বিতর্কিত এবং অদক্ষদের বাদ দিয়েই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করছেন। প্রস্তুত বঙ্গভবন। বিকাল সাড়ে ৩টায় নতুন মন্ত্রিসভার শপথবাক্য পাঠ করাবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এর আগে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। তবে শপথে মহাজোটের শরিক দল জাতীয় পার্টি অংশ নেবে কি না তা এখনো স্পষ্ট নয়। এবারের মন্ত্রিসভায় প্রবীণ-নবীনের সমন্বয়ে সাংগঠনিকভাবে দক্ষ ও জনপ্রিয় নেতারা প্রাধান্য পাচ্ছেন বলে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক পর্যায় থেকে আভাস পাওয়া গেছে। শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য প্রায় এক হাজার অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানো হবে বলে জানা গেছে। সূত্রে জানা গেছে, গত পাঁচ বছরে দুই দফায় সম্প্রসারিত মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পাওয়া অদক্ষ ও বিতর্কিত নেতাদের মধ্যে যারা মাঠ পর্যায়ের উন্নয়নকাজ দেখাতে পারেননি, তাদের নতুন মন্ত্রিসভায় আসার কোনো সম্ভাবনা নেই। দলের নীতিনির্ধারকরা মনে করেন, তাদের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে আওয়ামী লীগকেও অনেক মাশুল দিতে হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে জবাবদিহিতার মধ্যে পড়তে হয়েছে দলকে। পুরনো মন্ত্রিসভার আরেক অংশ যারা দক্ষ হলেও নানা কারণে বিতর্কিত হয়েছেন; কেউ অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে, আবার কেউ অতিকথনে- নতুন মন্ত্রিসভায় তাদের না রাখার পক্ষে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড। সূত্রমতে, বর্তমান পরিস্থিতিকে যথাযথ পদক্ষেপের মাধ্যমে যারা সামাল দিতে সক্ষম, সাংগঠনিকভাবে দক্ষ এমন নেতাদের মন্ত্রিসভায় নেওয়ার জন্য বিবেচনা করা হচ্ছে। একইভাবে যারা সরকারের উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত করতে সক্ষম তাদেরও প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীসহ দলের নীতিনির্ধারকরা চুলচেরা বিশ্লেষণ করেন। জানা গেছে, নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের ব্যাপারে বিশেষ করে রাষ্ট্রপতির পরামর্শ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার তিনি রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎকালে নতুন মন্ত্রিসভার জন্য ৪৫ জনের একটি তালিকাও রাষ্ট্রপতিকে দিয়েছেন বলে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সাত দিনের মাথায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে ২৩১ আসনে জয়ী আওয়ামী লীগের এমপিরা বৃহস্পতিবার শপথ নিয়েছেন। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের নেতারা বলছেন, ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারির মন্ত্রিসভার মতো এবারের মন্ত্রিসভা গঠনের বেলায়ও চমক থাকবে। আগের মন্ত্রিসভায় অভিজ্ঞ রাজনীতিকরা বাদ পড়লেও এ দফায় তা হবে না। কয়েকজন অভিজ্ঞের পাশাপাশি উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নতুন এমপিও নতুন মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পাবেন। মহাজোট সরকারের প্রথম মন্ত্রিসভার সদস্যসংখ্যা ৩২ হলেও পরে তা বেড়ে হয়েছিল ৫১। এবার মন্ত্রিসভার সদস্যসংখ্যা এর বেশি না-ও হতে পারে। এ সংখ্যা ৪৫ থেকে ৫০ জনের মধ্যে সীমিত থাকতে পারে। ২৯ সদস্যের বর্তমান সর্বদলীয় সরকারের কেউ কেউ বাদ পড়তে পারেন। তবে বিতর্কিত কাউকেই নতুন মন্ত্রিসভায় রাখা হবে না_ এটা অনেকটাই নিশ্চিত বলে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া তালিকা অনুযায়ী মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের শপথের ব্যবস্থা নেবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। শপথ অনুষ্ঠানে যারা মন্ত্রী হবেন তাদের আমন্ত্রণ জানানো হবে। এ ছাড়া অতিথিদেরও আমন্ত্রণ জানানো হবে। বর্তমান মন্ত্রিসভার বিষয়ে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত আগের মন্ত্রিসভা আছে। যখন নতুন ক্যাবিনেট শপথ নেবে, ওই ক্যাবিনেটই হবে সরকার। নতুন ক্যাবিনেট শপথ নিলে তখন থেকে তা কার্যকর হয়ে যাবে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।