এক প্রজাতির নাকি পতঙ্গ আছে যাহাদের মধ্যে সঙ্গমের পরে কখনও কখনও স্ত্রী প্রজাতিটি সঙ্গম ক্লান্ত পুরুষ প্রজাতিটিকে খাইয়া ফেলে! উহাদের মধ্যে এরকমই রেওয়াজ বিদ্যমান। আবার বিড়াল, বাঘ, সিংহ ইত্যাদি বিড়াল গোত্রের মধ্যে প্রায়শই পুরুষ প্রজাতিটি ঔরসজাত বাচ্চাগুলোকে খাইয়া ফেলে। বলিতে গেলে আরও অনেক রকম বলা সম্ভব, জীব জগতে কত বিচিত্র ধরনের আচারই না আছে!
আমি অবশ্য সমগ্র প্রাণীকুলের বৈচিত্র্য বিষয়ক কোন আলোচনা ফাঁদিয়া বসি নাই, আমি বলিতেছি সৃষ্টির স্বঘোষিত সেরা জীব- আশরাফুল মাখলুকাত ওরফে মানুষ তথা হোমো স্যাপিয়েন্স প্রানীকুলের বিষয়ে। আমরা মানুষ যেহেতু, আমরা পুরোটাই বুনো নই, সংস্কৃতি নামক একটা বস্তু আমরা ধারন করি, নির্মান করি, লালন করি। কয়েক শতক আগেও কিছু জায়গায় মানুষ মারিয়া রান্ধিয়া খাওয়া উৎসব ছিল,এখন সেটা ভাবাও যায়না।
স্বামী মরিলে এখন হয়ত প্রতিকী অর্থে বউয়ের কপাল পুড়ে, কিছুদিন আগে এই জনপদেই স্বামী মরিলে বউদিগকে আক্ষরিক অর্থে পুড়িয়ে মারিয়া ফেলা হইত।
অত্যন্ত সৌভাগ্যের কথা এখন এই রূপ আচার নাই, কারন আমরা দাবী করিতেছি যে আমরা সভ্য হইয়াছি । আমরা যন্ত্রকে মন্ত্র পড়িয়া বন্দী করিয়া দুনিয়া হাতের মুঠোয় আনিয়া ফেলিয়াছি, চাঁদে- মঙ্গলে দৌড় ঝাপ করিতেছি, বঙ্গ ললনা এই সেদিন এভারেস্ট ছুঁয়ে আসল, আরও কত ললনা পথে। কিন্তু আমরা কতটুকু মানুষ হইতে পারিয়াছি, কতখানি মানবিক হইতে পারিয়াছি ইহা ভাবিবার বিষয় বটে। কারন এখনও ধর্ষণের মত জঘন্যতম অপরাধের বিচার দাবী করিতে আন্দোলন গড়িয়া তুলিতে হয়!? আমরা যদি আমাদের সমাজকে সভ্য বলিয়া দাবি করিতে চায় তাহলে ইহার ব্যাখ্যা কি?
যাইহোক, আলোচিত কিছু ধর্ষণের বিচার হইয়া থাকে বটে, আর যা গোপন- তাহা তো অনুচ্চারিতই থাকিয়া গেল।
কিন্তু পুরুষকুলের একজন সদস্য হইয়া লজ্জায় মুখ লুকাইবার জায়গা খুঁজিয়া পাইতেসিনা, যখন দেখিতেছি আরেক দল পুরুষ দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকাশ্য ধর্ষন চালাইতেছে ধর্ষিতার পোষাকের দৈর্ঘ্য মাপিতে বসিয়া গিয়া। কত বড় নির্বোধ নরাধম হইলে ইহা হইতে পারে তা চিন্তা করিয়া মাথা ঘুরিতেছে! ইহাদের বিচারের কোন আইন আদালত নাই। যদি ধর্ষিতার পোষাকের দৈর্ঘ্য সন্তোষজনক না হয়, তাহলে তো মিটিয়াই গেল,বলা হইবে পাপের শাস্তি পাইয়াছে। খাবার খোলা রাখিয়া ছিল, মাছি বসিয়া নষ্ট করিয়াছে! এইধরনের যুক্তির মাধ্যমে নিজেদের পূরীষ প্রেমী মাছির চরিত্র উন্মোচিত করে, যাহারা নারী শরীর কে মানব মন্দিরের মতো নয়, খাবারের সাথে তুলনা করিতে অভ্যস্ত। তখন মনে হয় ইহাদের ভ্রুন কি আদৌ কোন মানবীর শরীরে প্রোথিত হয়েছিল? আর যদি ধর্ষিতার পোষাক শালীন হয়, তাহলে অন্য যারা খাটো পোষাক পড়ে, দোষ ঐ সকল নারীদিগের হইবে।
ধর্ষিতার দেশের সকল নারী পরদানশীলা হইলে দোষ তবে পার্শ্ববর্তী দেশের কোন খুল্লাম খুল্লা ডাইনী নারী যাহাদের প্ররোচনায় পুরুষকুল নিয়ন্ত্রণ হারাইয়া উত্তেজনার বশবর্তী হইয়া ধর্ষনে ঝাপাইয়া পড়ে!!! ‘ধর্ষনের বিচার চাই, কিন্তু এটা মানতে হবে যে দোষ নারীর, কারন ধর্ষিতা নিজে না হইলেও এই গ্রহের কোন বেগানা আওরাত ঐ ধর্ষককে উত্তেজিত করে ধর্ষনে বাধ্য করিয়াছে! ’!!! আমিও পুরুষ, এই লজ্জা কই রাখি?
সেই জুতা আবিস্কারের গল্পটা দিয়ে শেষ করি- ধুলার রাজ্যে শরীর বাঁচাইবার জন্য একদল গর্ধভ সব রাস্তাঘাট চামড়া দিয়া মুড়িয়া ফেলিবার প্রস্তাব করিয়াছিল! আসলে তো দুনিয়া নয়, পায়ের তলাটা চামড়া মুড়িলেই হয় । তেমনি সমগ্র নারীকুল পর্দায় মুড়িতে চাওয়ার অর্বাচীন আবদার না করিয়া নিজের সামান্য দুচোখের নজর আর পুরুষদন্ডটি সামলিয়ে চলাটাই কি সমীচিন নহে?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।