আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

উদ্ভট এক জগতের স্বপ্ন-২

হাজারটা স্বপ্ন একটি বাস্তবতাকে বদলাতে পারে না

জীবনের প্রথম ভোট দিতে যাচ্ছি। বছরের পর বছর অপেক্ষার পর আজ সুযোগ পেলাম। তাই বুঝি আর তর সইছে না। সকাল সকাল বেড়িয়ে পরলাম। শীতের হীম শৈত্যপ্রবাহে হাড় কাপিয়ে দেয়, গায়ের চাদরটা ভালোমত জড়িয়ে নেই।


শুনেছি ভোটকেন্দ্রে নাকি লম্বা লাইন হয়। জীবনে কখনো বিদ্যুত বা পানির বিলের লাইনে না দাড়ালেও কলেজ ভার্সিটিতে ভর্তির সময় বুঝেছি লাইন কি জিনিস! তাই আগে-বাগেই ভালো মত খেয়ে টেয়ে বিশ্রাম নিয়ে নিয়েছি, কতক্ষণ দাড়ায়ে থাকতে হয় কে জানে।
কিন্তু ভোট কেন্দ্রে গিয়ে দেখি লাইন-বাইন কিছুই নাই। খালি পুলিশ আর র‌্যাব। ব্যাপারটা বুঝলাম না, ভোট কি এখানেই হবে? আমি কি ভুল জেনে এসেছি? হোয়্যার ইজ এব্রিবাডি??

যাই হোক, আইন-শৃংখলা বাহিনীকে ফাক-ইউ জানিয়ে আমি ভোটকেন্দ্র স্কুলের মাঠে ডুকে পরলাম।

ভবনের একদিকে একটা দরজা খোলা। ওইটা দিয়ে চুপি দিতেই দেখি দুইটা লোক আর এক মহিলা চেয়ার-টেবিল নিয়ে বসে খোশগল্প করছে। আমার দিকে চোখ পরতেই বলল, - কি ভাই, ভোট দিতে আসছেন?

আমি হ্যা জানালে দেখি মুহুর্তে তাদের ভাবভঙ্গি পুরাই বদলে গেল। একেকজন দাড়িতে আমাকে "আসেন আসেন" বলে ভিতরে নিয়ে গেল, তারপর একটা চ্যারে বসাল। তাদের বিনয়ী আচরণে আমি যারপরনাই অভিভূত! অপাশ থেকে মহিলা জানতে চাইল আইডি কার্ড এনেছি কিনা।

ভোট দিতে গিয়েছি আর আইডি নিব না? এত বোধহীন আমি নই। উনি আমার আইডি দেখে সামনের মোটা খাতায় নামের লিস্টের সাথে মেলাতে থাকলেন।

পাশের লোকটা বলল, - এই ঠান্ডায় কষ্ট করে এসেছেন, আসুন এক কাপ চা খেয়ে যান।

এমন অদ্ভূত প্রস্তাব শুনে আমি তো বিনয়ে বিগলিত হয়ে বললাম, - আরে না না, দরকার নেই। ভোট দিতে এসেছি, দিয়ে চলে যাব।



কিন্তু তারা জোর করে ধরল খেতেই হবে। এক কথা দু কথায় জেনে নিল এটা আমার প্রথম ভোট দেয়া। শুনে তো পুরাই খুশি হয়ে গেল। বলল, - আপনারাই তো সব, দেশের সম্পদ। আপনারা ভোট না দিলে কারা দেবে? এই সেই, বহুত কিছু।

আমি তখন আবেগে আপ্লুত হয়ে গেলাম। নিজেকে বড় গুরুত্বপূর্ণ মনে হতে থাকল। আর তারপর খেয়াল করলাম, যেই স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সগুলো টিভিতে দেখেছিলাম, সেগুলো ঠিক নজরে পরছে না। তাই জিজ্ঞেস করলাম ভোট কোথায় দিব। তিনি একটা বিশেষ পর্দা দিয়ে ঢাকা জায়গা দেখিয়ে বললেন, - ওইখানে দিবেন।



পর্দা দিয়ে ঘেরা দেখে খটকা লাগল, এমন তো দেখেছি বলে পরে না। শুনেছি আগে নাকি এভাবেই ভোট হত। এই বেটারা মনে হয় আদিম যুগেই রয়ে গেছে।

এর মধ্যে আমার সিরিয়াল নম্বর মেলানো শেষ। একটা ব্যালট প্যাপার ধরিয়ে দিল হাতে, আর একটা সিল।

আমি বললাম, - এখানেই সিল মারব?

- আরে না না, আপনার ভোট আপনে দিবেন, যাকে খুশি তাকে দিবেন। ঐ পর্দার আড়ালে চলে যান।

আমি তাই কাগিজ আর সিল নিয়ে পর্দার দিকে হেটে গেলাম দুরুদুরু বুকে। কিন্তু পর্দার আড়ালে যেতেই চোখ ছানাভরা!! কোথায় স্বচ্ছ বাক্স, কোথায় কি! আমার সামনে একটা বাথরুমের হাই কমোড!! এটা কিভাবে সম্ভব? কোথায় মনে হয় একটা ভুল হয়েছে।

আমি তাই আবার তাদের কাছে ফিরে যাই ব্যাপারটা বুঝার জন্য।

উনি বলে, - হ্যা সমস্যা কি? ঐখানেই দিবেন। বুঝেন নাই?

- না মানে...কিভাবে? আমি আমতা আমতা করি।

- আরে অখানে ফুটা আছেতো, আছে না? অইটাতে ভাজ করে ছেড়ে দেন।

কোন উপাইয় না দেখে আমি আবার সেই কমোডের কাছেই ফিরে আসি। জায়গাটা ভালো লাগছে না।

বাথরুম সারার মত তারাতারি কাজ সারার চেষ্টা করি। সিল কোথায় মেরেছি বলব না। কারণ আমার ভোট আমি দিব যাকে খুশি তাকে দিব, আপনার কি???

তারপর সেই কাগজ ভাজ করে কমোডের ফুটার মধ্যে ফেলে দিলাম। নিচে জমে থাকা পানিতে যেন একটু আলোড়ন হয়। এক দলা গু ভেসে উঠে।

সেই হাগু দেখে আমার গা গুলিয়ে উঠে.......





-------------------------------------------------------------------
গা ঘিনঘিন করা অনুভূতি নিয়ে ঘুম ভাংলে টের পেলাম খুব বাথরুম চেপেছে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।