প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কেবল আওয়ামী লীগই কৃষক-শ্রমিক-খেটে খাওয়া মানুষের কল্যাণে কাজ করে। অন্য সরকারগুলো কেবল লুটপাটেই ব্যস্ত থাকে। পোশাক শ্রমিকদের উন্নত জীবনের জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দিয়ে এ খাতের ক্ষতি হতে পারে এমন কিছু না করার জন্য তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল বিকালে আশুলিয়ায় পোশাকশিল্পের নারী শ্রমিকদের জন্য দেশের প্রথম ডরমেটরির ভিত্তিপ্রস্তুর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, পোশাক শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সুপারিশ প্রদানের জন্য একটি ওয়েজ বোর্ড গঠনের প্রস্তুতির কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। এ বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী তাদের পর্যাপ্ত বেতন প্রদানের জন্য মালিক পক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন। সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপি, জামায়াত ও হেফাজতের অপপ্রচারের ব্যাপারে পোশাক শ্রমিকদের সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ধর্মের নামে তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। পোশাক শ্রমিকদের প্রতি আগামী সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বিএনপির নেতৃত্বাধীন অশুভ জোট ক্ষমতায় এলে নারী শ্রমিকরা চাকরি হারাতে পারেন।
মহিলা ও শিশুবিষয়ক অধিদফতর কর্তৃক নির্মিতব্য হোস্টেল ভবনে স্বল্প খরচে নারী পোশাক শ্রমিকরা থাকা ও খাওয়ার সুযোগ-সুবিধা পাবেন। এ ছাড়া বিনামূল্যে আসবাবপত্র, স্বাস্থ্যসেবা, বিনোদন ও খেলাধুলার সুযোগ-সুবিধা এবং তাদের শিশুদের জন্য ডে-কেয়ার সার্ভিসও থাকবে।
মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকির সভাপতিত্বে এ সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ফজিলাতুন্নেছা ইন্দিরা এবং মন্ত্রণালয়ের সচিব তারিকুল ইসলামও বক্তৃতা করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নারী পোশাক শ্রমিকরা যাতে সুন্দর ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকতে পারে সে লক্ষ্যেই সরকার এই ডরমেটরি নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। গার্মেন্ট মালিকরা পোশাক শ্রমিকদের আবাসন সুবিধা প্রদানে প্রস্তুত থাকলে সরকার মালিক পক্ষকে আর্থিক সহায়তা দেবে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার পোশাক খাতের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে এবং এ শিল্প সম্প্রসারণে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ ও পোশাক শ্রমিকদের উন্নত জীবনযাপন নিশ্চিত করতে বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করছে। ২০১০ সালে পোশাক শ্রমিকদের বেতন শতকরা ৮২ ভাগ বৃদ্ধি করা হয়েছে। তাদের প্রারম্ভিক বেতন ১৬০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে তিন হাজার টাকা করা হয়।
পোশাক কারখানায় সাম্প্রতিক অগি্নকাণ্ড এবং ভবন ধসের ঘটনায় সরকারি পদক্ষেপের প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমরা সম্ভাব্য দ্রুত সময়ের মধ্যে সর্বাত্দক প্রচেষ্টা চালিয়েছি। রানা প্লাজায় ভবন ধসের পর উদ্ধার তৎপরতা এবং পুনর্বাসন কাজ আমাদের এ প্রচেষ্টার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।'
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আহত এবং নিহত শ্রমিকদের পরিবারবর্গের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে ১৬ কোটি টাকার আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সরকার আহত শ্রমিকদের চিকিৎসা ব্যয় বাবদ প্রায় এক কোটি ৫০ লাখ টাকা খরচ করেছে। শেখ হাসিনা বলেন, কেবল আওয়ামী লীগ সরকারই প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে শ্রমিকদের জন্য এ বিপুল পরিমাণ আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা করেছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতা গ্রহণ করেছে তখনই নারী জাতির উন্নয়নে কাজ করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ক্ষতিগ্রস্ত নারীদের পুনর্বাসনের জন্য ১৯৭২ সালে একটি বোর্ড গঠন করেন। আমরা বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে নারী জাতির আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সরকারের পাশাপাশি ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর প্রতি পোশাক শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।