আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফরমালিনের দৌরাত্ম

নকল-ভেজালের দৌরাত্দ্য থেকে মানুষ কিছুতেই মুক্তি পাচ্ছে না। ফলমূল, মাছ, মাংস ও খাদ্যদ্রব্যে ফরমালিন ব্যবহারের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযান চালানো হলেও পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি হচ্ছে না। ব্যবসায়ীদের নিবৃত্ত রাখা সম্ভব হচ্ছে না নকল-ভেজালের দুষ্কর্ম থেকে। আতঙ্কগ্রস্ত মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করতে রাজধানীতে গড়ে উঠছে একের পর এক ফরমালিনমুক্ত বাজার। বলা হচ্ছে প্রতিটি পণ্য পরীক্ষা করে এসব বাজারে ঢোকানো হয়।

কিন্তু বাস্তবতা হলো সাধারণ মানুষকে বোকা বানিয়ে তথাকথিত ফরমালিনমুক্ত বাজারেও রাসায়নিক মিশ্রিত পণ্যের বেচাকেনা চলছে। ফরমালিনমুক্ত পণ্য এই অজুহাতে অতিরিক্ত দাম রাখা হলেও ক্রেতারা টাকা দিয়ে কার্যত কিনছেন মৃত্যুপরোয়ানা। ফরমালিন প্রতিরোধে এফবিসিসিআইয়ের উদ্যোগে রাজধানীর বেশ কয়েকটি বাজার কমিটিকে ফরমাল ডিহাইড্রেড মেশিন দেওয়া হয়। ফরমালিন শনাক্তকারী এই মেশিন দিয়ে মাছ, মাংস, শাকসবজি, ফলমূল পরীক্ষা করে তা বিক্রির কথা থাকলেও কোনো বাজারেই সে নিয়ম মানা হয় না। ক্রেতাদের প্রলুব্ধ করতে কথিত ফরমালিনমুক্ত বাজারে দিনের বেলায় যেসব পণ্য আসে সেগুলো বাজারের প্রবেশমুখে পরীক্ষা করা হলেও রাতে যে সব পণ্য আসে তা পরীক্ষা করা হয় না।

চলতি বছরের জুনে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) ঢাকার মৌসুমি ফলে ফরমালিনের ব্যবহার পরীক্ষার জন্য ১০ দিনব্যাপী কর্মসূচি নেয়। এতে ঢাকার ২৯টি এলাকা থেকে সংগৃহীত ফলের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি ৮২ ভাগ আম, ৯১ ভাগ কলা, ১০০ ভাগ মাল্টা, ৫৯ ভাগ আপেল, ৯৫ ভাগ আঙ্গুর ও ৭৭ ভাগ খেজুরে ফরমালিনের উপস্থিতি পায়। ফরমালিনের ব্যবহার শুধু মাছ ও ফলেই সীমাবদ্ধ নেই, দুধেও মেশানো হচ্ছে এই বিষাক্ত রাসায়নিক। দীর্ঘ সময় পরও যাতে নষ্ট না হয় সে জন্য দুধে ব্যবহৃত হচ্ছে ক্ষতিকর পদার্থটি। এ ছাড়াও প্যাকেটজাত খাবার যেমন ফলের রস, স্ন্যাকস, জ্যাম-জেলি, আচার-চাটনিতেও ফরমালিন যথেচ্ছভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

সচেতনতা বাড়লেও ফরমালিনের ব্যবহার হ্রাস না পাওয়ার জন্য বোদ্ধাজনরা আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাবকেই দায়ী করছেন। ফরমালিনসহ ক্ষতিকর রাসায়নিক ব্যবহারের বিরুদ্ধে আইন থাকলেও তার যথাযথ প্রয়োগের অভাবে অপরাধীরা যা ইচ্ছা তাই করার সুযোগ পাচ্ছে। জনস্বাস্থ্য জিম্মি হয়ে পড়েছে অসৎ ব্যবসায়ীদের কাছে। এ অবস্থার প্রতিকার ঘটাতে আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত হওয়া দরকার। ফরমালিন ব্যবহারকারীদের কঠোর শাস্তিই তাদের অপরাধপ্রবণতায় বাদ সাধতে পারে।

 

 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।