাংলাদেশে যাওয়ার তার দল নিয়ে।
তাদের দল তৈরী করল মৃত্যুমুখি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত বাচ্চাদের সহজে শ্বাস নেওয়ার একটি ডিভাইস। ইন্দোনেশিয়ার গ্রামের মানুষের পানি সংরক্ষনের ব্যবস্থা করতে গেলো আরেকটি দল।
বিভিন্ন তাদের উপস্থাপনা শুরুটা তো আমি দেখি নাই। ভালোলাগল মেধাবীদের সাথে থাকা। এক বছর সেই সব দেশে থেকে কাজ করে তারা তাদের প্রজেক্ট জমা করল।
অনুষ্ঠান শেষ হলো রান্না ঘরে যাচ্ছিলাম হঠাৎ করে ”বসন্ত বাতাসে সই গো বসন্ত বাতাসে” গান শুনে ঘুরে দাঁড়ালাম। আমি তো কোন গান চালাইনি ঘরে তবে গান শুনা যায় কোথা থেকে।
টিভির ঐ অনুষ্ঠানেই বাংলা গান হচ্ছে। নাম পরিচয়ের সময়ে বাজছে বাংলা গান। এক নিমিশে উপলব্ধির মাত্রা বদলে গেলো অন্য রকম ভালোলাগায়। যার বর্নণা দেয়া যায় না। শুধু অনুভবে ভালোলাগায় জড়িয়ে ধরে।
অনুষ্ঠানে জুড়ে দেয়া হয়েছে শাহ আব্দুল করিমের গান, কায়ার গাওয়া । যেন গোটা দেশটা পৃথিবীর সাথে মিলে গেলো মনে হলো।
এই তারুণ্য একটার পর একটা নতুন উদভাবনী নিয়ে আসছে পৃথিবীতে মানুষের সাহায্যে।
কিছুদিন আগে দেখেছিলাম বান্দরবন এলাকায় পাহাড়ি ঘরবাড়িতে রাতের বেলা আলোর মেলা এখন। অন্ধকারে তাদের আর আকাশের তারা গুনতে হয় না।
কুপির বাতির তেলের হিসাব করতে হয়না। সোলার প্যানেলের আলোয় ঘরবাড়ি আলোকিত। বাচ্চারা পড়া লেখা করছে। বড়রা তাঁত বুনছে। পেয়েছে রাতের বেলায় বাড়তি কাজের সুযোগ।
এই সোলার প্যানেল প্রযুক্তিও এই সব ব্রিলিয়ান্টেদের আবিষ্কার দু হাজার বারো সালের। যার আলোতে আলোকিত হয়েছে পৃথিবীর বেশ কয়েকটি দেশের দরিদ্র মানুষের ঘর। সুযোগটি বাংলাদেশ সরকার গ্রহণ করছে এবং মানুষের ভালো থাকার উন্নয়ন ধাপ বাড়িয়েছে যা প্রশংসনিয়। এক সময়ের সরকার বাংলাদেশের পাশ দিয়ে যাওয়া আর্ন্তজাতিক ইন্টারনেট সংযোগটি না নিয়ে দেশকে কয়েক বছর প্রযুক্তি থেকে পিছিয়ে রেখেছিল।
বিশ পেরুনো এইসব তারুণ্যের, অত্যাধুনিক আবিষ্কার; দারিদ্রতার অসহায় জীবনে বাস করা মানুষগুলো কে ভালো থাকার ব্যবস্থা করে দিচ্ছে।
উপরন্ত তারা আবেগ আপ্লুত হয়ে পরছে সেই সব মানুষের জীবন যাপন দেখে। শান্তি নোবেল যদি আমার দেয়ার ক্ষমতা থাকত তবে এদের কেই দিতাম। যে টাকায় হয়ত তারা পৃথিবীকে আরো এগিয়ে নিয়ে যেত।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।