অহন থিক্কা সব শয়তানরে দৌরের উপর রাখুম।
সব প্রশংসা মুবারক মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ শরীফ ও সালাম মুবারক।
দেশে উচ্চশিক্ষার প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যাও প্রচুর বাড়ছে। সংখ্যার দিক থেকে ক্রমাগত উন্নতি হলেও এসব প্রতিষ্ঠানের মান নির্ণয়ের জন্য একটি আধুনিক ও কার্যকর ‘রেটিং’ পদ্ধতি আজও গড়ে ওঠেনি।
এতে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মান সম্পর্কেও যেমন ধারণা পাওয়া যাচ্ছে না, তেমনি শুধু সার্টিফিকেট বেচাকেনার মধ্যে আটকে আছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম।
দেশের ৭৯টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশের শিক্ষার মান নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ রয়েছে। অধিক সংখ্যক প্রতিষ্ঠানই শিক্ষার নামে ব্যবসাকে অগ্রাধিকার দিয়ে গড়ে উঠেছে। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মোটা অংকের ডোনেশন, ভর্তি ফি, টিউশন ফি এবং বিভিন্ন খাত দেখিয়ে অর্থ আদায়ই এগুলোর মুখ্য উদ্দেশ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে লাভজনক কর্পোরেট হাউসে পরিণত করা হয়েছে।
ফলে রাজধানীসহ দেশের জেলা শহরগুলোতে ব্যাঙের ছাতার মতো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠছে। কোন রকমে একটি ভবনের ফ্লোর ভাড়া নিয়ে বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুকরণে বাহারী নাম দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় চালু করে দিয়েছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশের নিজস¦ ক্যাম্পাস, ল্যাবরেটরি সুবিধা, লাইব্রেরিসহ অন্যান্য আবশ্যিক সুযোগ-সুবিধা, এমনকি নিজস¦ শিক্ষকও থাকে না। খ-কালীন শিক্ষক দিয়ে কোন রকমে ক্লাস চালিয়ে নেয়া হয়। এর ফলে ছাত্র-ছাত্রীরা প্রকৃত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
তাদের শিক্ষাবর্ষও সঠিক সময়ে শেষ হয় না। বিভিন্ন খাত দেখিয়ে অর্থ আদায়ের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ব্যবসা চালিয়ে যায়। এর ফলে তারা পরিপূর্ণ শিক্ষা লাভ থেকে বঞ্চিত হয় এবং তাদের জীবনের মূল্যবান সময়ও অপচয় হয়। কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করতে গিয়ে তারা মেধা ও যোগ্যতার প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হয়। তাদের সার্টিফিকেটও কোন কাজে লাগে না।
কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে পড়ালেখা বাদেই অর্থের বিনিময়ে সার্টিফিকেট বিক্রির অভিযোগ রয়েছে। পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সহকারী লাইব্রেরিয়ান নিয়োগ এবং এমপিওভুক্তির আবেদনের সঙ্গে প্রার্থীরা দুইটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি সায়েন্সের সনদ জামা দেন। এসব সনদের সত্যতা যাচাইয়ে কর্তৃপক্ষ তদন্ত করলে সেগুলো ভুয়া প্রমাণিত হয়। ইউজিসি’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ বলেছেন, ‘কিছু প্রতিষ্ঠান শিক্ষাবাণিজ্য করছে। একাধিক প্রতিষ্ঠানে মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব রয়েছে।
’ বুঝতে অসুবিধা হয় না, এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে মালিকানা দ্বন্দ্বের নেপথ্যে, শিক্ষার নামে বাণিজ্যের বিষয়টি বেশি কাজ করছে। বিদ্যমান অধিকাংশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে গড়ে উঠলেও, নতুন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার অনুমতি দেয়া হয়েছে। পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, মহাজোট সরকারের আমলে সবচেয়ে বেশি (২৫টি) বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমতি দেয়া হয়। এগুলোর অধিকাংশই সরকার সংশ্লিষ্ট প্রভাবশালী ব্যক্তিদের দেয়া হয়েছে এবং এখনো নিজস¦ ক্যাম্পাসে শিক্ষাকার্যক্রম চালু করতে সক্ষম হয়নি। শিক্ষাবিদরা মনে করছেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন দেয়ার ক্ষেত্রে উপযোগিতা এবং প্রকৃত শিক্ষাদানের বিষয়টি নিশ্চিত করা অপরিহার্য।
এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম পরিলক্ষিত হচ্ছে। অধিকাংশেরই অনুমোদন দেয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে রাজনৈতিক সুবিধা দেয়ার জন্য। ফলে তারা শিক্ষার বিষয়টি উপেক্ষা করে বাণিজ্যকে প্রাধান্য দিয়ে কোন রকমে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে বসছে। এতে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা শুধু সার্টিফিকেট লাভ করছে, প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারছে না। কর্মজীবনে যোগ্যতা প্রমাণ করতে না পেরে হতাশায় নিমজ্জিত হচ্ছে।
এমনকি জাতির বোঝায় পরিণত হচ্ছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) সূত্র জানিয়েছে, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় জগতে বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আলোচিত ও বিতর্কিত বিষয় হলো মালিকানা দ্বন্দ্ব। সনদ বিক্রি বা নামমাত্র শিক্ষাদানের মাধ্যমে রাতারাতি কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যাচ্ছে কিছু ব্যক্তি। এ কারণে ট্রাস্টি বোর্ড বা বিশ্ববিদ্যালয়েই কর্মরতরা যখন সনদ ব্যবসাটা বুঝে ফেলে, লোভাতুর হয়ে বাকিরা তখনই নেমে পড়ে বাণিজ্যে। এরপর একাধিক ট্রাস্টি বোর্ড গঠিত হয়।
শুরু হয় একে অপরকে হটানোর প্রতিযোগিতা আর পরস্পরের বিরুদ্ধে বিষোদগার। একপর্যায়ে বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। আদালত থেকে অনেকে স্থিতাদেশ নিয়ে আসে। এরপর তারই জোরে চলে বাণিজ্য। মাঝখানে প্রতারিত হয় শিক্ষার্থী-অভিভাবক; বৃহৎ অর্থে দেশ ও জাতি।
এদিকে আইন লঙ্ঘনের দায়ে চিহ্নিত বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে অনেকগুলোই টাকার কুমির বনে গেছে। ইউজিসি ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বিভিন্ন রিপোর্টে বেরিয়ে এসেছে তাদের দুর্নীতির খতিয়ান। এগুলোর মধ্যে বিশেষ করে লাগামহীন সনদ বাণিজ্য করে টাকা কামানোর বিপরীতে উচ্চশিক্ষায় ধস নামানোর দায়ে দারুল ইহসান, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি, অতীশ দীপঙ্কর, পিপলস, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল, রয়েল ও নর্দান ইউনিভার্সিটি অন্যতম। বিভিন্ন সময়ে সরকার এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়ায় তারা মামলা পর্যন্ত করেছে। সরকার এসবের মধ্যে নর্দান, ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্স (ইউআইটিএস) ও লিডিং ইউনিভার্সিটির বিরুদ্ধে মামলা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আর অন্যগুলোর বিরুদ্ধে সরকার বিকল্প ভাবছে। এশিয়ান ইউনিভার্সিটির বিরুদ্ধে অন্তত ১২শ কোটি টাকার সনদ বাণিজ্যের প্রমাণ রয়েছে মন্ত্রণালয়ের হাতে। বিষয়টি দুদকও তদন্ত করছে।
বলাবাহুল্য, সরকারের কিছু কর্তাব্যক্তির প্রচ্ছন্ন কমিশন বাণিজ্যের কারণে কার্যত শিক্ষা এখন পণ্যে পরিণত হয়েছে। অথচ শিক্ষা পণ্য নয়।
মৌলিক অধিকার। সংবিধানে তা বর্ণিত হলেও সরকারের সেদিকে নজর নেই। শিক্ষা আজ সাধারণের না হয়ে শুধুমাত্র উচ্চবিত্তের ভোগ বিলাসের সামগ্রী হয়েছে। এতে করে মূলত সংবিধান লঙ্ঘন হচ্ছে। নাগরিকদের মধ্যে বৈষম্য তৈরি করা হচ্ছে।
সরকারের উচিত সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্য দূরীভূত করা। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা পর্যাপ্ত করা। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে সব ব্যবসা বন্ধ করা। পাশাপাশি জনগণেরও উচিত সচেতন হওয়া। শিক্ষা বাণিজ্য সিন্ডিকেট সম্পর্কে সক্রিয় হওয়া।
এদেরকে প্রতিবাদ করা, প্রতিহত করা।
মূলত সব সমস্যা সমাধানে চাই সদিচ্ছা ও সক্রিয়তা তথা সততা। কিন্তু এর জন্য প্রয়োজন নেক ছোহবত, নেক সংস্পর্শ তথা রূহানী ফয়েজ-তাওয়াজ্জুহ। যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারকই কেবলমাত্র তা পাওয়া সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন।
(আমীন)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।