কোন কাইজ্জ্যার মধ্যে নাই , আম্লীগ, বিমম্পী বুঝিনা, রাজাকার দূরে যা, শিবির তোরা দূরে থাক । দেশে সুশাসন চাই । তবে দেশের বিচারপতি গন হতে হবে পাকি বিচার পতিদের মত ।
প্রাইভেট ভার্সিটির তৃতীয় বর্ষে পড়ে আবুল । হাবুল আর কাবুল , এই দুই জন আবুলের বেস্টি ।
মানে বেস্ট ফ্রেন্ড আর কি । এই দুইজনের আবার গার্ল ফ্রেন্ড আছে । কিন্তু আবুল সিঙ্গেল । এই নিয়ে আবুলকে প্রায় ই টিটকারী শুনতে হয় । প্রতিদিন আবুল একা একা ভার্সিটিতে আসে , আর তার দুই বেস্টি আসে তাদের নিজ নিজ গার্ল ফ্রেন্ডদের কোমর জড়িয়ে ধরে ।
কে কার গার্ল ফ্রেন্ডকে নিয়ে কি কি করল তার রসালো আলাপ করে হাবুল কাবুল মিলে । আবুল এসব আলোচনায় যোগ দিতে পারে না । কারণ তার কোন গার্ল ফ্রেন্ড নাই । রস করার সুযোগ ও নাই । মনে মনে আবুল একটা সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলে ।
একটা গার্ল ফ্রেন্ড জুটানো চাই ই চাই । নইলে মুখ দেখাতে পারবে না বন্ধুকুলে ।
যেই ভাবা সেই কাজ । আবুল গেলো এলাকার এক বড় ভাইয়ের কাছে । মেয়ে পটানোতে নাকি ওই বড় ভাই উস্তাদ ।
এক রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে থেকেই নাকি উনি ডজনখানেক মেয়ে পটিয়ে বসে আছেন । গুরু মানুষ । মানতেই হবে । বড় ভাইয়ের কাছে ইতস্ত করতে করতে আবুল তার সমস্যার কথা বলেই ফেললো । মুচকি হেসে বড় ভাই বললেন
‘’ আরে মিয়া , এইডা কুনু ব্যাফার ? আমগো লগে কডা দিন সিটিং দ্যাও , দেখবা পাইলাইবা ‘’ ।
পরদিন বিকেলে আবুল গেলো বড় ভাইদের সাথে ‘সিটিং’ দিতে । বিকেল টাইম কারণ এই সময়ে মেয়েরা প্রাইভেট কলেজ শেষে বাড়ি ফিরে । মোড়ের চায়ের দোকানে বসে আবুল বড় ভাইয়ের নির্দেশ মতো মেয়েদের পটানোর প্রথম পর্ব মানে তাদের ডাকা শুরু করল । একটা করে মেয়ে যায় আর আবুল একটা করে উক্তি করে । এমন করে দুই দিন পার হয়ে গেলো ।
আবুল মেয়ের দেখা পায় না । একদিন বিকেলে আবুল বসে আছে । ইতিমধ্যে ডজন খানিক মেয়ে পার হয়েছে । হটাত আবুল দেখল এক বোরকা পড়া মেয়ে এগিয়ে আসছে । দ্রুত হাতে চুল ঠিক করে আবুল বড় ভাইয়ের শেখানো মন্ত্র আউড়ালো
‘’ বোরকা পড়া মেয়ে আমায় পাগল করেছে’’ ।
মন্ত্র আউড়ানোর সাথে সাথে আবুল তার একশন দেখল । মেয়েটি তার দিকে এগিয়ে আসছে । । মনে মনে আবুল গদগদ । মেয়েটি কাছে এসে আবুলের গালে তার হাতের স্পর্শ দিলো , মানে থাপ্পড় মারলো আরকি ।
বোরকা পড়া মেয়েটি আর কেউ না , তার ই ছোট বোন ।
রাস্তার মোড়ের আইডিয়া বাতিল । ঘরে আর কোন ইজ্জত ই রইল না আবুলের । এই ঘটনা তার ভার্সিটির বন্ধু মহলেও চাউর হয়েছে । টিটকারির পরিমাণ বাড়লো বৈকি ।
ক্যাফেটেরিয়ায় বসে বসে আবুল গরম কুত্তা চিবাচ্ছে আর ভাবছে , কি করা যায় । তখন ই আবুলের চোখে পড়লো ছেলেরা মেয়েদের গোলাপ ফুল দিচ্ছে । মেয়েরা হাসি মুখে তা নিচ্ছে । তারপর হাত ধরে বেড়িয়ে যাচ্ছে । দেরী না করে আবুল ও কয়েকটা গোলাপ ফুল কিনে দৌড়ে গেলো ।
এক মেয়েকে ফুল ধরিয়ে দিতে না দিতেই সেই ফুল আবুলের নাকে এসে পড়লো । তবে এতে তার নাক ফাটে নি । আজকে ছিল ভ্যালেন্টাইন ডে । একের পর এক মেয়েকে গোলাপ ফুল দিলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছিল না । উলটো আবারো হাসির পাত্র হল ।
