আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যৌথ অভিযানে সাতক্ষীরায় জনজীবনে স্বস্তি

যৌথবাহিনীর অব্যাহত অভিযানে রক্তাক্ত জনপদ সাতক্ষীরায় এখন স্বস্তির বাতাস বইতে শুরু করেছে। উন্নতি হতে শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। গত ১২ দিনে জামায়াত-শিবির ও বিএনপির ৮০ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে পুলিশের ওপর হামলা, খুন, সহিংসতা, আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী ও সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগি্নসংযোগের একাধিক মামলা রয়েছে। এর মধ্যে নয়জনকে বিভিন্ন নাশকতা ও গাছ কাটা মামলায় ২ বছর ও ১ বছর করে কারাদণ্ড প্রদান করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এরই মধ্যে চলমান অভিযানে জেলায় অনেকটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে শুরু করেছে সাধারণ মানুষ। সর্বশেষ ১৮ দলের ডাকা অবরোধে তেমন কোনো প্রভাব পড়তে দেখা যায়নি। এক সপ্তাহে জামায়াত-শিবির ও বিএনপি নেতা-কর্মীদের সহিংসতা ঘটাতে দেখা যায়নি। এ ছাড়াও সাতক্ষীরায় মোতায়েন করা হয়েছে সেনাবাহিনী।

এদিকে, বুধবার রাতে যৌথবাহিনী অভিযান চালিয়ে পাটকেলঘাটার শাকদাহ গ্রামের জামায়াত কর্মী আবদুল মান্নান (৩৮) ও কালিগঞ্জ উপজেলার কামজেদপুর গ্রামের বিএনপি কর্মী রঞ্জু রশিদ গাজীকে (৫৫) গ্রেফতার করেছে। রাস্তার গাছ কেটে ও নাশকতা সৃষ্টির অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওমর ফারুক বিএনপি কর্মী রশিদ গাজীকে ১ বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেছেন। যুদ্ধাপরাধ মামলায় জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পর জামায়াত-শিবির ওই রাতেই ও পর দিন আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক তাণ্ডব চালায়। তারা ঘরবাড়ি লুটপাট ও অগি্নসংযোগ করে। ওই রাতেই কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা আজিজুর রহমান আজু ও যুবলীগ নেতা মেহেদী হাসান জজ মিয়া এবং স্কুলছাত্র রিয়াদ হোসেনকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। দুই দিন পর ১৫ ডিসেম্বর থেকে জামায়াত-শিবিরের সহিংসতার ঘটনায় অভিযানে নামে যৌথবাহিনী। তবে অভিযান চলাকালে গাছ কেটে প্রতিবন্ধতা, নাশকতা সৃষ্টি ও আসামি ধরতে গিয়ে যৌথবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে চার জামায়াত-শিবির কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। জামায়াত অধ্যুষিত আগরদাঁড়ী, বৈকারী, কাথন্ডা কলারোয়া ও দেবহাটা উপজেলার সখিপুর ও পারুলিয়ায় অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ১৫ ডিসেম্বর জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে যৌথবাহিনীর সংঘর্ষে জাহাঙ্গীর হোসেন ও সাহেব বাবু নামে দুই জামায়াত কর্মীর মৃত্যু হয়। আহত হন তিন কর্মী। গ্রেফতার করা হয় বিএনপি ও জামায়াতের নয় নেতা-কর্মীকে। ১৬ ডিসেম্বর দুপুর থেকে আবার শুরু হয় অভিযান। জেলা জামায়াতের আমির খালেক মাওলানাকে গ্রেফতার করতে আগরদাঁড়ী ও বৈকারী এলাকায় অভিযানকালে যৌথবাহিনীর ওপর হামলা চালালে তারা খালেক মাওলানার বাড়ি ড্রেজার মেশিন দিয়ে ভাঙচুর করে। পরে খালেক মাওলানা ও তার জামাই সদর উপজেলা জামায়াতের আমির আবদুল গফ্ফারের বাড়ি জ্বালিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। এ ঘটনার পর জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা আত্দগোপন করেন। কিন্তু ১৭ ডিসেম্বর কালিগঞ্জে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করেন বিষ্ণুপুর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসলেম উদ্দিনকে। তবে যৌথবাহিনীর চলমান অভিযানে এক সপ্তাহে জেলায় সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি। শহর ও গ্রামের জনজীবন স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। নাশকতা এড়াতে শহরের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ, বিজিবি ও র্যাব মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির পিপিএম জানান, সাতক্ষীরায় এখন স্বস্তির বাতাস বইতে শুরু করেছে। ১২ দিনে ৮০ জন জামায়াত-শিবির ও বিএনপির নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.