এই কারণে পোশাক কারখানার ভারী যন্ত্রপাতির সঙ্গে জেনারেটর ব্যবহার ধসকে ত্বরান্বিত করেছিল বলে কমিটির প্রধান জানিয়েছেন।
ফাটল দেখা দেয়ার একদিন পর গত ২৪ এপ্রিল ধসে পড়ে নয়তলা ভবন রানা প্লাজা, যাতে পাঁচটি পোশাক কারখানা ছিল। এই ভবন ধসে চার শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে।
ধস তদন্তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গঠিত কমিটির প্রধান, অতিরিক্ত সচিব মাইন উদ্দিন খন্দকার বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ভবনটি তৈরি হয়েছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণ মিলেছে।
“এছাড়া ভবনের ওপরের কয়েকটি তলায় উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন ভারী জেনারেটর ব্যবহার করা হতো।
এতে ওই ভবনে তীব্র কম্পনের সৃষ্টি হয়। এটাও ভবন ধসের অন্যতম কারণ। ”
রানা প্লাজা ধসে পড়ার সময়েও জেনারেটর চলছিল জানিয়ে মাইন উদ্দিন বলেন, ওইদিন সকাল সাড়ে ৮টায় বিদ্যুৎ চলে যায়। একযোগে কয়েকটি জেনারেটর চালু হয়। যেগুলো ভবনের বিভিন্ন তলায় ছিল।
মাইন উদ্দিন নেতৃত্বাধীন ওই কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছিল। তবে ধসে পড়া ভবনের ধ্বংসমস্তূপ সরানোর কাজ শেষ না হওয়ায় প্রতিবেদন জমা দেয়ার সময় বাড়ানো হবে বলেও জানান কমিটির প্রধান।
সাভারের ভবন ধসের পরপরই গত ২৪ এপ্রিল মাইন উদ্দিনকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের এই কমিটি করা হয়।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- ঢাকা পুলিশ সুপার, আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল পুলিশের পরিচালক, ঢাকা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব/সিনিয়র সহকারী সচিব।
রানা প্লাজার উদ্ধার অভিযান শেষ হওয়ার পরই তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হবে বলে জানান তিনি।
এই পর্যন্ত তদন্তে ‘বেশ’ অগ্রগতি হয়েছে জানিয়ে মাইন উদ্দিন বলেন, “ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য নেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় আটককৃতদের সঙ্গেও কথা বলবো। ”
রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানা, ভবনে থাকা কারখানাগুলোর চার মালিক এবং সাভার পৌরসভার তিন প্রকৌশলীকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ভবন ধসের ঘটনায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটি বৃহস্পতিবার প্রতিবেদন দিয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, রানা প্লাজার নকশা ও লে-আউট প্ল্যান অনুমোদনে সাভার পৌরসভা কর্তৃপক্ষ যথাযথভাবে বিধি-বিধান অনুসরণ করেনি।
এজন্য সাভার পৌরসভার মেয়র ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দায়ী করা হয়েছে। মেয়র রেফাতউল্লাহকে সাময়িক বরখাস্তও করা হয়েছে।
বিভিন্ন স্থানে ফাটল তদন্তে বিশেষ দল
সাভার ভবন ধসের পর দেশের বিভিন্ন এলাকার ভবন ফাটল নিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। এর তদন্তে বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাইন উদ্দিন জানান।
তিনি জানান, সারা দেশের ১৬০টি কারখানায় ফাটল দেখা দিয়েছে বলে বিজিএমইএ’র কাছে বিভিন্ন কারখানা থেকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে।
“রাজউক আওতাধীন এলাকায় কোনো ভবনে ফাটল দেখা গেলে রাজউকের তদন্ত দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তাৎক্ষনিকভাবে তদন্ত প্রতিবেদন দেবে এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। ”
রাজউকের আওতাবহির্ভূত এলাকায় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে একটি উপ-কমিটি করা হবে সংশ্লিষ্ট এলাকায় জেলা প্রশাসকদের নিয়ে।
কোনো ভবন নিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি হলে তাৎক্ষণিকভাবে এ কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন দেবে বলে জানান মাইন উদ্দিন।
তিনি বলেন, কমিটির প্রতিবেদন দেয়ার পর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে ভবন ঝূঁকিপূর্ণ কিনা। যদি ঝুঁকিপূর্ণ হয় তবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এছাড়া বিজিএমইএ সারা দেশে পোশাক কারখানাগুলোর মালিকদের আগামী ৩০ দিনের মধ্যে তাদের ভবন নির্মাণের যাবতীয় কাগজপত্র জমা দিতে বলেছে বলেও জানান মাইন উদ্দিন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।