গোঁ ধরে আছে আবুল । আবলামি বন্ধ করে ডিজিটাল পদ্ধতি অবলম্বন করার কথা ভাবল আবুল । ফেসবুকে মেয়েদের সাথে ইটিশ পিটিশ শুরু করলো আবুল । এক মেয়েকে পেয়েও গেলো । গদগদ অবস্থা ।
আই লাভু জানুপাখি , টিয়াপাখি , কইতর , ময়নাপাখি আর চুমু সাইন দিয়ে একাকার । রাতের পর রাত ম্যাসেজিং । আবুল ভাবল , যাক । গতি এবার হয়েই গেলো একটা । এখন থেকে সেও গার্ল ফ্রেন্ডের কোমর জড়িয়ে ধরে ভার্সিটিতে যাবে ।
একদিন বলেই ফেললো , ‘ জানুপাখি , কবে করবে দেখা ও আমার প্রেয়সী ? ‘
উত্তর এলো , ‘ কারেন্ট গেছে আবুল । কথা হবে পরে’’
হাসু আপা দিয়াছেন কথা
দৈনিক লোডশেডিং হবে দুই ঘণ্টা ।
দুই ঘণ্টা পার হইল । প্রেয়সী আসে না । চার ঘণ্টা ।
তাও এলো না । আবুল ভয় পায় । কিছু হইল না তো তার জানুপাখির ? এক দিন , দুই দিন এমন করে একটি সপ্তাহ খবর নাই প্রেয়সীর ।
সে যে কেন এলো না , কিছু ভালো লাগে না । !!!!
গুনগুন করতে করতে আবুল বসে আছে ।
টিভি তে একটা তামিল ছিল । টিভির দিকে নজর পড়তেই তার বুকে ডিপডিপ শুরু হয় । দৌড়ে কুদে আবুল ফেসবুক অন করে । প্রেয়সীর প্রোফাইল পিকচার টা একদম ই ওই তামিল ছবির নায়িকার মত ।
হে খোদা , এই তো ফেইক আইডি ।
!
তৃতীয় বারের মত আবুল খুন্তির ছ্যাকা খাইলো । কলিজাটা ফাটে ফাটে পর্যায়ে । বন্ধুমহলেও কিভাবে যেন রটে গেছে , আবুল গে হয়ে গেছে । ছেলেদের জানুপাখি , প্র্যেয়সি বানিয়ে বেড়ায় । দুঃখে কষ্টে আবুলের প্রাণ উশঠাগত ।
মাসাধিককাল পর ।
ভার্সিটির গেটের সামনে দাঁড়ালো একটি গাড়ি । গাড়ি থেকে একটা ছেলে নামলো । দুই পাশে দুইটি মেয়ে। মেয়ে দুটোর কোমর জড়িয়ে ধরে ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে চত্বরে বসা দুইটি ছেলের দিকে ।
হাবুল আর কাবুল । গল্পে মশগুল দুইজন আগুন্তককে দেখে অবাক । এই তো আমাদের আবুল । আবুল দি গে ম্যান । দুই দুইটি মেয়ে নিয়ে করছেটা কি ?
মেয়ে দুটিকে রাতে দেখা করার কথা বলে বিদায় দিলো আবুল ।
বন্ধুদের কাছে গিয়ে ভুরু নাচিয়ে বলল , কিহে, কি রসালো আলাপ করছিস তোরা ? আমাকেও বল । আমিও জয়েন করি ‘’
কাবুল বলল , দোস্ত , কেমনে কি ? মাইয়া জুটালি কেমনে ?
হাবুল বলল , এতদিন এতো ট্রিক খেললি , কোন মেয়ে ঘুইরাও চায় নাই । আইজ দুইডা ? কাহিনী কি ?
আবুল মুচকি এসে বলল , হে হে হে । দোস্তরা , মেয়ে পটানি যন্ত্র আছে আমার কাছে । এই যন্ত্রের টানে সব মেয়েই চলে আসে ।
যন্ত্রটা ব্যাগ থেকে বের করে দেখালো আবুল । কালো মতন একটা জিনিস । হাবুল চেচিয়ে বলল , দোস্ত , এইডা তো একটা ক্যামেরা লাগে ।
আবুল গর্বের সাথে বলল , হ্যাঁ , এটা ক্যামেরা । জেনতেন ক্যামেরা না ।
ডিএসএলআর ক্যামেরা । আরও অনেক যন্ত্র আছে এর সাথে ।
হাবুল হা করে আছে । কোন মতে বলল , এই যন্ত্র দিয়া ই কি মেয়ে পটালি ?
আবুল বলে , চোখের সামনেই তো দেখলি , নাকি ?
পুরো ভার্সিটিতে রটে গেলো
আবুলের একটি মেয়ে পটানো যন্ত্র আছে ।
ABUL HAS A DSLR CAMERA .
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।